সাম্প্রতিক মুসলিম বিশ্ব
তাওহীদের ডাক ডেস্ক
জেরুজালেমে ইহুদী বসতি নির্মাণ কার্যক্রম শুরু
গত ৯ মার্চ ইসরাঈলী পার্লামেন্ট বিতর্কিত পূর্ব জেরুজালেম ও অধিকৃত পশ্চিম তীর এলাকায় নতুন করে ১৬০০ ইহুদী বসতি নির্মাণ পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। ১৫ বছর পূর্বে ইসরাঈলী সরকারের ‘রামাত শ্লোমো’ বসতি স্থাপন পরিকল্পনার ধারাবাহিকতায় এই অনুমোদনটি সম্পন্ন হল। উল্লেখ্য যে, ১৯৬৭ সালের ৬ দিনের যুদ্ধে ইসরাঈল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে। আমত্মর্জাতিক সম্প্রদায় এটার স্বীকৃতি দেয়নি এবং আলোচনার মাধ্যমে এ নগরীর মর্যাদা বজায় রাখার আহবান জানায়। কিন্তু ইসরাঈল সকল আপত্তি ও নিন্দা উপেক্ষা করে এ পর্যমত্ম দখল বজায় রেখেছে এবং তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সমগ্র জেরুজালেমকে রাজধানী করে ইসরাঈলী রাষ্ট্র গঠন করতে চাচ্ছে। জেরুজালেমের মেয়র নীল বারাকাত স্কাই নিউজকে বলেন, ১৬০০ বসতি নির্মাণ মূলতঃ ইহুদী-আরব সম্মিলিত ৫০,০০০ বসতি নির্মাণ পরিকল্পনার প্রথম ধাপ। আমত্মর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও আমরা নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখব। কেননা জেরুজালেম সার্বভৌম ইসরাঈলের অংশ। জেরুজালেম ইসরাঈলের একক একটি শহর, একে পূর্ব ও পশ্চিম বিভক্তিকরণ আমি সমর্থন করি না। আমাদের পরিকল্পনায় এই শহরে ইহুদী অধিবাসীদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে দুই-তৃতীয়াংশ এবং আরব প্রতিনিধিত্ব থাকবে এক-তৃতীয়াংশ’। এদিকে এ পরিকল্পনা ইসরাঈল-ফিলিসত্মীন পরোক্ষ শামিত্ম আলোচনা পিছিয়ে দিবে- যুক্তরাষ্ট্রের এমন আপত্তির জবাবে ইসরাঈলী প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তাদের অবস্থানকে অটল রাখার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘জেরুজালেম নিয়ে আমাদের নীতি গত ৪২ বছরের সব ইসরাঈলী সরকারের মতোই। এর পরিবর্তন হয়নি। আমার জানা মতে, জেরুজালেমে বসতি নির্মাণ তেলআবিবে বসতি নির্মাণের মতোই। এটাকে বিতর্কের বিষয় হিসাবে না অবতরণা করাকেই আমি বেশী গুরুত্ব দেয়া দরকার মনে করি’।
আল-কুদসে ইহুদী সিনাগগ নির্মাণ
আল-কুদস এরিয়ার অভ্যমত্মরে আল-আকছা মসজিদ ও বোরাক প্রাচীর থেকে মাত্র ৩০০ মিটার পশ্চিমে ১৫ মিলিয়ন ইউরো ব্যয়ে গত ১৫ মার্চ কল্পিত ঐতিহাসিক ভিত্তির উপর ‘কানিসাতুল খারাব’ নামে নতুন একটি ইহুদী সিনাগগের উদ্বোধন করা হয়েছে। সহস্রাধিক দখলদার ইসরাঈলী সৈন্যের উপস্থিতিতে দেশের প্রধান রাববী রোফেন রিফলিন, কয়েকজন মন্ত্রী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণসহ শতাধিক ইসরাঈলী প্রতিনিধি এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এ উপলক্ষ্যে আল-কুদস এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। স্থানীয় সামান্য কয়েকজন স্থানীয় অধিবাসী ব্যতীত কাউকে সেখানে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। ফলে পুরাতন আল-কুদস এলাকা ও প্রাচীন বাজারটি প্রায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। অপরদিকে নবনির্মিত ইহুদী পল্লীটি জনসমাগমে সরগরম হয়ে উঠছে। এদিকে এর প্রতিবাদে হামাস পরদিন ১৬ মার্চ বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে। একে কেন্দ্র করে ইসরাঈলী সৈন্যদের সাথে সংঘর্ষে ওয়াসেদ আল-কুদ্দূস ও মুহাম্মাদ ইবরাহীম নামে দুই তরুণ নিহত হয়। আহত হয়েছে ১০ জনের মত। গ্রেফতার হয়েছে শতাধিক। ফাতাহ মুখপাত্র আব্দুল কাদের এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘এই সিনাগগ নির্মাণ সাধারণ কোন ঘটনা নয়, এটা হারাম শরীফে ইহুদীরা কল্পিত হায়কালে সুলায়মান নির্মাণের যে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে তার আনুষ্ঠানিক ধাপ।’ অবিলম্বে এটি চরমপন্থী ইহুদীদের আসত্মানায় পরিণত হবে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন। হামাস আল আকছার অবস্থান রক্ষার্থে সমগ্র ফিলিসত্মীনী, আরব ও ইসলামী রাষ্ট্রগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছে। তারা বলেন, মসজিদে আকছার প্রাচীরের পাশেই এই সিনাগগ নির্মাণের মাধ্যমে ইহুদীরা তাদের কল্পিত তৃতীয় হায়কালের হাজরে আসওয়াদ স্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
ইকুয়েডরে ইসলামের প্রসার
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরে ইসলামের আগমন ঘটে ওছমানীয় খেলাফতের পতনের পর আরব বংশোদ্ভূত লেবাননী, ফিলিসত্মীনী, মিশরী ও সিরীয় মুসলমানদের মাধ্যমে। তবে স্থানীয় অধিবাসীদের ইসলাম গ্রহণ করা শুরু হয় মূলতঃ গত শতাব্দীর নববইয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকে। ১৯৯৪ সালে কুইটো শহরে এ দেশে সরকারীভাবে স্বীকৃত প্রথম ইসলামিক সেন্টারটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এর বর্তমান পরিচালক নওমুসলিম সাবেক সেনা কর্মকর্তা জোয়ান ইয়াহইয়া সুকুইল্ল্যো। মদীনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনকারী এই ব্যক্তি সর্বপ্রথম প্রকাশ্য ইসলাম গ্রহণকারী ইকুয়েডরিয়ান হিসাবে স্বীকৃত। তার পরিবারই ১৯৯৯ সালে প্রথম ইকুয়েডরিয়ান পরিবার হিসাবে হজ্জ্বব্রত পালন করে। শিক্ষা ও সামাজিক, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে দেশের কয়েক হাযার মুসলিম অধিবাসীদের এগিয়ে নেওয়ার জন্য তাঁর পরিচালিত এ সেন্টারটি নানা কর্মসূচী গ্রহণ করছে। স্প্যানিশ ভাষায় পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছভিত্তিক বিশুদ্ধ ইসলামী বই-পত্র অনুবাদ করে স্থানীয় জনগণের মাঝে বিতরণ করছে। ২০০৪ সালে ইকুয়েডরের বৃহত্তম শহর ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র গাইকুইলে দ্বিতীয় ইসলামিক সেন্টারটি স্থাপিত হয়েছে। যার পরিচালক হিসাবে আছেন জোয়ান আব্দুল্লাহ সঊদ নামের আরেকজন নওমুসলিম।
সুইজারল্যান্ডের কট্টর ইসলামবিরোধী নেতার ইসলামগ্রহণ!
সুইজারল্যন্ডের সুইস পিপলস পার্টির সদস্য জনাব Daniel Streich অতিসম্প্রতি ইসলাম গ্রহণ করেছেন। ইতিপূর্বে তিনি সুইজারল্যান্ডে মসজিদ ও মিনার নির্মাণের চরম বিরোধিতা করে আসছিলেন। বর্তমানে মুসলমান হবার পর সুইজারল্যন্ডে একটি নুতন মসজিদ নির্মাণ করে তিনি তার অতীত পাপ থেকে মুক্তি পেতে চান। ইসলামের বিরোধিতার উদ্দেশ্যে পড়াশুনা করতে গিয়েই তিনি ইসলামের আলোকে আলোকিত হন। তিনি বলেন, ‘ইসলাম আমাকে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নসমূহের যুক্তিগ্রাহ্য উত্তর দিয়েছে, যা আমি এতদিন খৃষ্টান ধর্মে থেকে পাইনি’। বিষয়টি সুইজারল্যন্ড সহ সারা ইউরোপে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।