বিবাদ মীমাংসা : গুরুত্ব, ফযীলত ও আদব

আব্দুর রহীম 487 বার পঠিত

পারস্পারিক সহমর্মিতা ও ভালোবাসার অমূল্য বন্ধন দিয়ে গড়া মনুষ্য সমাজ। সামাজিক জীব মানুষ পরস্পর পরস্পরের সহযোগী ও একজন আরেকজনের উপর নির্ভরশীল। শান্তিময় সমাজে মানুষ সমাজবদ্ধভাবে বসবাস করুক শয়তান তা চায় না। সেজন্য সে সামাজিক মানুষের মাঝে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে। দু’টি পরিবারের মধ্যে সৃষ্টি হয় বিবাদ। এক গোত্র আরেক গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এক রাষ্ট্র আরেক রাষ্ট্রে ক্ষতি সাধনে তৎপর হয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সৃষ্টি হয় চরম বিরোধ। এমনকি জন্মদাতা পিতা-মাতার সাথেও বিরোধ দেখা দেয়। কিন্তু আল্লাহ চান পারস্পারিক সুসম্পর্ক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থান। সেজন্য তিনি বিবাদমান ব্যক্তির মাঝে মীমাংসা করার নির্দেশনা দিয়েছেন। নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করার প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ।

গুরুত্ব :

ইসলাম চায় সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থান। প্রতিটি মানুষ সুসম্পর্ক রক্ষার মাধ্যমে সমাজে সুখে-শান্তিতে বসবাস করবে। থাকবে না কোন ভেদাভেদ। থাকবে না পদের অহংকার ও সম্পদের হুঙ্কার। বরং বিরোধ দেখা দিলেও তৃতীয় পক্ষের জন্য আবশ্যক কর্তব্য হ’ল মীমাংসা করে দেওয়া।

১. মীমাংসা করা আল্লাহর নির্দেশ : বিবাদমান দুই ব্যক্তির মাঝে মীমাংসা করা কেবল ভাল কাজই নয় বরং এটি আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ ‘মুমিনগণ পরস্পরে ভাই ভাই। অতএব তোমাদের দু’ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করে দাও। আর আল্লাহকে ভয় কর। তাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হবে’ (হুজুরাত ৪৯/১০)। আর রাসূল (ছাঃ) বলেন, تَرَى الْمُؤْمِنِينَ فِى تَرَاحُمِهِمْ وَتَوَادِّهِمْ وَتَعَاطُفِهِمْ كَمَثَلِ الْجَسَدِ إِذَا اشْتَكَى عُضْوًا تَدَاعَى لَهُ سَائِرُ جَسَدِهِ بِالسَّهَرِ وَالْحُمَّى ‘পারস্পরিক দয়া, ভালবাসা ও সহানুভূতি প্রদর্শনে তুমি মুমিনদের একটি দেহের মত দেখবে। যখন শরীরের একটি অঙ্গ রোগে আক্রান্ত হয়, তখন শরীরের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রাত জাগে এবং জ্বরে অংশ নেয়’।[1] অতএব দুইজন মুমিন বিবাদমান অবস্থায় এক রাতও কাটাবে এটা আল্লাহ ও তার রাসূল (ছাঃ)-এর প্রত্যাশা নয়।

২. মীমাংসার ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ)-এর নির্দেশনা: পরস্পরের মধ্যে মীমাংসা করা কেবল আল্লাহরই নির্দেশ নয়। বরং এটি রাসূল (ছাঃ)-এর সুস্পষ্ট নির্দেশনা। এই মীমাংসা করাকে আল্লাহর পথে ব্যবসা করার সাথে তুলনা করা হয়েছে। তাছাড়া এতে আল্লাহ এবং তার রাসূল (ছাঃ) খুশী হন। যেমন হাদীছে এসেছে,

عَنْ أنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لأَبِي أَيُّوبَ: أَلَا أَدُلُّكَ عَلَى تِجَارَةٍ؟ قَالَ: بَلَى، قَالَ: صِلْ بَيْنَ النَّاسِ إِذَا تَفَاسَدُوا، وَقَرِّبْ بَيْنَهُمْ إِذَا تَبَاعَدُوا-

আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) একদা আবু আইয়ূব (রাঃ)-কে বললেন, আমি কী তোমাকে একটি ব্যবসার সন্ধান দিব না? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, লোকদের মাঝে মীমাংসা করে দাও যখন তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে দাও, যখন তাদের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি হয়’।[2] অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূল (ছাঃ) তাকে বলেন, أَلَا أَدُلُّكَ عَلَى عَمِلٍ يَرْضَاهُ اللهُ وَرَسُولُهُ؟ قَالَ: بَلَى. قَالَ: تُصْلِحُ بَيْنَ النَّاسِ إِذَا تَفَاسَدُوا، وَتُقَارِبُ بَيْنَهُمْ إِذَا تَبَاعَدُوا ‘আমি কী তোমাকে এমন একটি আমলের সন্ধান দিব না যার প্রতি আল্লাহ এবং তার রাসূল সন্তুষ্ট হন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি লোকদের মাঝে মীমাংসা করে দাও যখন তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং সুসম্পর্ক গড়ে তোল যখন তারা পরস্পর থেকে দূরে চলে যায়’।[3]

৩. মীমাংসার জন্য গোপন বৈঠক : ইসলাম বিবাদমান দুই ব্যক্তির মাঝে মীমাংসার স্বার্থে গোপন বৈঠককে উত্তম বলে ঘোষণা করেছে। অন্য সকল বৈঠককে নিরর্থক বলা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, لَا خَيْرَ فِي كَثِيرٍ مِنْ نَجْوَاهُمْ إِلَّا مَنْ أَمَرَ بِصَدَقَةٍ أَوْ مَعْرُوفٍ أَوْ إِصْلَاحٍ بَيْنَ النَّاسِ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ ابْتِغَاءَ مَرْضَاةِ اللَّهِ فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا ‘তাদের অধিকাংশ শলা-পরামর্শে কোন মঙ্গল নেই। কিন্তু যে পরামর্শে তারা মানুষকে ছাদাক্বা করা বা সৎকর্ম করা কিংবা লোকদের মধ্যে পরস্পরে সন্ধি করার উৎসাহ দেয় সেটা ব্যতীত। যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সেটা করে, সত্বর আমরা তাকে মহা পুরস্কার দান করব’ (নিসা ৪/১১৪)। এই আয়াতের তাফসীরে ইমাম তাবারী (রহঃ) বলেন, বিবাদমান বা দ্বন্দ্বে লিপ্ত দুই ব্যক্তির মাঝে মীমাংসা করে দেওয়া যাদের মধ্যে সংশোধন করে দেওয়াকে আল্লাহ বৈধ করেছেন। যাতে করে তারা বন্ধুত্ব ও ঐক্যের দিকে ফিরে যেতে পারে’ (তাফসীরে তাবারী ৯/২০২)

৪. মীমাংসার জন্য মিথ্যার আশ্রয়ের অনুমতি : মিথ্যা বলা বা মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া কবীরা গুনাহ। তদুপরি বিবাদমান দুই ব্যক্তির মাঝে মীমাংসার স্বার্থে তাদের পরস্পরের প্রতি মহববত বা ভালবাসা সৃষ্টির লক্ষ্যে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়াকে জায়েয বলা হয়েছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, لَيْسَ الْكَذَّابُ الَّذِى يُصْلِحُ بَيْنَ النَّاسِ فَيَنْمِى خَيْرًا ، أَوْ يَقُولُ خَيْرًا ‘সে ব্যক্তি মিথ্যাবাদী নয়, যে মানুষের মধ্যে মীমাংসা করার জন্য (নিজের থেকে) ভাল কথা পৌঁছে দেয় কিংবা ভালো কথা বলে’।[4] তিনি আরো বলেন, لَا يَحِلُّ الْكَذِبُ إِلَّا فِي ثَلَاثٍ : يُحَدِّثُ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ لِيُرْضِيَهَا ، وَالْكَذِبُ فِي الْحَرْبِ ، وَالْكَذِبُ لِيُصْلِحَ بَيْنَ النَّاسِ ‘তিনটি ক্ষেত্র ব্যতীত মিথ্যা বলা বৈধ নয়। (এক) স্ত্রীকে খুশী করার উদ্দেশ্যে তার সাথে স্বামীর কিছু বলা, (দুই) যুদ্ধের সময় এবং (তিন) লোকদের পরস্পরের মাঝে সংশোধন করার জন্য মিথ্যা কথা বলা’।[5] ইমাম খাত্ত্বাবী (রহঃ) বলেন, লোকেরা নিরাপত্তার খাতিরে ও অনিষ্ট দূরীকরণে এই সব বিষয় সমাধান করতে গিয়ে অতিরিক্ত কথা বলতে ও সত্যকে অতিক্রম করতে বাধ্য হন’।[6]

৫. মীমাংসার জন্য ছালাত বিলম্ব : মীমাংসার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে রাসূল (ছাঃ) নিজে ছুটে গেছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। ছাহাবী সাহল বিন সা‘দ বলেন, أَنَّ أَهْلَ قُبَاءٍ اقْتَتَلُوا حَتَّى تَرَامَوْا بِالْحِجَارَةِ، فَأُخْبِرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِذَلِكَ؛ فَقَالَ: اذْهَبُوا بِنَا نُصْلِحُ بَيْنَهُمْ ‘কুবার অধিবাসীদের মধ্যে লড়াই বেধে গেল। এমনকি তারা পাথর ছোঁড়াছুঁড়ি শুরু করল। এ ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-কে খবর দেয়া হলে তিনি বললেন, চল যাই, তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেই’।[7] অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট এ সংবাদ পৌঁছল যে, কুবায় বনূ আমর ইবনু আওফ গোত্রে কোন বিবাদ ঘটেছে। তাদের মধ্যে মীমাংসার উদ্দেশে তিনি কয়েকজন ছাহাবীসহ বেরিয়ে গেলেন। আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) সেখানে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েন। ইতোমধ্যে ছালাতের সময় হয়ে গেল। বেলাল (রাঃ) আবুবকর (রাঃ)-এর নিকট এসে বললেন, হে আবুবকর! আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) কর্মব্যস্ত রয়েছেন। এদিকে ছালাতের সময় উপস্থিত। আপনি কি লোকদের ইমামতি করবেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, যদি তুমি চাও। তখন বেলাল (রাঃ) ছালাতের ইক্বামত বললেন এবং আবুবকর (রাঃ) এগিয়ে গেলেন এবং তাকবীর বললেন’।[8] অত্র হাদীছ প্রমাণ বহন করে যে, রাসূল (ছাঃ) বিবাদমান দুই গোষ্ঠীর মাঝে মীমাংসার স্বার্থে জামা‘আতে ছালাত আদায়ে বিলম্ব করেছেন।

অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে দেখা যায় পারস্পারিক মতপার্থক্য। ব্যক্তিগত কারণে চলমান দুই সহকর্মীর বিবাদ প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। দুই জনের বিরোধ এক সময় দলীয় রূপ ধারণ করে যাতে প্রতিষ্ঠানসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হ’তে পারে। এজন্য ইসলাম ব্যক্তি বিরোধ, সামাজিক বিরোধ, সম্পদ নিয়ে বিরোধ, মর্যাদা নিয়ে বিরোধ এমনকি ধর্মীয় ক্ষেত্রে বিরোধকে মীমাংসা করার জন্য দিক নির্দেশনা দিয়েছে। আল্লাহ বলেন,وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا ‘তোমার সকলে সমবেতভাবে আল্লাহর রজ্জুকে ধারণ কর এবং পরস্পরে বিছিন্ন হয়ো না (আলে ইমরান ৩/১০৩)। তিনি আরো বলেন, وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنْ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا ‘যদি মুমিনদের দুই দল পরস্পরে যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তাহ’লে তোমরা তাদের মধ্যে সন্ধি করে দাও (হুজরাত ৪৯/০৯)। আল্লাহর বাণী- فَاتَّقُوا اللَّهَ وَأَصْلِحُوا ذَاتَ بَيْنِكُمْ وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ إِنْ كُنتُمْ مُؤْمِنِينَ ‘অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং পরস্পরে আপোষ মীমাংসা করে নাও (আনফাল ৮/১)। আয়াতের তাফসীরে ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, এটি আল্লাহ তা‘আলা ও তার রাসূলের পক্ষ থেকে মুমিনদেরকে উদ্বুদ্ধকরণ যে, তারা আল্লাহকে ভয় করবে এবং বিবাদমান ব্যক্তিদের মাঝে মীমাংসা করবে’।[9]

বিরোধ মীমাংসার ফযীলত :

১. আল্লাহর রহমত অবতরণ : দুই জন বিবাদমান ব্যক্তির মাঝে মীমাংসা করলে আল্লাহর রহমত নাযিল হয়। এজন্য সালাফে ছালেহীন এ কাজে নিজেদের নিয়োজিত রাখতেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ ‘মুমিনগণ পরস্পরে ভাই ভাই। অতএব তোমাদের দু’ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করে দাও। আর আল্লাহকে ভয় কর। তাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হবে (হুজুরাত ৪৯/১০)। অর্থ্যাৎ দুই জন বিবাদমান ব্যক্তির মাঝে মীমাংসা করলে আল্লাহ তার প্রতি অনুগ্রহ করবেন।

২. ধ্বংস থেকে মুক্তি লাভ : লোকেরা যখন নিজেরা সংশোধিত হয় এবং পরস্পরের মধ্যে সংশোধন করে দেয় তখন তারা আসমানী বালা এবং দুনিয়াবী ধ্বংসলীলা থেকে রক্ষা পায়। আল্লাহ বলেন, وَمَا كَانَ رَبُّكَ لِيُهْلِكَ الْقُرَى بِظُلْمٍ وَأَهْلُهَا مُصْلِحُونَ ‘আর তোমার প্রতিপালক এমন নন যে, সেখানকার অধিবাসীরা সংশোধনকারী হওয়া সত্ত্বেও জনপদ সমূহকে অন্যায়ভাবে ধ্বংস করে দিবেন (হূদ ১১/১১৭)। সৎকর্মশীল এবং সংশোধনকারী এক নয়। সৎকর্মশীল নিজে সৎ কিন্তু অপরকে সংশোধন করে না। আর সংশোধনকারী নিজে যেমন সৎকর্মশীল তেমনি অন্যকে সংশোধন করে এবং মীমাংসা করে দেয়’।[10] যেমন আল্লাহ অন্যত্র বলেন, وَالصُّلْحُ خَيْرٌ আর মীমাংসাই উত্তম (নিসা ৪/১২৮)

৩. নিফাক থেকে মুক্তি লাভ : ফিৎনা-ফাসাদ সৃষ্টিকারী মুনাফিক ও বক্র হৃদয়ের লোকদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন যে, তাদের সংশোধনকারী হওয়ার দাবী সত্ত্বেও তার বিপর্যয় সৃষ্টিকারী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ لَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ قَالُوا إِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُونَ ‘যখন তাদের বলা হয়, পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করো না, তখন তারা বলে আমরা তো সংশোধনকামী’ (বাক্বারাহ ২/১১)। আল্লাহ অন্যত্র বলেন, إِنَّ اللَّهَ لا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ ‘নিশ্চয় আল্লাহ ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের কোন আমল সংশোধন করেন না’ (ইউনুস ১০/৮১)। সমাজে কিছু মানুষ আছে যারা কল্যাণের দরজা খোলে ও অকল্যাণের দরজা বন্ধ করে। আবার কিছু লোক আছে যারা অকল্যাণের দরজা খোলে ও কল্যাণের দরজা বন্ধ করে। দু’টি দলের মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য রয়েছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِنَّ مِنَ النَّاسِ مَفَاتِيحَ لِلْخَيْرِ، مَغَالِيقَ لِلشَّرِّ، وَإِنَّ مِنَ النَّاسِ مَفَاتِيحَ لِلشَّرِّ مَغَالِيقَ لِلْخَيْرِ، فَطُوبَى لِمَنْ جَعَلَ اللَّهُ مَفَاتِيحَ الْخَيْرِ عَلَى يَدَيْهِ، وَوَيْلٌ لِمَنْ جَعَلَ اللَّهُ مَفَاتِيحَ الشَّرِّ عَلَى يَدَيْهِ ‘নিশ্চয় কতক লোক আছে, যারা কল্যাণের চাবিকাঠি এবং অকল্যাণের দ্বার রুদ্ধকারী। পক্ষান্তরে এমন কতক লোকও আছে যারা অকল্যাণের দ্বার উন্মোচনকারী এবং কল্যাণের পথ রুদ্ধকারী। সেই লোকের জন্য সুসংবাদ যার দু’হাতে আল্লাহ কল্যাণের চাবি রেখেছেন এবং সেই লোকের জন্য ধ্বংস যার দু’হাতে আল্লাহ অকল্যাণের চাবি রেখেছেন’।[11] আর আল্লাহ ভালো করে জানেন কে কোন উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে। আল্লাহ সে অনুযায়ী প্রত্যেককে প্রতিদান দিবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর আল্লাহ জানেন কে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী ও কে সংশোধনকারী’ (বাকারাহ ২/২২০)। যে কিতাব ও সুন্নাহকে আঁকড়িয়ে ধরে, যাবতীয় বিধানাবলী পালন করে এবং কথা, কর্ম ও আকীদায় প্রতিষ্ঠিত থাকে তাকেই মুছলেহ বা সংশোধানকারী বলা হয়। আল্লাহর নিকট তার প্রতিদান বিনষ্ট হবে না। তাকে খুব শীঘ্রই উত্তম প্রতিদান দান করা হবে। আল্লাহ বলেন, والَّذِينَ يُمَسِّكُونَ بِالْكِتَابِ وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ إِنَّا لَا نُضِيعُ أَجْرَ الْمُصْلِحِينَ ‘যারা কিতাবকে (তাওরাতকে) মযবুতভাবে ধারণ করে ও ছালাত কায়েম করে, নিশ্চয়ই আমরা মীমাংসাকারীদের পুরস্কার বিনষ্ট করি না’ (আ‘রাফ ৭/১৭০)

৪. সর্বশ্রেষ্ঠ আমল : বিবাদমান দুই ব্যক্তির মাঝে মীমাংসা করা অন্যতম শ্রেষ্ঠ আমল। এমনকি নফল ছিয়াম ও নফল ছাদাকা অপেক্ষাও উত্তম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِأَفْضَلَ مِنْ دَرَجَةِ الصِّيَامِ وَالصَّلَاةِ وَالصَّدَقَةِ، قَالُوا: بَلَى، قَالَ: صَلَاحُ ذَاتِ البَيْنِ، فَإِنَّ فَسَادَ ذَاتِ البَيْنِ هِيَ الحَالِقَةُ لَا أَقُولُ تَحْلِقُ الشَّعَرَ، وَلَكِنْ تَحْلِقُ الدِّينَ ‘(নফল) ছিয়াম, ছালাত ও ছাদাক্বা অপেক্ষাও উত্তম আমলের কথা তোমাদের বলব কি? ছাহবীগণ বললেন, অবশ্যই বলুন। তিনি বললেন, তা হ’ল পরস্পর সুসম্পর্ক স্থাপন করা। কেননা পরস্পর সম্পর্ক বিনষ্ট করা হ’ল দ্বীন মুন্ডনকারী বিষয়। আমি বলি না যে, তা মাথা মুন্ডন করে বরং তা দ্বীনকে মুন্ডন করে দেয় বা বিনষ্ট করে দেয়’।[12]

৫. অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছাদাক্বা : পরস্পরের মধ্যে মীমাংসা করে দেওয়া অন্যতম ছাদাক্বা। আর এই ছাদাক্বা অর্জনে সালাফগণ তৎপর ছিলেন। আবু আইয়ূব আনছারী (রাঃ) বলেন, একদা রাসূল (ছাঃ) আমাকে বললেন, أَلَا أَدُلُّكَ عَلَى صَدَقَةٍ يُحِبُّ اللَّهُ مَوْضِعَهَا؟ قُلْتُ: بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي. قَالَ: تُصْلِحُ بَيْنَ النَّاسِ فَإِنَّهَا صَدَقَةٌ يُحِبُّ اللَّهُ مَوْضِعَهَا ‘আমি কী তোমাকে এমন একটি ছাদাক্বার সন্ধান দিব না যার ক্ষেত্রকে আল্লাহ তা‘আলা ভালবাসেন? তিনি বললেন, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসর্গ হৌক- বলুন, হে আল্লাহর রাসূল! তখন তিনি বললেন, লোকদের মাঝে মীমাংসা করে দাও। কেননা এটি এমন এক ছাদাকা যার ক্ষেত্রকে আল্লাহ ভালোবাসেন’।[13] রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, كُلُّ سُلاَمَى مِنَ النَّاسِ عَلَيْهِ صَدَقَةٌ ، كُلَّ يَوْمٍ تَطْلُعُ فِيهِ الشَّمْسُ يَعْدِلُ بَيْنَ الاِثْنَيْنِ صَدَقَةٌ ‘মানুষের প্রতিটি হাড়ের জোড়ার জন্য তার উপর ছাদাক্বা রয়েছে। সূর্য উঠে এমন প্রত্যেক দিন দুই জনের মধ্যে মীমাংসা করাও ছাদাক্বা’।[14] অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَا عَمِلَ ابْنُ آدَمَ شَيْئًا أَفْضَلَ مِنَ الصَّلَاةِ، وَصَلَاحِ ذَاتِ الْبَيِّنِ، وَخُلُقٍ حَسَنٍ ‘আদম-সন্তান এমন কোন আমল করেনি, যা ছালাত, দুই জনের মাঝে মীমাংসা প্রতিষ্ঠা ও সচ্চরিত্রতা থেকে অধিক শ্রেষ্ঠ হ’তে পারে’।[15]

৬. পরিবারিক শান্তি প্রতিষ্ঠা : স্বামী-স্ত্রীর মাঝে অনেক সময় বিরোধ হ’তে পারে। ইসলাম পরিবার ভাঙ্গতে চায়না বরং গড়তে চায়। এই বিরোধ মীমাংসার করার ব্যাপারেও আল্লাহ তা‘আলা দিকে নির্দেশনা দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, وَإِنِ امْرَأَةٌ خَافَتْ مِنْ بَعْلِهَا نُشُوزًا أَوْ إِعْرَاضًا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَنْ يُصْلِحَا بَيْنَهُمَا صُلْحًا وَالصُّلْحُ خَيْرٌ ‘যদি কোন স্ত্রী তার স্বামী থেকে দূরত্ব ও উপেক্ষার আশংকা করে, তাহ’লে তারা পরস্পরে কোন সমঝোতায় উপনীত হ’লে, তাতে কোন দোষ নেই। আর মীমাংসাই উত্তম (নিসা ৪/১২৮)। তিনি আরো বলেন, وَإِنْ خِفْتُمْ شِقَاقَ بَيْنِهِمَا فَابْعَثُوا حَكَمًا مِنْ أَهْلِهِ وَحَكَمًا مِنْ أَهْلِهَا إِنْ يُرِيدَا إِصْلَاحًا يُوَفِّقِ اللَّهُ بَيْنَهُمَا إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا خَبِيرًا ‘আর যদি তোমরা (স্বামী-স্ত্রী) উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদের আশংকা কর, তাহ’লে স্বামীর পরিবার থেকে একজন ও স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন শালিস নিযুক্ত কর। যদি তারা উভয়ে মীমাংসা চায়, তাহ’লে আল্লাহ উভয়ের মধ্যে (সম্প্রীতির) তাওফীক দান করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও ভিতর-বাহির সবকিছু অবহিত (নিসা ৪/৩৫)

মীমাংসার আদব বা শিষ্টাচার :

১. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনকে লক্ষ্য নির্ধারণ করা : দুই জন ব্যক্তির মাঝে মীমাংসার জন্য প্রয়োজন একনিষ্টতা ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের ইচ্ছা। এই মনোভাব নিয়ে কাজ করলে এর চূড়ান্ত প্রতিদান যেমন পাওয়া যাবে তেমনি কাজে সফলতা অর্জনও সম্ভব হবে। আল্লাহ বলেন,وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ ابْتِغَاءَ مَرْضَاةِ اللَّهِ فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সেটা করে, সত্বর আমরা তাকে মহা পুরস্কার দান করব (নিসা ৪/১১৪)

২. ইনছাফ প্রতিষ্ঠা করা : বিবাদমান দুই ব্যক্তির মাঝে মীমাংসা করার সময় অবশ্যই ইনছাফ কায়েম করার ইচ্ছা থাকতে হবে। অন্যথায় ছওয়াব প্রাপ্তির বিপরীতে গুনাহ পেতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় মীমাংসাকারী অর্থের বিনিময়ে পক্ষপাত করে থাকেন যা হারাম। আবার কেউ আত্মীয়তার সম্পর্ক বা এলাকা প্রীতির কারণে পক্ষপাত করে থাকেন। এমন কর্ম করলে গুনাহগার হ’তে হবে। আল্লাহ বলেন, فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا بِالْعَدْلِ وَأَقْسِطُوا إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ ‘তাহ’লে তোমরা উভয় দলের মধ্যে ন্যায়ানুগভাবে মীমাংসা করে দাও এবং ন্যায়বিচার কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়নিষ্ঠদের ভালবাসেন’ (হুজুরাত ৪৯/০৯)

আর ন্যায়সঙ্গতভাবে মীমাংসাকারীরা পরকালে নূরের মেম্বারে আরোহন করবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِنَّ الْمُقْسِطِينَ عِنْدَ اللهِ عَلَى مَنَابِرَ مِنْ نُورٍ، عَنْ يَمِينِ الرَّحْمَنِ عَزَّ وَجَلَّ، وَكِلْتَا يَدَيْهِ يَمِينٌ، الَّذِينَ يَعْدِلُونَ فِي حُكْمِهِمْ وَأَهْلِيهِمْ وَمَا وَلُوا ‘ন্যায় বিচারকগণ (ক্বিয়ামতের দিন) আল্লাহর নিকটে নূরের মিম্বারে সমূহে মহিমান্বিত দয়ালু (আল্লাহ)-এর ডানপার্শ্বে উপবিষ্ট থাকবেন। আর তাঁর উভয় হাতই ডান হাত (অর্থাৎ সমান মহিমান্বিত)। (সেই ন্যায়পরায়ণ হচ্ছে) ঐ সব লোক, যারা তাদের শাসনকার্যে, তাদের পরিবার-পরিজনের ব্যাপারে এবং তাদের উপর ন্যস্ত দায়িত্ব সমূহের ব্যাপারে সুবিচার করে’।[16] 

ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, الصُّلْحُ الْجَائِزُ بَيْنَ الْمُسْلِمِينَ: هُوَ الَّذِي يُعْتَمَدُ فِيهِ رِضَا اللَّهِ سُبْحَانَهُ، ثم رِضَا الْخَصْمَيْنِ؛ فَهَذَا أَعْدَلُ الصُّلْحِ وَأَحَقُّهُ، وَهُوَ يَعْتَمِدُ الْعِلْمَ وَالْعَدْلَ؛ فَيَكُونُ الْمُصْلِحُ عَالِمًا بِالْوَقَائِعِ، عَارِفًا بِالْوَاجِبِ، قَاصِدًا لِلْعَدْلِ، فَدَرَجَةُ هَذَا أَفْضَلُ مِنْ دَرَجَةِ الصَّائِمِ الْقَائِمِ ‘মুসলিমদের পরস্পর আপোস-মীমাংসাকে ইসলাম অনুমোদন করে- যেখানে আল্লাহর সন্তুষ্টির উপর নির্ভর করা হবে এরপর বিবাদমান দুই ব্যক্তির সন্তুষ্টি। এটিই ইনছাফপূর্ণ ও উপযুক্ত মীমাংসা, যে জ্ঞান ও ন্যায়পরায়ণতার উপর নির্ভর করে। সুতরাং মীমাংসাকারী বাস্তবতা সম্পর্কে জ্ঞাত হবে, দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হবে ও ইনছাফ বাস্তবায়নকারী হবে। এই স্তরটিই নফল ছিয়াম ও নফল ছালাত অপেক্ষা উত্তম’।[17] যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন, الصُّلْحُ جَائِزٌ بَيْنَ المُسْلِمِينَ، إِلَّا صُلْحًا حَرَّمَ حَلَالًا، أَوْ أَحَلَّ حَرَامًا، وَالمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ، إِلَّا شَرْطًا حَرَّمَ حَلَالًا، أَوْ أَحَلَّ حَرَامًا ‘মুসলিমদের পরস্পর আপোস-মীমাংসাকে ইসলাম অনুমোদন করে। কিন্তু যে মীমাংসা হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল করবে, তা জায়েয নয়। মুসলিমগণ পরস্পরের মধ্যে যে শর্ত করবে, তা অবশ্যই পালন করতে হবে। কিন্তু যে শর্ত ও চুক্তি হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল করবে তা জায়েয হবে না’।[18]

উপসংহার : মুসলমানগণ পরস্পর ভাই ভাই। অথচ পরস্পরের মাঝে দিন দিন দূরত্ব বেড়েই চলেছে, সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন সংকট। যার ফলে আল্লাহর নির্দেশনা লংঘিত হচ্ছে। যেদিকে দৃষ্টিপাত করা যায় সেদিকেই বিরোধ আর বিচ্ছেদের পদধ্বনি। চলছে আপন দুই ভাইয়ের মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে চলছে বিবাদ। আবার অর্থ-সম্পদ নিয়ে চলছে হানাহানি। আর এভাবেই পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র ভেঙ্গে তছনছ হয়ে যাচ্ছে। বিভক্ত হচ্ছে মুসলিম সমাজ। এই ভয়াবহ অবস্থায় কিছু সৎ ব্যক্তি, সমাজ ও সংগঠনকে এগিয়ে আসতে হবে মীমাংসার কাজে। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্য বিভক্ত অবস্থা থেকে নববী আদর্শের আদলে অবিভক্ত ব্যক্তি, সমাজ, সংগঠন ও রাষ্ট্র কায়েম করবেন। গড়ে তুলবেন একটি শক্তিশালী ইসলামী ভ্রাতৃত্ব সম্পন্ন সমাজ বা রাষ্ট্র। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সহায় হৌন-আমীন!

[লেখক : গবেষণা সহকারী, হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ]


[1]. বুখারী হা/৬০১১; মিশকাত হা/৪৯৫৩।

[2]. ছহীহুত তারগীব হা/২৮১৮; মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/১৩০৫২।

[3]. তাবারানী কাবীর হা/৭৯৯৯; ছহীহুত তারগীব হা/২৮১৯।

[4]. বুখারী হা/২৬৯২; মুসলিম হা/২৬০৫; মিশকাত হা/৪৮২৫।

[5]. তিরমিযী হা/১৯৩৯; মিশকাত হা/৫০৩৩; ছহীহাহ হা/৫৪৫

[6]. মা‘আলিমুস সুনান ৪/১২৩।

[7]. বুখারী হা/২৬৯৩; নাসাঈ হা/৫৪১৩।

[8]. বুখারী হা/১২১৮, ১২৩৪

[9]. তাফসীরে তাবারী হা/১৫৬৮১

[10]. তাফসীরে তাবারী ১৫/৫৩০

[11]. ইবনু মাজাহ হা/২৩৭; ছহীহাহ হা/১৩৩২; ছহীহুল জামে হা/২২২৩

[12]. তিরমিযী হা/২৫০৯; আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৩৯১।

[13]. ছহীহাহ হা/২৬৪৪; ছহীহুত তারগীব হা/২৮২০।

[14]. বুখারী হা/২৭০৭; মিশকাত হা/১৮৯৬।

[15]. ছহীহুল জামে হা/৫৬৪৫; ছহীহাহ হা/১৪৪৮।

[16]. মুসলিম হা/১৮২৭; মিশকাত হা/৩৬৯০।

[17]. ই‘লামুল মুআক্কিঈন ১/৮৬।

[18]. তিরমিযী হা/১৩৫২; মিশকাত হা/২৯২৩



বিষয়সমূহ: বিধি-বিধান
আরও