তাওহীদের ডাক : এক অনন্য পত্রিকা

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম 671 বার পঠিত

ভূমিকা :

ইসলামের মূলমন্ত্র হচ্ছে ‘তাওহীদ’ বা আল্লাহর একত্ব, যা কালেমা ত্বইয়্যিবায় স্পষ্টভাবে বিঘোষিত হয়েছে। ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন হক্ব মা‘বুদ নেই। প্রকৃত মুসলিম হতে হলে তাকে তাওহীদ বা আল্লাহর একত্বকে স্বীকার করতে হবে। আর সর্বক্ষেত্রে তাওহীদ বা আল্লাহর একত্বের উপর অটল বিশ্বাস রাখতে হবে। এজন্য তাওহীদই দ্বিত্ববাদ, ত্রিত্ববাদ ও পৌত্তলিকতার মর্মমূলে কুঠারাঘাত করে। তাই তাওহীদ হ’ল মুসলিম জাতির প্রাণশক্তি। আর তাই তাওহীদের প্রতি আত্মসমর্পণ করা প্রত্যেকটি মুসলিমের জন্য অত্যাবশ্যক। সকল মুসলিমকে আত্মসমর্পণ করতে হবে, যেভাবে আল্লাহ পাক আত্মসমর্পনের ভাষা শিখিয়েছেন। মহান আল্লাহ বলেন, قُلْ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ‘আপনি বলুন! আমার ছালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও মরণ সবই জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ জন্য’ (আন‘আম ৬/১৬২)। এই তাওহীদের দিকে আহবান করা প্রত্যেকটি মুসলিমের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য। ‘তাওহীদের ডাক’ পত্রিকাটি এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। যেখানে একজন মুসলিম ব্যক্তির সকল দিক ও বিভাগের সকল সমস্যার সমাধান পবিত্র কুরআন এবং ছহীহ হাদীছের ভিত্তিতে তুলে ধরা হয়। এজন্য পত্রিকাটি সর্ব সাধারণের নিকট একটি গ্রহণযোগ্য পত্রিকা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। ‘তাওহীদের ডাক’ পত্রিকার বিভিন্ন অংশ বা দিকের মূল্যায়নে স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হয় যে, এটি একটি অনন্য পত্রিকা। এর বিভিন্ন বিষয়ের গুণগত মান সত্যিই অনন্য। এ বিষয়ে আলোচনার পূর্বে ‘তাওহীদের ডাক’ পত্রিকার সূচনালগ্নের কিছু স্মৃতি স্মরণ না করে পারছি না।

‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর ১ম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সম্মেলন’৮৫। সিদ্ধান্ত হল ‘তাওহীদের ডাক’ পত্রিকা প্রকাশ করার। যুবসংঘের তখনকার মুহতারাম কেন্দ্রীয় সভাপতির সম্পাদনায় সর্বপ্রথম পত্রিকাটি প্রকাশিত হল। তখন ঐ পত্রিকায় বিভিন্ন বিষয়ের ভেতর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি স্থান পায় তা হল ‘তাওহীদ ও উহার প্রকারভেদ’। তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ব ভালভাবে মানুষকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ২য় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল, কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সম্মেলনে প্রদত্ত কেন্দ্রীয় সভাপতির উদ্বোধনী ভাষণ। তখন কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন বর্তমানে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর আমীর প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব। তাঁর সেদিনের সেই ওজস্বিনী ভাষণ আজও আমার হৃদয়কে নাড়া দেয়, তাওহীদকে অাঁকড়ে ধরে সামনে এগিয়ে চলার জন্য উৎসাহ দেয়। ‘তাওহীদের ডাক’ ‘ঈদ সংখ্যা’ নামে ২য় সংখ্যা বের হয়েছিল। অতঃপর কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবারও প্রকাশ হওয়া শুরু হয়েছে। বর্তমান তা অব্যাহতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। ফালিল্লাহিল হামদ। এবার কিছু গুণগত মান মূল্যায়নের দিক উপস্থাপন করা হল।

আক্বীদা :

পত্রিকাটি মূল্যায়নে সর্বপ্রথম যে জিনিসটি নযর কাড়ে সেটি হল ‘আক্বীদা’ বিষয়ক আলোচনা। মুসলমানের মূল বিষয় হল আক্বীদা বা বিশ্বাস। আক্বীদা যদি দুর্বল হয় তাহলে আমলও দুর্বল হবে। এজন্য আক্বীদা বিষয়ক জ্ঞান স্পষ্ট হতে হবে। আর এর সর্বপ্রথম জ্ঞান হল তাওহীদ সম্বন্ধে জ্ঞান। তাওহীদ কী? তাওহীদ কাকে বলে? তাওহীদ কত প্রকার ও কী কী? আর এর যথার্থ জ্ঞান সরবরাহ করে ‘তাওহীদের ডাক’। সুতরাং এটা যে একটি অনন্য পত্রিকা, এতে কোন সন্দেহ নেই।

তাবলীগ :

মুসলিম জীবনে দাওয়াতী কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য একান্ত গুরুত্বপূর্ণ হল ‘তাবলীগ’। এ বিষয়ে জ্ঞান অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। মহান আল্লাহ বলেন, وَادْعُ إِلَى رَبِّكَ وَلَا تَكُونَنَّ مِنَ الْمُشْرِكِينَ ‘আপনি আপনার রবের দিকে আহবান করুন, আর আপনি অবশ্যই মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না’ (ক্বাছাছ ২৮/৮৭)। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলের পথের পরিচয় দিয়ে বলেন, قُلْ هَذِهِ سَبِيلِي أَدْعُو إِلَى اللَّهِ عَلَى بَصِيرَةٍ أَنَا وَمَنِ اتَّبَعَنِي وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ  ‘আপনি বলুন! এটাই আমার পথ, যে পথে আমি ও আমার অনুসারীগণ জাগ্রত জ্ঞান সহকারে আল্লাহর দিকে আহবান করি, আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই’ (ইউসুফ  ১২/১০৮)। মহান আল্লাহ আরো বলেন, يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ وَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ وَاللَّهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ ‘হে রাসূল! আপনি তাবলীগ করুন, যা আপনার রবের পক্ষ হতে আপনার প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে। যদি পৌঁছে না দেন, তাহলে আপনি রিসালাতের দায়িত্ব পালন করলেন না। আর আল্লাহ আপনাকে মানুষের (দুষ্কৃতি) থেকে রক্ষা করবেন’ (মায়েদা ৫/৬৭)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বিদায় হজ্জের ভাষণে সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, لِيُبَلِّغِ الشَّاهِدُ الْغَائِبَ فَإِنَّ الشَّاهِدَ عَسَى أَنْ يُبَلِّغَ مَنْ هُوَ أَوْعَى لَهُ مِنْهُ  ‘উপস্থিত ব্যক্তি যেন অনুপস্থিত ব্যক্তির কাছে দাওয়াত পৌঁছে দেয়। হতে পারে উপস্থিত ব্যক্তির চেয়ে অনুপস্থিত ব্যক্তি অধিক জ্ঞানী’ (বুখারী হা/৬৭)। তিনি আরো বলেন, بَلِّغُوا عَنِّى وَلَوْ آيَةً ‘একটি আয়াত জানা থাকলেও তা আমার পক্ষ হতে তোমরা পৌঁছে দাও’ (বুখারী হা/৩৪৬১; মিশকাত হা/১৯৮)। তাবলীগের এ বিধান সার্বজনীন। সকল নবী-রাসূলের এ দায়িত্ব ছিল। আর ‘তাবলীগ’ এ পত্রিকায় সংযোজিত হওয়ায় এটি একটি অনন্য ও অসাধারণ পত্রিকা বৈকি!

তানযীম :

‘তানযীম’ বা সংগঠন ছাড়া অহি-র বিধান প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। প্রকৃতপক্ষে মুমিনের যিন্দেগী হবে জামা‘আতবদ্ধ যিন্দেগী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا ‘তোমরা জোটবদ্ধভাবে শক্ত করে আল্লাহর রজ্জুকে ধারণ কর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না’ (আলে ইমরান ৩/১০৩)। মহান আল্লাহ আরো বলেন, إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِهِ صَفًّا كَأَنَّهُمْ بُنْيَانٌ مَرْصُوصٌ ‘যারা সীসা ঢালা প্রাচীরের মত সারিবদ্ধ হয়ে আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন’ (ছফফ ৬১/৪)। হাদীছে এসেছে,

عَنْ ابْنِ عَبَّاس رضى الله عنهما عَنِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ رَأَى مِنْ أَمِيرِهِ شَيْئًا يَكْرَهُهُ فَلْيَصْبِرْ عَلَيْهِ فَإِنَّهُ مَنْ فَارَقَ الْجَمَاعَةَ شِبْرًا فَمَاتَ إِلاَّ مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً.

ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, কেউ আমীরের মাঝে অপসন্দনীয় কিছু লক্ষ্য করলে, সে যেন ধৈর্যধারণ করে। কেননা যে লোক জামা‘আত (সংগঠন) থেকে এক বিঘত পরিমাণও আলাদা হয়ে যায়, সে জাহেলী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে (বুখারী হা/৭০৫৪; মুসলিম হা/৪৮৯৬)। সুতরাং অত্র পত্রিকায় এ বিষয়ের আলোচনা থাকায় পত্রিকাটির গুণগতমান ও প্রয়োজনীয়তা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার কারণে মুসলমানরা পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের একনিষ্ঠ আন্দোলানের অনুসারী হতে সক্ষম হবে।

তারবিয়াত :

‘তারবিয়াত’ বা প্রশিক্ষণ ছাড়া মানুষ কোন জিনিস সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে না। কোন বিয়য়ে বিশেষ পারদর্শিতা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণের বিকল্প কিছুই নেই। সুতরাং সার্বিক জীবনে আল্লাহর বিধান বাস্তবায়ন করার জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা অপরিহার্য। ছালাত, ছিয়াম, হজ্জ, যাকাত তথা সমস্ত ইবাদতের ক্ষেত্রে কুরআন ও ছহীহ হাদীছ সঠিকভাবে জানা এবং তা হুবহু বাস্তবায়ন করার প্রশিক্ষণ যরূরী। শুধু জানলে বা বুঝলে চলবে না, বরং সেটা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। আবার জানলাম, বুঝলাম এবং অপরের মাঝে পৌঁছালাম, কিন্তু নিজে আমল করলাম না এটাও বড় অপরাধ। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لِمَ تَقُولُونَ مَا لَا تَفْعَلُونَ- كَبُرَ مَقْتًا عِنْدَ اللَّهِ أَنْ تَقُولُوا مَا لَا تَفْعَلُونَ  ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা এমন কথা কেন বল, যা তোমরা নিজেরাই কর না। তোমরা যা কর না, তা বলা আল্লাহর নিকট অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ’ (ছফফ ৬১/২-৩)। ইহুদীরা ভাল কাজের আদেশ করত, অথচ নিজেরাই তা করত না। আল্লাহ পাক তাদের ধমক দিয়ে বলেছেন, أَتَأْمُرُونَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَتَنْسَوْنَ أَنْفُسَكُمْ وَأَنْتُمْ تَتْلُونَ الْكِتَابَ أَفَلَا تَعْقِلُونَ ‘তোমরা কি মানুষকে সৎ কাজের আদেশ কর, অথচ তোমরা নিজেরাই তা করতে ভুলে যাও? আর তোমরা কিতাব পাঠ করছ, তারপরও কি তোমরা উপলব্ধি করবে না’? (বাক্বারাহ ২/৪৪)। সুতরাং ভালভাবে তারবিয়াত গ্রহণ করে সেটা নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করতে হবে। ‘তাওহীদের ডাক’ পত্রিকা এ ব্যাপারে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

তাজদীদে মিল্লাত :

‘তাজদীদে মিল্লাত’ বা সমাজ সংস্কার খুবই গুরত্বপূর্ণ বিষয়। একটি সমাজকে পরিশুদ্ধ করতে এর বিকল্প নেই। সমাজকে পরিশুদ্ধ করতে হলে কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী করতে হবে। অন্য কোন তন্ত্র-মন্ত্রের মাধ্যমে তা সম্ভব নয়। এজন্য প্রকৃত হক্বকে প্রচার এবং প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আর এ হক্ব পাওয়া যাবে আল্লাহ প্রদত্ত অহি-র বিধানে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَقُلِ الْحَقُّ مِنْ رَبِّكُمْ فَمَنْ شَاءَ فَلْيُؤْمِنْ وَمَنْ شَاءَ فَلْيَكْفُرْ إِنَّا أَعْتَدْنَا لِلظَّالِمِينَ نَارًا أَحَاطَ بِهِمْ سُرَادِقُهَا ‘(হে রাসূল) আপনি বলুন! হক্ব আসে আপনার প্রভুর পক্ষ হতে। যার ইচ্ছে ঈমান আনবে আর যার ইচ্ছে কুফরী করবে, নিশ্চয়ই আমি যালিমদের জন্য জাহানণাম তৈরী করে রেখেছি’ (কাহফ ১৮/২৯)। যারা সমাজ সংস্কার করতে চান তারা হক্বের মাধ্যমে সমাজকে পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন করবেন। মানুষকে প্রকৃত হক্বের অনুসারী করার জন্য বোঝাবেন। চেষ্টা করবেন এবং সার্বিক প্রচেষ্টা নিয়োজিত করবেন। প্রকৃত মুমিন সেভাবেই নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন। ‘তাওহীদের ডাক’ পত্রিকা বিভিন্ন সমাজ সংস্কারমূলক নিবন্ধ প্রকাশের মাধ্যমে এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এটা নির্দ্বিধায় বলা যায়, এটি একটি যুগোপযোগী ও উন্নত মানের পত্রিকা। এজন্য ‘তাওহীদের ডাক’ পত্রিকার গুণগত মান অত্যন্ত উচুঁ।

‘তাওহীদের ডাক’ পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের ধারক ও বাহকই শুধু নয়, এতে উল্লিখিত বিষয়গুলো ছাড়াও স্থান পেয়েছে মুসলিম ইতিহাস-ঐতিহ্য, আহলেহাদীছ আন্দোলন, মনীষী চরিত, সাময়িক প্রসঙ্গ, কবিতা, মতামত, শিক্ষণীয় গল্প ও সাক্ষাৎকার প্রভৃতি। বিভিন্ন দেশের মুসলিমের অবস্থা সম্পর্কেও আমরা অনেক তথ্য অবগত হতে পারি। সমস্ত বিষয়াবলীর ভেতর একটি বিষয় সুস্পষ্ট হিসাবে প্রতিভাত হয়েছে যে, পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক আলোচনা। কোনরকম কল্প-কাহিনী অথবা অলিক আলোচনার কোন স্থান নেই। সবচাইতে বড় বিষয় হল, ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বিভিন্ন ধর্মের অনুসরারী ব্যক্তি কিভাবে ইসলাম গ্রহণ করেছেন তারও ইতিহাস জানা যায়। প্রকৃতপক্ষে কুরআন ও ছহীহ হাদীছ কিভাবে মানুষকে সঠিক মানুষে রূপান্তরিত করে সেটা সত্যিই এক বিস্ময়কর ব্যাপার। সবকিছু বিবেচনায় ‘তাওহীদের ডাক’ পত্রিকা বর্তমান একবিংশ শতাব্দীর প্রকৃত সত্য প্রতিষ্ঠার এক মূর্তিমান অগ্নিস্ফুরণ। যার রশ্মিতে বাতিলের বৃথা আস্ফালন বাষ্পাকারে উড়ে যাবে এবং প্রকৃত সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। সত্য সমাগত হলে মিথ্যা দূরীভূত হয়। আর মিথ্যা দূরীভূত হওয়ারই বস্ত্ত।

পরিশেষে বলব, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর মুখপত্র ‘তাওহীদের ডাক’ পত্রিকা নির্ভীক সত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। যার বিচ্ছুরিত রশ্মি ভূবনকে আলোকিত করে চলেছে। যার শ্লোগান হ’ল, ‘সকল বিধান বাতিল কর, অহি-র বিধান কায়েম কর’। এখানে কোন পীর, পুরোহিত, অলী, দরবেশ, গাঊছ, কুতুব অথবা অতি মানবীয় ব্যক্তিত্ব বলে কোন কথা নেই। শুধু অগ্রাধিকার পাবে পবিত্র কুরআন এবং ছহীহ হাদীছ, যা বিদায় হজ্জের ভাষণে মহানবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) স্পষ্টভাবে ঘোষণা করে গেছেন। তিনি বলেন,تَرَكْتُ فِيكُمْ أَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوا مَا تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا كِتَابَ اللَّهِ وَسُنَّةَ رَسُوْلِهِ. ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, আমি তোমাদের মাঝে দু’টি বস্ত্ত রেখে গেলাম। যতদিন তোমরা এ দু’টি বস্ত্ত অাঁকড়ে ধরে থাকবে, ততদিন তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। একটি আল্লাহর কিতাব (আল-কুরআন) এবং অপরটি তাঁর রাসূলের সুন্নাত (হাদীছ) (মুওয়াত্ত্বা মালেক হা/৩৩৩৮; মিশকাত হা/১৮৬; সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৭৬১। এজন্য আমরা বলি, আসুন! পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে জীবন গড়ি। ‘তাওহীদের ডাক’ পত্রিকা এ ব্যাপারে যথাযথ ভূমিকা পালন করে চলেছে। তাই দ্ব্যর্থহীনভাবে এ কথা বলতে পারি যে, একবিংশ শতাব্দীর এ ঘূনেধরা পৃথিবীতে ‘তাওহীদের ডাক’ এক অনন্য পত্রিকা। এ পত্রিকার মাধ্যমে মানুষ সঠিক পথের সন্ধান লাভ করুক আল্লাহর নিকট আমাদের এটাই একমাত্র প্রার্থনা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সিরাতুল মুস্তক্বীমে পরিচালিত করুন। আমীন!!

অধ্যাপক মুহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম

কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ



বিষয়সমূহ: বিবিধ
আরও