মাওলানা মুহাম্মাদ বদীউযযামান

মুহাম্মাদ রুকনুযযামান 433 বার পঠিত

[বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে আহলেহাদীছ আন্দোলনের প্রচার ও প্রসারে অবদান রেখেছেন এমন আলেম, শিক্ষক, লেখক বা সংগঠক রয়েছেন অসংখ্য। তাদের মধ্যে বেশ কিছু সংখ্যকের নাম হয়তো ইতিহাসের পাতায় স্থান পেয়েছে, কিন্তু এমন অসংখ্য ব্যক্তিত্ব রয়েছেন যাদের নাম কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে কিংবা বিস্মৃতির পথে রয়েছে, অথচ তাদের ত্যাগ-তিতীক্ষা ও সংগ্রামের ইতিহাস পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একেকটি প্রদীপ্ত মশাল। এসকল ব্যক্তিত্বের স্মৃতি জাগরুক রাখতে ‘স্মরণীয় আহলেহাদীছ ব্যক্তিত্ব’ শিরোনামে ‘তাওহীদের ডাক’-এ নতুন একটি কলাম চালু করা হ’ল। বর্তমান সংখ্যায় আমরা এমনই একজন জ্ঞানতাপস মনীষীর জীবনী উল্লেখ করব, যিনি বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আহলেহাদীছ বিদ্যাপীঠ আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়ার সম্মানিত মুহাদ্দিছ হিসাবে দীর্ঘদিন খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন এবং অসংখ্য আলেমের উস্তায হিসাবে ‘উস্তাযুল আসাতিযাহ’ হিসাবে খ্যাতি লাভ করেছেন। তিনি হ’লেন মাওলানা মুহাম্মাদ বদীউযযা্মান (১৯৩৯-২০১২খ্রী.)। নিম্নে তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত আলোচনা করা হল- নির্বাহী সম্পাদক]

নাম ও বংশ পরিচয় : তাঁর নাম মুহাম্মাদ বদীউয্যামান। পিতার নাম আলহাজ্ব জারজীস মন্ডল। মাতার নাম দিল রওশন এবং দাদা আলহাজ্ব মৌলভী মুহাম্মাদ আইনুদ্দীন।

জন্ম : মাওলানা বদীউযযামান বাংলা ১৩৪৭ সাল মোতাবেক ১৯৩৯ খ্রীষ্টাব্দে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেলা সদরের আলাতুলী ইউনিয়নের রাণীনগর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

শিক্ষাজীবন : স্থানীয় মক্তবে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। পাশাপাশি স্থানীয় আলেম মাওলানা আব্দুর রউফের নিকট তিনি শিক্ষাগ্রহণ করেছেন বলে জানা যায়। বিশেষ করে তাঁর দাদা মৌলভী মুহাম্মাদ আইনুদ্দীন মন্ডল খুব দ্বীনদার ও পরহেযগার আলেম ছিলেন। তিনি আলেম-ওলামাদের খুব কদর করতেন। তিনি দাদার বাড়িতে দুধেভাতেই বেড়ে উঠেন। প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করার পর উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য তিনি ভারতের দিলালপুরে পড়ালেখায় উদ্দেশ্যে গমন করেন। অতঃপর দেশে ফিরে ময়মনসিংহের ‘বালিয়া মাদরাসা’ থেকে দাওরায়ে হাদীছ সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি তিনি আলিয়া নেছাবের ফাযিল পর্যন্ত ডিগ্রী লাভ করেন। তার  শিক্ষাজীবন ছিল খুব সংগ্রামের। কেননা তিনি পড়াশোনা শেষ করার আগেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন। তিনি প্রায়শঃ জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে নিজের জীবনের বাঁকে বাঁকে হাড়ভাঙ্গা খাটুনির কথা ছাত্রদের শুনাতেন।

পেশাজীবন : ১৯৭০ সালের দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বার রশিয়া মাদরাসায় তাঁর শিক্ষকতা জীবন শুরু হয়। এরপর তিনি উজানপাড়া (গোদাগাড়ী, রাজশাহী), দারুলহাদীছ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ), আলাদীপুর মাদ্রাসা (নঁওগা) ও গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ প্রভৃতি মাদ্রাসায় জীবনের ২২টি বছর অতিবাহিত করেন। সর্বশেষ ১৯৯২ সাল থেকে মৃত্যু অবধি আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মাদ্রাসায় ‘আল মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী’ নওদাপাড়া, রাজশাহীতে মুহাদ্দিছ হিসাবে দীর্ঘ ২০ বছরে সোনালী সময় অতিবাহিত করেন। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর পরিচালনাধীন ‘দারুল ইফতা, হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’-এ ১৯৯৮ সাল থেকে মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। গবেষণা পত্রিকা মাসিক আত-তাহরীকে-এ নিয়মিত ফৎওয়া লিখতে গিয়ে তিনি স্বীয় ছাত্রদেরকে নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করতেন। যে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে তিনি এ খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন তা অতুলনীয়। উর্দূ ভাষায় ইলম চর্চার কারণে বাংলা ভাষায় ফাতাওয়া লিখতে গিয়ে কলম সৈনিক হিসাবে তার প্রিয় ছাত্রদের সহযোগিতা নিতেন, যাতে করে ফৎওয়া যথেষ্ট মানসম্পন্ন হয়। এ বিষয়ে ছাত্রদের সাহায্য নিতে তাঁর সামান্যতম দ্বিধা বা অহংবোধ কাজ করত না। এমন দিলদরদী শিক্ষক পাওয়া সত্যিই দুর্লভ।

গুণাবলী : মাওলানা বদীউযযা্মান একজন বা-আমল আদর্শ শিক্ষক ছিলেন। পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতের পাবন্দী, ক্লাসে সকল শিক্ষকের আগে উপস্থিতি, ক্লাসের পূর্বে ভালোভাবে মুতা‘আলাহ দেখা, ছাত্রদের ভালভাবে জ্ঞানদানের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো তাঁর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। শীত, বর্ষা, গরম- যে কোন ঋতুতেই মারকায মসজিদে ইমামের পেছনে যদি কোন মুছল্লীকে দেখা যেত তিনি হতেন মাওলানা বদীউয্যামান। নাহু, ছরফ এবং তাফসীরে জালালাইনসহ বড় ক্লাসের বইগুলো তিনি খুব যত্ন সহকারে পড়াতেন।  কোন ছাত্রের আরবী ব্যাকরণের উচ্চস্তরের কিতাব যেমন কাফিয়া, ফুছূলে আকবরী পড়া না থাকলে তাকে এ কিতাবগুলো তার নিকট শিখে নেওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করতেন অথবা কোন গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ যার ক্লাস অন্য কোন শিক্ষক নিতেন, সেগুলো তাঁর কাছে আরো ভাল করে পড়ে নেওয়ার আহবান জানাতেন। ক্লাসের বাইরে পড়িয়ে তিনি কারো কাছে কোনদিন পারিশ্রমিক নিয়েছেন বলে আমাদের জানা নেই। সদ্যপ্রসূত সন্তানের দুগ্ধদানকারী মায়ের মত জাতির বৃহত্তর খেদমতে ছাত্রকে ভাল আলেম বানাতে হবে- এ চিন্তা সারাক্ষণ তাকে তাড়া করত। ছাত্রকে পড়াশোনায় অভ্যস্ত করানোর জন্য ঘরে, বাইরে, ক্লাসে যেখানেই পেতেন, পুরোমাত্রায় পড়াশোনার খোঁজ-খবর নিতেন। ছাত্ররা নতুন বিষয়ে কোন কিছু জানতে চাইলে তিনি বই-পুস্তক ঘেটে প্রমাণপঞ্জী সহকারে আদরের সাথে তা তাদের জানিয়ে দিতেন। এক্ষেত্রে কোনদিন তিনি ন্যূনতম বিরক্তি বোধ করেননি। ছাত্র পাগল উস্তাদজী অনেক সময় মেধাবী ছাত্রদেরকে ভালবেসে প্রশ্নপত্রে উল্লেখিত একশ নম্বরের চেয়ে বেশী নম্বর দিয়ে দিতেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করলে রসিকতা করে বলতেন, সে আসলেই বেশী নম্বর পাওয়ার যোগ্য। পূর্ণ মুতা‘আলাহ করে তবেই তিনি ক্লাসে যেতেন। ইলমী সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কোন বই মুতা‘আলাহ না করে তিনি এক কদমও সামনে বাড়তেন না। কোন বিষয়ে ছাত্ররা পড়তে মজা পেয়ে নাছোড়বান্দা হ’য়ে আরো পড়তে চাইলে সহৃদয়বান উস্তাদজী মুতা‘আলাহ ছাড়া পড়ানোকে শিক্ষকদের সবচেয়ে বড় ইলমী খিয়ানত বলে উল্লেখ করতেন। বিষয় সংশ্লিষ্ট পুরনো উস্তাদদের জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা ও পরহেযগারিতার মজাদার গল্প তিনি ছাত্রদের শুনাতেন, যা শারঈ পান্ডিত্য অর্জনে ছাত্রদের অনুপ্রাণিত করত। তেমনই একটি গল্প এখানে উপস্থাপন করা হ’ল। যেমন- তিনি ভারতবর্ষের একজন বিখ্যাত আহলেহাদীছ বিদ্বান মাওলানা ওহীদুযযা্মানের অনুবাদকৃত মুসলিম শরীফ থেকে একটি গল্প বর্ণনা করেছিলেন। 

আফগানিস্তানে একটি মাদ্রাসার একজন ছাত্র উস্তাদের কাছে ইবতেদায়ী থেকে দাওরা পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিল। দাওরা ফারেগ হওয়ার শেষ ক্লাসে ছাত্র ভাবল, উস্তাদজী আমাকে এত বড় আলেম বানালেন, তাহ’লে তাকে পুরস্কার কি দেওয়া যায়? ভাবতে ভাবতে সে উস্তাদকে সরাসরি ‘জান্নাত’ পুরস্কার দেওয়ার মনস্থ করল। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। সে হঠাৎ করে আগে থেকেই পকেটে রাখা চাকুটি বের করে উস্তাদের গলায় ধরল। উস্তাদ তো তার কর্মকান্ডে হতবাক। সে বলল, উস্তাদজী, আপনি তো আমাকে অনেক বিদ্যাবুদ্ধি শিক্ষা দিয়েছেন, তাই আপনাকে আমি একবারে আল্লাহর জান্নাত দান করতে চাই। উস্তাদ প্রশ্ন করল, সেটি কিভাবে?  সে বলল, আপনাকে আমি খুন করব। ফলে মহান আল্লাহ বিচার দিবসে আপনাকে খুন করার অপরাধে আমাকে জাহান্নাম দিবেন। আর আপনি বিনা হিসাবে আল্লাহর জান্নাতে চলে যাবেন। উস্তাদ তার পাগলামী বুঝতে পেরে বলল, আমাকে মৃত্যুর আগে ওযূ করে দু’রাক‘আত ছালাত পড়ার শেষ ইচ্ছা পূরণ কর। উস্তাদ টয়লেটে গিয়ে বাইরের লোকজনকে ডাকাডাকি শুরু করে দিল। পরে বাইরের মানুষরা এসে ছাত্রের এমন ভুল সিদ্ধান্ত আর পাগলামী থেকে উস্তাদকে রক্ষা করলেন।

ছাত্রগণ : দেশে-বিদেশে তাঁর অসংখ্য গুণগ্রাহী শিক্ষার্থী রয়েছে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু নাম নিম্নে বর্ণিত হ’ল-

১. মাওলানা আব্দুল খালেক (মুহাদ্দিছ, হিফযুল উলূম কামিল মাদ্রাসা, চাঁপাই নবাবগঞ্জ) ২. মাওলানা আব্দুর রহীম (সাবেক প্রিন্সিপাল, জামে‘আ চাঁপাই নবাবগঞ্জ ) ৩. মাওলানা আব্দুল ওয়াহহাব হাটহাজারী (পিন্সিপাল, কদমডাঙ্গা মাদ্রাসা, নওগাঁ) ৪. মাওলানা আব্দুল ওয়াহহাব লালবাগী (মুহাদ্দিছ, আলাদীপুর মাদ্রাসা, নওগাঁ) ৫. মাওলানা আব্দুল গফূর (মুহাদ্দিছ, হিফযুল উলূম) ৬. মাওলানা দুর্রুল হুদা (প্রভাষক হিফযুল উলূম) ৭. মাওলানা আফতাবুদ্দীন (সহকারী অধ্যাপক, পাঁচ টিকরী আলিম মাদ্রাসা, চাঁপাই নবাবগঞ্জ) ৮. মাওলানা নাজমুল হক (সহকারী শিক্ষক, আলাদীপুর মাদ্রাসা) ৯. মাওলানা আব্দুল খালেক সালাফী (প্রিন্সিপাল, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী) ১০. শায়খ সাঈদুর রহমান (প্রিন্সিপাল, মাদরাসা ইশাআতুল ইসলাম আস-সালাফিয়াহ, রাণীবাযার, রাজশাহী) ১১. মাওলানা ফযলুল করীম (মুহাদ্দিছ, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী) ১২. মাওলানা রুস্তম আলী (সিনিয়র শিক্ষক, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া রাজশাহী) ১৩. আকমাল হুসাইন মাদানী (সঊদী দাঈ এবং তদীয় বড় ছেলে) ১৪. ড. মুযাফফর বিন মুহসিন (পরিচালক, দারুল হুদা ইসলামী কমপ্লেক্স, বাঘা, রাজশাহী) ১৫. ড. নূরুল ইসলাম (ভাইস প্রিন্সিপাল, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী ও সহকারী গবেষক, গবেষণা বিভাগ, হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ), ১৬. ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব (চেয়ারম্যান, হাদীছ ফাউন্ডেশন শিক্ষা বোর্ড ও পরিচালক, গবেষণা বিভাগ, হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ) ১৭. ড. ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর (পরিচালক, ইয়াসিন আলী সালাফিয়া মাদ্রাসা, রাজশাহী) ১৮. আব্দুল আলীম মাদানী (প্রিন্সিপাল, জামে‘আহ আস-সালাফিয়াহ, হাটাবো, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ), ১৯. শরীফুল ইসলাম মাদানী (শিক্ষক, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী), ২০. ড. আব্দুল্লাহিল কাফী (পরিচালক, বাংড়া সালাফিয়া মাদ্রাসা, শেরপুর, বগুড়া), ২১. আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক (অধ্যয়নরত, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়) প্রমুখ।

সন্তান-সন্ততি : তাঁর ৪ ছেলে ও ৪ মেয়েসহ মোট ৮ জন সন্তান রয়েছে।  তাঁর ছেলেদের বর্তমান অবস্থা নিম্নরূপ-

১. বড় ছেলে মুহাম্মাদ আকমাল হোসাইন মাদানী। তিনি মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবী সাহিত্যে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ২০০৭ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত  সঊদী সরকারের দাঈ ও শিক্ষক হিসাবে দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশে কর্মরত আছেন।

২. মেজো ছেলে শামসুল আলম নারায়ণগঞ্জে ব্যবসার সাথে জড়িত।

৩. সেজো ছেলে আব্দুর রহীম নিজ গ্রামে ব্যবসার সাথে জড়িত।

৪. ছোট ছেলে মুহাম্মাদ রুকুনুযযা্মান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে অনার্স-মাস্টাস সম্পন্ন করে ৩৮-তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং বর্তমানে কুষ্টিয়া সরকারী কলেজে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে প্রভাষক হিসাবে কর্মরত আছেন।

মৃত্যু : তিনি ১৪ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯-টায় তাঁর নিজ বাস গৃহে (মহিষালবাড়ী, গোদাগাড়ী) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

বস্ত্তবাদী দুনিয়ায় প্রাইভেট, কোচিং বাণিজ্যের যুগে এমন একজন নিঃস্বার্থ ও আদর্শবান শিক্ষক পাওয়া সত্যিই দুরূহ ব্যাপার। পাঠদানে প্রবল আগ্রহ ছাত্রদেরকে নতুন বিষয় শোখানো এবং ছাত্রদের প্রতি পিতৃতুল্য ভালবাসা তাকে প্রবাদপ্রতীম শিক্ষকে পরিণত করেছে। তিনি গত হয়েছেন প্রায় এক দশক পূর্বে, কিন্তু তাঁর ছাত্রবৃন্দ, তাঁর সহকর্মী শিক্ষকদের মুখে মুখে তাঁর প্রশংসাবাণী অদ্যাবধি শোনা যায়। আজও তারা তাঁকে প্রাণভরে স্মরণ করেন এবং দো‘আ করেন। মহান আল্লাহ তা‘আলা এমন একজন নিখাদ দ্বীনের সেবক ও শিক্ষককে জান্নাতুল ফিরদাউস নছীব করুন।- আমীন!

লেখক : প্রভাষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ   



আরও