আরাফার দিনে ছিয়াম পালন করা

আসাদুল্লাহ আল-গালিব 231 বার পঠিত

যেমনটি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَا يُصِيبُ الْمُسْلِمَ مِنْ نَصَبٍ، وَلَا وَصَبٍ، وَلَا هَمٍّ، وَلَا حُزْنٍ، وَلَا أَذًى، وَلَا غَمٍّ، حَتَّى الشَّوْكَةُ يُشَاكُهَا، إِلَّا كَفَّرَ اللَّهُ بِهَا خَطَايَاهُ- ‘মুসলিম ব্যক্তির উপর যে সকল যাতনা, রোগ ব্যাধি, উদ্রেক-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানী আপতিত হয়, এমন কি তার দেহে যদি কাটাও বিদ্ধ হয়, এ সবের দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন’।[1]

অন্য হাদীছে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,مَا مِنْ مُسْلِمٍ يُشَاكُ شَوْكَةً، فَمَا فَوْقَهَا إِلَّا كُتِبَتْ لَهُ بِهَا دَرَجَةٌ، وَمُحِيَتْ عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةٌ- ‘যদি কোন মুসলিমের গায়ে কাটা বিদ্ধ হয় কিংবা তার চাইতে অধিক (কোন আঘাত লাগে), তার পরিবর্তে তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং তার একটি গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়’।[2]

অপর হাদীছে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَا مِنْ مُسْلِمٍ يُصِيبُهُ أَذًى مِنْ مَرَضٍ، فَمَا سِوَاهُ إِلَّا حَطَّ اللهُ بِهِ سَيِّئَاتِهِ، كَمَا تَحُطُّ الشَّجَرَةُ وَرَقَهَا- ‘কোন মুসলিম ব্যক্তির জ্বর কিংবা অন্য কোন কারণে বিপদ আপতিত হলে তার বিনিময়ে আল্লাহ তা‘আলা এমনভাবে তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেন যেভাবে গাছ তার পাতা ঝরায়’।[3]

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আরও বলেছেন,مَا يَزَالُ البَلاَءُ بِالمُؤْمِنِ وَالمُؤْمِنَةِ فِي نَفْسِهِ وَوَلَدِهِ وَمَالِهِ حَتَّى يَلْقَى اللَّهَ وَمَا عَلَيْهِ خَطِيئَةٌ- ‘মুমিন নারী-পুরুষের উপর, তার সন্তানের উপর ও তার ধন-সম্পদের উপর অনবরত বিপদাপদ লেগেই থাকে। সবশেষে আল্লাহ তা‘আলার সাথে সে গুনাহমুক্ত অবস্থায় মিলিত হয়’।[4]

১৫. মাইয়েতকে গোসল দেওয়া : মৃত্যু এক অনিবার্য সত্য। যার স্বাদ সকলকেই আস্বাদন করতে হবে। একজন মাইয়েতকে দাফন-কাফনের পূর্বে গোসল দিতে হয়। এই সময়ে বেশ কিছু গোপনীয় বিষয় থাকে। সুতরাং কোন ব্যক্তি যদি এই গোপনীয় বিষয় গোপন রাখতে পারে তাহ’লে তার জন্য আল্লাহ ক্ষমার দুয়ার উন্মুক্ত করে দিবেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, مَنْ غَسَّلَ مَيِّتًا فَكَتَمَ عَلَيْهِ غَفَرَ اللَّهُ لَهُ أَرْبَعِينَ مَرَّةً ‘যে ব্যক্তি মৃতকে গোসল দেবে এবং তার দোষ গোপন রাখবে, আল্লাহ তাকে চল্লিশবার ক্ষমা করবেন’।[5]

১৬. ছাদাক্বা প্রদান করা : একজন মুমিন ব্যক্তির গুনাহ মাফ করে নেওয়ার অন্যতম মাধ্যম হ’ল দান-ছাদাক্বা করা। এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, الصَّدَقَةُ تُطْفِئُ الْخَطِيئَةَ، كَمَا يُطْفِئُ الْمَاءُ النَّارَ ‘পানি যেমন আগুন নিভিয়ে দেয়, তেমনি দান-ছাদাক্বাও গুনাহসমূহ দূরীভূত করে দেয়’।[6]

অপর হাদীছে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, কোন লোকের পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্তুতি ও প্রতিবেশীর ক্ষেত্রে যে বিপদ অর্থাৎ ক্রটি-বিচ্যূতি হয়- এগুলোর জন্য ছালাত, ছিয়াম, দান-ছাদাক্বা, সৎকাজের প্রতি আদেশ ও মন্দ কাজে বাধা দেয়া হচ্ছে কাফফারা স্বরূপ’।[7]

১৭. আরাফার দিনে ছিয়াম পালন করা : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ، أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ، وَالسَّنَةَ الَّتِي بَعْدَهُ ‘আর আরাফাত দিবসের ছিয়াম সম্পর্কে আমি আল্লাহ্র কাছে আশাবাদী যে, তা পূর্ববর্তী বছর ও পরবর্তী বছরের গুনাহের ক্ষতিপূরণ হয়ে যাবে’।[8]

১৮. আশুরার ছিয়াম পালন করা : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,وَصِيَامُ يَوْمِ عَاشُورَاءَ، أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ ‘আশুরার ছিয়াম সম্পর্কে আমি আল্লাহ্র কাছে আশাবাদী যে, তাতে পূর্ববর্তী বছরের গুনাহসমূহের কাফ্ফারা হয়ে যাবে’।[9]

১৯. ইসলাম গ্রহণ করা : ইসলাম হ’ল শান্তির ধর্ম। এই শান্তির ধর্মে কোন ব্যক্তি যদি ফিরে আসে তাহলে তার পূর্বে কৃত গুনাহসমূহ আল্লাহ্ ক্ষমা করে দিবেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, أَنَّ الْإِسْلَامَ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ ‘ইসলাম গ্রহণ পূর্বেকার সকল গুনাহ বিনাশ করে দেয়’।[10]

২০. হিজরত করা : মুসলিম জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতি হ’ল হিজরত। যখনই ইসলাম পালনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে,

 

[1]. বুখারী হা/৫৬৪১; মুসলিম হা/২৫৭৩; মিশকাত হা/১৫৩৭।

[2]. মুসলিম হা/২৫৭২; হিববান হা/২৯০৬; আহমাদ হা/২৫৪৪২।

[3]. বুখারী হা/৫৬৪৮; মুসলিম হা/২৫৭১; মিশকাত হা/১৫৩৮।

[4]. তিরমিযী হা/২৩৯৯; ছহীহাহ হা/২২৮০।

[5]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৬৬৫৫; ছহীহুত তারগীব হা/৩৪৯২।

[6]. তিরমিযী হা/৬১৪; ছহীহুল জামে‘ হা/৫২৬২; মিশকাত হা/২৯।

[7]. বুখারী হা/৫২৫; মুসলিম হা/১৪৪; মিশকাত হা/৫৪৩৫।

[8]. মুসলিম হা/১১৬২; মিশকাত হা/২০৪৪।

[9]. প্রাগুক্ত।

[10]. মুসলিম হা/১২১; ছহীহুত তারগীব হা/১০৯৭; মিশকাত হা/২৮।



আরও