সংগঠনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

ড. এ.এস.এম. আযীযুল্লাহ 22476 বার পঠিত

ইসলাম ফিতরাত বা স্বভাবসুন্দর ধর্ম। তাই সমাজবদ্ধ জীবন যাপন মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। ইচ্ছা করলেও কোন মানুষের পক্ষে একাকী বসবাস করা সম্ভব নয়। এ কারণে মানুষকে সামাজিক জীব বলা হয়। এই সমাজবদ্ধ জীবন যাপনের অপর নাম জামাআতী যিন্দেগী। মানব জীবনে সংঘবদ্ধ জীবন যাপনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় সাংগঠনিক জীবনের প্রতি গুরুত্ব প্রদান মূলক অনেক নীতিকথার প্রচলন আছে। যেমন ‘দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ’; ‘দশের লাঠি একের বোঝা’ ইত্যাদি। সুতরাং সামাজিক জীবনে ঐক্যের গুরুত্ব অপরিসীম। বিন্দু বিন্দু বারির সমষ্টিই হল সিন্ধু বা সমুদ্র। অপরদিকে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণু-পরমাণুর সুনিয়ন্ত্রিত সম্মিলনে তৈরী হচ্ছে বিশাল ক্ষমতাসম্পন্ন ‘আণবিক বোম’। যার শক্তির কাছে দুনিয়াবী যেকোন শক্তি মাথা নত করছে। এ থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, উপাদান যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন, তাদের সুসংবদ্ধ অবস্থানে যে শক্তি তৈরী হচ্ছে তা অপ্রতিরোধ্য। ইসলামী শরীআতে তাই সুশৃঙ্খল ও সংঘবদ্ধ জীবনকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ এবং রাসূল (ছাঃ) মুসলমানদের জামাআতবদ্ধ যিন্দেগী যাপনের বহুমুখী নির্দেশনা প্রদান করেছেন। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সুদৃঢ়ভাবে আল্লাহর রজ্জুকে ধারণ কর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না’ (আলে ইমরান ১০৩)

বর্তমান বিশ্ব সাংগঠনিক বিশ্ব। আধুনিক বিশ্বে ঐক্যবদ্ধ একটি চক্র তাদের যথাসর্বস্ব শক্তি দিয়ে সংঘবদ্ধ প্রক্রিয়ায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে। উক্ত শক্তিকে মোকাবেলা করে পৃথিবীতে অহির পতাকা উড্ডীন করার জন্য প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ তথা সংগঠিত মুসলিম জনশক্তি। একবিংশ শতাব্দীর নব্য জাহেলী যুগে মুসলমানদের টিকে থাকতে গেলে মুসলিম জাতিকে সকল প্রকার ভেদাভেদ ভুলে নিঃশর্তভাবে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ তথা অহির অনুসরণের মাধ্যমে ইসলামের স্বর্ণ যুগের ছাহাবায়ে কেরামের মত ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী জামাআত কায়েম করতে হবে। মহান আল্লাহ সংগ্রামরত ঐক্যবদ্ধ জনশক্তিকে পছন্দ করেন। যেমন- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন, যারা তাঁর রাস্তায় সীসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় সারিবদ্ধভাবে সংগ্রাম করে’ (ছফ ৪)

জামাআত বা সংগঠন কি : শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তায়মিয়া (রহঃ) বলেন, اَلْجَمَاعَةُ هِيَ الْاِجْتِمَاعُ وَ ضِدُّهَا الْفُرْقَةُ وَإِنْ كَانَ لَفْظُ الْجَمَاعَةِ قَدْ صَارَ إِسْمًا لِنَفْسِ الْقَوْمِ الْمُجْتَمِعِيْنَ ‘জামাআত হচ্ছে একত্রিত হওয়া। এটি দলাদলির বিপরীত। যদিও জামাআত শব্দটি যেকোন ঐক্যবদ্ধ সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়’ (মাজমূউ ফাতাওয়া ৩/১৫৭)। আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেন, اَلْجَمَاعَةُ مَا وَافَقَ الْحَقَّ وَإِنْ كُنْتَ وَحْدَكَ ‘যা হক্বের অনুগামী তাই জামাআত। যদিও তুমি একাকী হও’। ইমাম লালকাঈ বলেন, إِنَّمَا الْجَمَاعَةُ مَا وَافَقَ طَاعَةَ اللهِ وَإِنْ كُنْتَ وَحْدَكَ ‘যা আল্লাহর আনুগত্যর অনুকূলে হয়, তাই জামাআত। যদিও এক্ষেত্রে আপনি একাই হন’ (মা‘আলিমুল ইনতিলাকাতিল কুবরা, পৃ. ৫৩)। আল্লামা ইবনুল কাইয়িম (রহঃ) বলেন, وَاعْلَمْ أَنَّ الْاِجْمَاعَ وَالْحُجَّةَ وَالسَّوَادَ الْاَعْظَمَ هُوَ الْعَالِمُ صَاحِبُ الْحَقِّ وَإِنْ كَانَ وَحْدَهُ وَإِنْ خَالَفَهُ اَهْلُ الْاَرْضِ ‘জেনে রাখুন! ইজমা, দলীল ও বড় দল হল হক্বপন্থী আলেম। যদিও তিনি একাই হন। আর পৃথিবীর সকলে তার বিরোধিতা করে’ (ই‘লামুল মুওয়াক্কিঈন)

জামাআতের সাথে নেতৃত্ব ও নেতার বিষয়টি সুস্পষ্ট। সুতরাং বলা চলে, ‘একজন নেতার অধীনে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে সংঘবদ্ধ জনসমষ্টিকে জামাআত বা সংগঠন বলে’ (اَلْجَمَاعَةُ مَا اجْتَمَعَ مِنَ النَّاسِ عَلَى هَدَفٍ تَحْتَ إِمَارَةٍ)। সংগঠন প্রতিষ্ঠা করতে গেলে নেতৃত্ব, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং আনুগত্যশীল সংঘবদ্ধ জনসমষ্টি প্রয়োজন। এছাড়া আরও কিছু উপাদান প্রয়োজন যেগুলোকে সংগঠনের মৌলিক উপাদান বলতে পারি। যে উপাদানের অনুপস্থিতিতে কোন জিনিসের প্রকৃত পরিচয় হারিয়ে যায়, তাকে ঐ জিনিষের মৌলিক উপাদান বলে। সেই অর্থে সংগঠনের মৌলিক উপাদান ৬টি। যথা- ১. নির্দিষ্ট লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, ২. যোগ্য নেতৃত্ব, ৩. সঠিক কর্মসূচী, ৪. নিবেদিতপ্রাণ কর্মী বাহিনী, ৫. অর্থ ও ৬. নির্দিষ্ট ক্ষেত্র। এই ছয়টি উপাদানের কোন একটিকে বাদ দিয়ে সংগঠন কায়েম করা সম্ভব নয়। বিষয়টি সহজভাবে বুঝার জন্য ‘জামাআতী যিন্দেগী’কে একটি চলন্ত গাড়ির সাথে তুলনা করা চলে। একটি গাড়ি চলতে গেলে দক্ষ চালক, অনুগত সহযোগী (হেলপার-কন্ডাক্টর), ভাল ইঞ্জিন, ফুয়েল, রাস্তা ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। একই সাথে প্রয়োজন হয় গাড়ি পরিচালনার কিছু কলাকৌশল যেমন- স্টিয়ারিং ঘুরানো, গিয়ার পরিবর্তন করা, প্রয়োজনে ব্রেক করা, হর্ণ বাজানো ইত্যাদি। এসব ছাড়া একটি গাড়ি কোন অবস্থাতেই গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারে না।

এখানে দক্ষ চালককে যোগ্য নেতৃত্ব, গন্তব্যস্থলকে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, পরিচালনা পদ্ধতিকে সঠিক কর্মসূচী, অনুগত সহযোগী ও স্টিয়ারিং, ব্রেক, হর্ণ, ইঞ্জিন ইত্যাদিকে নিবেদিতপ্রাণ কর্মী বাহিনী, ফুয়েলকে অর্থ এবং চলার রাস্তাকে নির্দিষ্ট ক্ষেত্র হিসেবে কল্পনা করলে বিষয়টি বুঝতে খুবই সহজ হবে। কোন গাড়িতে চালক না থাকলে যেমন তা চলে না, তেমনি যেনতেন চালক থাকলেই সে গাড়ি নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না। লক্ষ্যপানে পৌঁছাতে গেলে চালককে অবশ্যই দক্ষ ও অভিজ্ঞ হতে হবে। চালক দক্ষ ও অভিজ্ঞ না হলে সে গাড়ি গন্তব্যে পৌঁছানো তো দূরের কথা পথিমধ্যে যেকোন ধরনের দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে নিজের জীবন নষ্ট, গাড়ি নষ্ট, যাত্রীদের দুর্ভোগ, রাস্তার জনগণের জীবন নাশসহ বহুমুখী ক্ষতির সম্ভাবনা আছে। সাথে সাথে চালক যদি ড্রাইভিং বা ট্রাফিক আইন মেনে গাড়ি না চালায় তবে চালকসহ গাড়িও শ্রীঘরেও যেতে হতে পারে।

আবার যদি গাড়ির স্টিয়ারিং, ব্রেক ঠিকমত কাজ না করে, হর্ণ ঠিকমত না বাজে, সহকর্মীরা ঠিকমত সাহায্য বা আনুগত্য না করে, তবে চালক যোগ্য হলেও তার পক্ষে সে গাড়ি চালানো নিতান্তই অসম্ভব। সাথে সাথে গাড়িটি সুষ্ঠু ও সুন্দরভার চলার জন্য চাই প্রশস্ত সমতল নিরাপদ সড়ক। এতকিছু থাকার পরও যদি অর্থের অভাবে গাড়ির তেল কেনা সম্ভব না হয়, তাহলে পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়াবে তা সহজেই অনুমেয়। সংগঠন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে উল্লিখিত উপাদানসমূহের উদাহরণ অনুরূপ।

সাংগঠনিক জীবন যাপন মুসলমানের জন্য ফরয। আর সুনির্দিষ্ট ইসলামী লক্ষ্যে গঠিত জামাআতের উপর আল্লাহর রহমত আছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাই তো বলেছেন, يَدُ اللهِ مَعَ الْجَمَاعَةِ  ‘জামা‘আতের উপর আল্লাহর হাত রয়েছে’ (তিরমিযী হা/২১৬৬, হাদীছ ছহীহ)। নেতৃত্ব ও আনুগত্যহীন সংগঠন কার্যতঃ সংগঠনই নয়। মসজিদ ভর্তি মুছল্লী থাকার পরও যদি সকলে যার যার মত ছালাত আদায় করে, তাকে কেউ জামা‘আত বলে না; অনুরূপ মুক্তাদীবিহীন ইমামকেও ইমাম বলা হয় না। আবার ইমাম আছে, মুক্তাদী আছে কিন্তু আনুগত্য নেই। যেমন ইমাম রুকূতে গেলে মুক্তাদীরা কেউ সিজদায় যায়, আবার কেউ দাঁড়িয়ে থাকে; ইমাম সিজদায় গেলে মুক্তাদীরা তাশাহহুদ পড়ে; এমন আনুগত্যহীন অবস্থাকে কোন অবস্থাতেই জামাআত বলা চলে না। তাই জামা‘আত কায়েমের প্রধান শর্তই হল নেতৃত্ব ও আনুগত্য।

জামাআত দুই প্রকার। ১. জামা‘আতে আম্মাহ তথা ব্যাপকভিত্তিক সংগঠন ও ২. জামাআতে খাছ্ছাহ তথা বিশেষ সংগঠন। রাষ্ট্রীয় সংগঠন জামাআতে আম্মাহর পর্যায়ভুক্ত। স্বয়ং রাষ্ট্রপ্রধানই এ সংগঠনের আমীর। ইসলামী শরীআতে তিনি ‘আমীরুল মুমেনীন’ হিসেবে অভিহিত হবেন। তিনি ইসলামী শরীআ আইনের আলোকে প্রজাপালন ও শারঈ হুদূদ কায়েম করবেন। এই ইমারতকে ‘ইমারতে মুলকী’ও বলা হয়। ইসলামী রাষ্ট্র ছাড়া ইমারতে মুলকী কায়েম করা সম্ভব নয়।

রাষ্ট্রীয় সংগঠনের বাইরে অন্যান্য সকল সংগঠনই জামাআতে খাছ্ছার পর্যায়ভুক্ত। এ সংগঠন মুসলিম-অমুসলিম সকল রাষ্ট্রে কায়েম করা সম্ভব। ইসলামী শরীআত মতে দ্বীনের প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে কোন স্থানে যদি তিন জন মুমিনও থাকেন তবে সেখানে একজনকে আমীর করে জামাআত বা সংগঠন কায়েম করা অপরিহার্য। এ জামাআত যত বড় হবে ততই ভাল। এই ইমারতকে ‘ইমারতে শারঈ’ বলা হয়। তিনি শারঈ হুদূদ কায়েম করবেন না, কিন্তু অবশ্যই তাঁর অনুসারীদের মধ্যে শারঈ অনুশাসন কায়েম করবেন।

জামাআতে খাছ্ছাহ বা নির্দিষ্ট সংগঠন কায়েমের বিষয়ে পবিত্র কুরআনে নানাভাবে নিদের্শ এসেছে। মহান আল্লাহ বলেন, (১) وَاعْتَصِمُواْ بِحَبْلِ اللّهِ جَمِيْعاً وَّلاَ تَفَرَّقُواْ ‘তোমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সুদৃঢ়ভাবে আল্লাহর রজ্জুকে ধারণ কর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না’ (আলে ইমরান ১০৩)। (২) ‘তোমাদের মধ্যে এমন একটি জাতি থাকা প্রয়োজন যারা সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎ কাজে নিষেধ করবে। আর তারাই হবে সফলকাম’ (আলে ইমরান ১০৪)। তিনি আরো বলেন, (৩) ‘তোমরাই উত্তম জাতি। বিশ্ব মানবের জন্য তোমাদের উত্থান। তোমরা সৎ কাজের আদেশ দিবে ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করবে’ (আলে ইমরান ১১০)। প্রথম আয়াতে সুস্পষ্ট যে, ঐক্যবদ্ধভাবে দ্বীন ইসলামকে আকড়ে ধরতে হবে এবং শেষ দু’টি আয়াতেও দাওয়াতের ক্ষেত্রে সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে।

নবী করীম (ছাঃ)ও এ ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। একটি হাদীছে তিনি বলেন, আল্লাহ রাববুল আলামীন তিনটি কাজে সন্তুষ্ট হন। তার দ্বিতীয় কাজটি হল ‘তোমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আল্লাহর রজ্জুকে ধারণ করবে এবং দলে দলে বিভক্ত হবে না’ (মুসলিম)। তিনি আরো বলেন, ‘আমি তোমাদেরকে পাঁচটি বিষয়ের নির্দেশ দিচ্ছি। (১) জামাআতবদ্ধ জীবন-যাপন করা (২) আমীরের নির্দেশ শ্রবণ করা (৩) তাঁর আনুগত্য করা (৪) প্রয়োজনে হিজরত করা ও (৫) আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। যে ব্যক্তি জামাআত হতে এক বিঘত পরিমাণ বের হয়ে গেল তার গর্দান হতে ইসলামের গন্ডী ছিন্ন হল, যতক্ষণ না সে ফিরে আসে। যে ব্যক্তি মানুষকে জাহেলিয়াতের দাওয়াত দ্বারা আহবান করে, সে ব্যক্তি জাহান্নামীদের দলভুক্ত হবে। যদিও সে ছিয়াম পালন করে, ছালাত আদায় করে এবং ধারণা করে যে সে একজন মুসলিম’ (আহমাদ, তিরমিযী)। এ হাদীছে বর্ণিত পাঁচটি বিষয়ের প্রথম তিনটিই হল সংগঠন, নেতৃত্ব ও আনুগত্য বিষয়ক। সাথে সাথে হাদীছের শেষাংশে বলা হয়েছে সংগঠন বহির্ভূত ব্যক্তি ইসলাম থেকে খারিজ।

নেতৃত্ব ও আনুগত্য ছাড়া সংগঠন টিকতে পারে না। এ বিষয়ে ওমর (রাঃ) যথার্থই বলেছেন। তিনি বলেন, لاَإِسْلاَمَ إِلاَّ بِجَمَاعَةٍ وَلاَ جَمَاعَةَ إِلاَّ بِإِمَارَةٍ وَلاَ إِمَارَةَ إِلاَّ بِطَاعَةٍ ‘ইসলাম হয় না জামাআত ছাড়া, জামাআত হয় না আমীর ছাড়া, ইমারত হয় না আনুগত্য ছাড়া’ (দারেমী)। সংগঠন প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে আনুগত্যের প্রতিও ইসলাম সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর, রাসূলুল্লাহর আনুগত্য কর এবং তোমাদের মধ্যকার আমীরের আনুগত্য কর। তবে যদি কোন ব্যাপারে তোমাদের মধ্যে মতপার্থক্যের সৃষ্টি হয়, তাহলে সেটি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও’ (নিসা ৫৯)। এ আয়াতে স্পষ্টভাবে আমীরের আনুগত্যের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য শর্তহীন, পক্ষান্তরে আমীরের আনুগত্য শর্ত সাপেক্ষ।

আমীরের আনুগত্যের বিষয়ে নবী (ছাঃ) বলেন, مَنْ يُطِعِ الْاَمِيْرَ فَفَدْ أَطَاعَنِىْ وَمَنْ يُعْصِى الْاَمِيْرَ فَقَدْ عَصَانِىْ ‘যে ব্যক্তি আমীরের আনুগত্য করল, সে যেন আমার আনুগত্য করল। আর যে ব্যক্তি আমীরের অবাধ্যতা করল, সে আমার অবাধ্যতা করল’ (বুখারী ও মুসলিম; মিশকাত হা/৩৬৬৯)। ছাহাবায়ে কেরাম আনুগত্যের স্বীকৃতি স্বরূপ রাসূল (ছাঃ) এর নিকট বায়আত বা অঙ্গীকার করতেন। যেমন একটি হাদীছে ওবাদা বিন ছামেত (রা.) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (স.)-এর নিকটে বায়আত করেছিলাম এই মর্মে যে, আমরা আমীরের আদেশ শুনব ও মেনে চলব, কষ্টে হোক স্বাচ্ছন্দ্যে হোক, আনন্দে হোক অপছন্দে হোক, আমাদের উপরে কাউকে প্রাধান্য দেয়ায় হোক। বায়‘আত করেছিলাম এই মর্মে যে, নেতৃত্ব নিয়ে আমরা কখনো ঝগড়া করব না। যেখানেই থাকি সর্বদা সত্য কথা বলব এবং আল্লাহর হুকুম মেনে চলার ব্যাপারে কোন নিন্দুকের নিন্দাকে ভয় করব না। (অন্য বর্ণনায় রয়েছে) আমীরের মধ্যে প্রকাশ্য কুফরী না দেখা পর্যন্ত আনুগত্য করে যাব’ (বুখারী ও মুসলিম)

অন্য হাদীছে রাসূল (ছা.) বলেছেন, إِنْ أُمِّرَ عَلَيْكُمْ عَبْدٌ مُجَدَّعٌ يَقُوْدُكُمْ بِكِتَابِ اللهِ فَاسْمَعُوْا لَهُ وَاَطِيْعُوْا ‘যদি নাক-কান কর্তিত কোন ক্রীতদাসকেও তোমাদের আমীর নিযুক্ত করা হয়, আর সে যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদেরকে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী পরিচালনা করে, ততক্ষণ তোমরা তার কথা শুনবে এবং তার আনুগত্য করবে’ (মুসলিম হা/১৭৩৭)। রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, اِسْمَعُوْا وَاَطِيْعُوْا وَإِنِ اسْتُعْمِلَ عَلَيْكُمْ عَبْدٌ حَبَشِيٌّ كَأَنَّ رَأْسَهُ زَبِيْبَةٌ ‘যদি তোমাদের জন্য নিগ্রো দাসকেও আমীর হিসেবে নিযুক্ত করা হয়, যার মাথা কিসমিসের ন্যায় (চ্যাপ্টা)। তবুও তোমরা তার কথা শুনবে ও তার আনুগত্য করবে’ (বুখারী; মিশকাত হা/৩৬৬৩)। আনুগত্যহীনতার পরিণতি সম্পর্কে তিনি বলেন, مَنْ خَرَجَ مِنَ الطَّاعَةِ وَفَارَقَ الْجَمَاعَةَ ثُمَّ مَاتَ، مَاتَ مِيْتَةً جَاهِلِيَّةً ‘যে ব্যক্তি আমীরের আনুগত্য হতে বেরিয়ে গেল ও সংগঠন হতে বিচ্ছিন্ন হল; অতঃপর সে অবস্থায় মৃত্যুবরণ করল, সে যেন জাহেলী হালতে মৃত্যুবরণ করল’ (মুসলিম হা/১৮৪৯)। তিনি আরো বলেন, مَنْ رَاىَ مِنْ أَمِيْرِهِ شَيأًَ يِكْرَهُهُ فَلْيَصْبِرْ، فَإِنَّهُ لَيْسَ أَحَدٌ يُفَارِقُ الْجَمَاعَةِ شِبْرًا فَيَمُوْتُ إِلاَّ مَاتَ مِيْتَةً جَاهِلِيَّةً  ‘যদি কেউ তার আমীরের মধ্যে অপছন্দনীয় কিছু দেখে, সে যেন ধৈর্য ধারণ করে। কেননা যে ব্যক্তি সংগঠন থেকে এক বিঘত পরিমাণ দূরে সরে গেল এবং এমতাবস্থায় তার মৃত্যু হল, সে জাহেলী হালতে মৃত্যুবরণ করল’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৬৬৮)। বিষয়টির প্রকৃষ্ট উদাহরণ জামাআতে ছালাত। জামাআতে ছালাত আদায়রত অবস্থায় যদি ইমাম কোন ভুল করেন, তখন পেছন থেকে মুক্তাদীদের লোকমা দেওয়ার সুযোগ আছে। লোকমা দেওয়ার পরও যদি ইমাম সংশোধিত না হন, তবে মুক্তাদীদের জামাআত ছেড়ে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই, যদিও মুক্তাদী নিশ্চিত যে, ইমাম ভুল করছেন। সাংগঠনিক ক্ষেত্রে আনুগত্যের বিষয়টিও ঠিক অনুরূপ। তাই সংগঠনের আমীরের মধ্যে কোন ভুল পরিলক্ষিত হলে সংগঠন থেকে বের হয়ে না গিয়ে সাধ্যমত আমীরের সংশোধনের ব্যবস্থা করতে হবে।

তবে আমীরের আনুগত্য হবে ভাল কাজে। কোন পাপের কাজে তার আনুগত্য চলবে না। এ সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেন,  اَلسَّمْعُ وَالطََّاعَةُ عَلىَ الْمَرْءِ الْمُسْلِمِ فِيْمَا أحَبَّ وَ كَرِهَ مَالَمْ يُؤْمَرْ بِمَعْصِيَةٍ وَإذَا أُمِرَ بِمَعْصِيَةٍ فَلاَ سَمْعَ وَلاَ طَاعَةَ ‘প্রত্যেক মুসলমানের উপর শ্রবণ ও আনুগত্য আবশ্যক। চাই সে হুকুম তার পছন্দ হোক বা অপছন্দ হোক। যতক্ষণ না সে গুনাহের কাজে আদিষ্ট হয়। যদি সে পাপের কাজে আদিষ্ট হয়, তাহলে তা শ্রবণ করা ও তার আনুগত্য করা যাবে না’ (মুসলিম হা/ ১৮৩৯)। তিনি আরো বলেন, لاَ طَاعَةَ فِيْ مَعْصِيَةِ اللهِ إِنَّمَا الطَاعَةُ فِي الْمَعْرُوْفِ  ‘আল্লাহর অবাধ্যতায় কোন আনুগত্য নেই। আনুগত্য কেবল ভাল কাজে’ (আবুদাউদ হা/২৬২৫, হাদীছ ছহীহ)। অন্য হাদীছে তিনি বলেন, لاَطَاعَةَ لِمَخْلُوْقٍ فِيْ مَعْصِيَةِ الخَالِقِ  ‘স্রষ্টার অবাধ্যতায় সৃষ্টির কোন আনুগত্য নেই’ (শারহুস সুন্নাহ; মিশকাত হা/৩৬৯৬, হাদীছ ছহীহ)

অনুসারীরা সাধ্যমত আমীরের আনুগত্য করবে। আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রাঃ) বলেন, كُنَّا إِذَا بَايَعْنَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى السَّمْعِ وَالطَاعَةِ يَقُوْلُ لَنَا : فِيْمَا اسْتَطَعْتُمْ   ‘আমরা যখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এর নিকট শ্রবণ ও আনুগত্যের বায়‘আত গ্রহণ করতাম, তখন তিনি আমাদের বলতেন, তোমরা (আনুগত্য করবে) সাধ্যানুযায়ী’ (বুখারী ও মুসলিম; মিশকাত হা/৩৬৬৭)

সংগঠনের আমীর নিরঙ্কুশ আনুগত্য লাভের জন্য অধীনস্ত নেতা-কর্মীদের কাজের সঠিক মূল্যায়ন করবেন এবং তাদের ব্যাপারে সর্বদা সুধারণা পোষণ করবেন। রাসূল (ছাঃ) বলেন, وَلاَ تَحْقِرَنَّ مِنَ الْمَعْرُوْفِ شَيْئًا ‘কোন ভাল কাজকে তোমরা তুচ্ছজ্ঞান কর না’ (মুসলিম)। অন্য হাদীছে রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِنَّ الْأَمِيْرَ إِذَا ابْتَغَى الرِّيْبَةَ فِى النَّاسِ أِفْسَدَهُمْ ‘আমীর যখন মানুষের সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করবেন, তখন তাদেরকে ধ্বংস করবেন’ (আবুদাউদ হা/৪৮৮৯, হাদীছ ছহীহ)

বিচ্ছিন্ন জীবন ইসলামী জীবন নয়। কেননা ‘যে ব্যক্তি জামাআত হতে এক বিঘাত পরিমাণ দূরে সরে গেল এবং ঐ অবস্থায় তার মৃত্যু হল, সে জাহেলী হালতে মৃত্যুবরণ করল’ (মুসলিম)। অন্য এক হাদীছে নবী (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমীরের প্রতি আনুগত্যের হাত ছিনিয়ে নিল, সে ব্যক্তি ক্বিয়ামতের ময়দানে আল্লাহর সাথে মুলাক্বাত করবে এমন অবস্থায় যে তার জন্য কোন দলীল থাকবে না (মুসলিম)। আর একারণেই রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘কোন তিনজন লোকের জন্যও কোন নির্জন ভূমিতে অবস্থান করা হালাল নয়, তাদের মধ্য থেকে একজনকে আমীর নিযুক্ত না করা পর্যন্ত’ (আহমাদ)

বিচ্ছিন্ন জীবন যাপন করলে শয়তান সহজে তাকে বশীভূত করে এবং পথভ্রষ্ট করে দেয়। সেজন্য সাংগঠনিক জীবন যাপনের আদেশ দিয়ে রাসূল (ছাঃ) বলেন,عَلَيْكُمْ بِالْحَمَاعَةِ وَاِيَّاكُمْ وَالْفُرْقَةَ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ مَعَ الْوَاحِدِ وَهُوَ مِنَ الْإِثْنَيْنِ اَبْعَدُ مَنْ اَرَادَ بُحْبُوْبَةَ الْجَنَّةِ فَلْيَلْزِمِ الْجَمَاعَةَ  ‘তোমরা অবশ্যই জামাআতবদ্ধ জীবন যাপন করবে। সর্বদা বিচ্ছিন্ন হওয়া থেকে বেঁচে থাকবে। কেননা শয়তান একজনের সঙ্গী হয়, দু’জন থেকে বহুদূরে অবস্থান করে। যে ব্যক্তি জান্নাতের প্রশস্ত স্থান চায়, সে যেন সংগঠনকে আঁকড়ে ধরে’ (তিরমিযী হা/২১৬৫, হাদীছ ছহীহ)। এই হাদীছের মাধ্যমে সাংগঠনিক জীবনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা যেমন ফুটে উঠে, তেমনি জামাআতবিহীন জীবন যাপনের ক্ষতিকারিতাও দিবালোকের ন্যায় প্রস্ফূটিত হয়।

মহান আল্লাহ প্রত্যেক মুসলমানকে সকল প্রকার দলাদলির ঊর্ধ্বে উঠে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছকে যথাযথভাবে অনুসরণের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ এক ও অভিন্ন মুসলিম মিল্লাত হিসেবে যিন্দেগী যাপনের তাওফীক দান করুন। আমীন!

এক মিনিটের গুরুত্ব

মানুষের দীর্ঘ জীবনে একটি মিনিট অতি সংক্ষিপ্ত সময়। ষাটটি সেকেন্ডই যার ব্যাপ্তিকাল। কিন্তু এই একটি মিনিটই মানুষের জন্য বয়ে আনতে সক্ষম দুনিয়াবী ও পরকালীন জীবনের বহু কল্যাণকর বিষয়। কি কি সম্ভব এক মিনিটে?!

এক মিনিটে সম্ভব-

  1. তিন বার সূরা ফাতিহা পাঠ করা, যার প্রতিটি অক্ষরে ১০টি নেকী অর্জিত হলে এক মিনিটে সম্ভব ৬০০ নেকী হাছিল করা।
  2. ছয় বার সূরা ইখলাছ পাঠ করা, যে সূরাটি পবিত্র কুরআনের এক-তৃতীয়াংশ বলে পরিগণিত। অর্থাৎ এক মিনিটে পবিত্র কুরআন ২ বার তেলাওয়াতের নেকী অর্জন সম্ভব।
  3. দশ বার এই দো‘আটি পাঠ করা সম্ভব-
    لا إله الا الله وحده لاشريك له ، له الملك وله الحمد وهوكل شئ
    قدير যার নেকী ১ জন দাস আযাদ করার সমপরিমাণ (মুত্তাফাক আলাইহ, মিশকাত হা/২৩০২)
  1. سبحان الله وبحمده এই দো‘আটি পঞ্চাশ বার পাঠ করা সম্ভব। যা প্রতিদিন একশতবার পাঠ করলে সমুদ্রের ফেনা সমপরিমাণ গুনাহও আল্লাহ ক্ষমা করে দিতে পারেন (মুত্তাফাক আলাইহ, মিশকাত হা/২২৯৬)
  2. سبحان الله وبحمده سبحان الله العظيم এই দো‘আটি পাঠ করা সম্ভব ২৫ বার। যে দুটি বাক্য পাঠ করা অতি সহজ অথচ মীযানের পাল্লায় ভারত্বপূর্ণ ও আল্লাহর নিকট অতি প্রিয় (মুত্তাফাক আলাইহ, মিশকাত হা/২২৯৮)
  3. سبحان الله ، والحمد لله ، ولا إله إلا الله ، والله أكبر এ দো‘আটি পাঠ করা সম্ভব ১০ বার। যে দো‘আটি আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় এবং সূর্য যা কিছুর উপর উদিত হয় তার মধ্যে সর্বত্তোম (মুসলিম, মিশকাত হা/২২৯৫)
  4. لا حول و لا قوة إلا بالله -এ দো‘আটি পাঠ করা সম্ভব ৪০ বার। যে দো‘আটিকে জান্নাতের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ বলা হয়েছে (ছহীহুল জামে‘ হা/২৬১৪)
  5. لا إله إلا الله -এ দো‘আটি বলা সম্ভব ৬০ বার। যা কালেমায়ে তাওহীদ এবং সর্বোচ্চ মর্যাদাবান কালেমা (তিরমিযী, মিশকাত হা/২৩০৬, সনদ হাসান)
  6. صلى الله عليه وسلم -এ দরূদটি পড়া সম্ভব ৫০ বার। যা একবার পাঠ দশবার পাঠের সমতুল্য (মুসলিম, মিশকাত হা/৯২১)। অর্থাৎ এতে ৫০০ বার পাঠের নেকী অর্জন সম্ভব।
  7. পাঁচ জন মানুষের সাথে সালাম বিনিময় করা সম্ভব। যা বহু নেকী ও মানুষের সাথে ভ্রাতৃত্ব ও পবিত্র সম্পর্ক গঠনের সহায়ক।

এছাড়াও সম্ভব আরো বহু কিছু। মূলতঃ জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে সৎ আমলের মাধ্যমে কাজে লাগিয়ে পার্থিব কল্যাণ অর্জন ও পরকালীন সঞ্চয়কে সমৃদ্ধ করাই একজন মুমিনের সার্বক্ষণিক কর্তব্য। আল্লাহ বলেন, ‘এ বিষয়ে (জান্নাতের নেআমতরাজি) প্রতিযোগীদের প্রতিযোগিতা করা উচিৎ’ (তাত্বফীফ ২৬)

‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে ছুটে চল, যার সীমানা আসমান ও যমীন পরিব্যাপ্ত, যা তৈরী করা হয়েছে তাক্বওয়াশীলদের জন্য’ (আলে ইমরান ১৩৩)। ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন, যখন মানুষ রাতে ঘুমাতে যায়, আমার চোখ বেয়ে তখন অশ্রুধারা নেমে আসে। আমি তখন আওড়াতে থাকি ঐ কবিতার ছত্রগুলো-

একি নয় নষ্ট সে মোর রাত

জ্ঞান সাধনা ছেড়ে ঘুমের ঘোরে

যবে মোর অমত্মর্যামী গুণছে সে রাত

মোর ভবজীবন পঞ্জিকায়\  



বিষয়সমূহ: সংগঠন
আরও