মূল্যহীন দুনিয়ার প্রতি অনর্থক ভালোবাসা (৮ম কিস্তি )

মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম 8593 বার পঠিত

ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) দৃষ্টিতে দুনিয়ার মূল্যহীনতা :

যে সকল ছাহাবী এই মূল্যহীন দুনিয়া ও তার সম্পদকে মূল্য দেননি তাদের মধ্যে ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) অন্যতম। রাসূল (ছাঃ)-এর আদর্শ অনুসরণ করে নিজের জীবন চালাতেন। এমনকি রাষ্ট্রপ্রধান হয়েও তিনি কখনো দুনিয়াবী চাকচিক্য ও ভোগবিলাসের পথকে বেছে নেননি। সা‘দ বিন আবী ওয়াক্কাছ (রাঃ) বলেন,مَا كَانَ بِأَقْدَمِنَا إسْلاَمًا وَلَكِنْ قَدْ عَرَفْت بِأَيِّ شَيْءٍ فَضَلَنَا, كَانَ أَزْهَدَنَا فِي الدُّنْيَا, يَعْنِي عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ. ‘তিনি ইসলাম গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের থেকে অগ্রগামী ছিলেন না। কিন্তু তুমি কি জান কেন তিনি আমাদের থেকে মর্যাদাবান ছিলেন? তিনি আমাদের মাঝে সর্বাধিক দুনিয়া বিমুখ ছিলেন’।[1] হাসান বাছরী (রহঃ) বলেন, وَاللهِ مَا كَانَ بِأَوَّلِهِمْ إسْلاَمًا, وَلاَ أَفْضَلِهِمْ نَفَقَةً فِي سَبِيلِ اللهِ, وَلَكِنَّهُ غَلَبَ النَّاسَ بِالزُّهْدِ فِي الدُّنْيَا ‘আল্লাহর কসম! তিনি ইসলাম গ্রহণের ক্ষেত্রে অগ্রগামী ছিলেন না, আল্লাহর পথে দানের ক্ষেত্রেও সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন না। কিন্তু তিনি দুনিয়া বিমুখতার ক্ষেত্রে লোকদের উপর বিজয়ী হয়েছিলেন’।[2] তাঁর দুনিয়া বিমুখতার শাশ্বত কিছু দৃষ্টান্ত নিম্নে উল্লেখ করা হ’ল :

খালাফ বিন হাওশাব হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, أَنَّ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ: نَظَرْتُ فِي هَذَا الْأَمْرِ فَجَعَلْتُ إِذَا أَرَدْتُ الدُّنْيَا أَضُرُّ بِالْآخِرَةِ، وَإِذَا أَرَدْتُ الْآخِرَةَ أَضُرُّ بِالدُّنْيَا، فَإِذَا كَانَ الْأَمْرُ هَكَذَا فَأَضِرُّوا بِالْفَانِيَةِ- ‘ওমর (রাঃ) বলতেন, আমি দুনিয়ার বিষয়ে ভেবে দেখলাম যে, যখনই দুনিয়ার কোন কিছু চেয়েছি তখনই পরকাল বিনষ্ট করেছি। আর যখনই পরকাল চেয়েছি তখনই দুনিয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। যখন বিষয়টি এমনই তখন নশ্বর পৃথিবীতে ক্ষতিগ্রস্থ হও’।[3]

নিমেণ ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা বর্ণনা করা হ’ল; মূল্যহীন দুনিয়ার অমূল্য ধনসম্পদের প্রতি সবার লোভ রয়েছে। কিন্তু রাসূল (ছাঃ)-এর যেমন দুনিয়ার ধনসম্পদের প্রতি কোন লোভ ছিলনা; তেমনি তার হাতে গড়া খলীফাতুল মুসলিমীন ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ)-এরও কোন লোভ ছিলনা। বরং তিনি সম্পদকে সমাজের শান্তি-শৃংখলা বিনষ্টের কারণ হিসাবে গণ্য করতেন। কারণ সম্পদ পরস্পরের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ ও শত্রুতা সৃষ্টি করে। যেমন ওমর (রাঃ)-এর জীবনীতে এসেছে, عَنِ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ: أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ أُتِيَ بِمَالٍ فَوَضَعَ فِي الْمَسْجِدِ، فَخَرَجَ إِلَيْهِ يَتَصَفَّحُهُ، وَيَنْظُرُ إِلَيْهِ، ثُمَّ هَمَلَتْ عَيْنَاهُ، فَقَالَ لَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ مَا يُبْكِيكَ؟ فَوَاللَّهِ إِنَّ هَذَا لِمِنْ مَوَاطِنِ الشُّكْرِ قَالَ عُمَرُ: إِنَّ هَذَا وَاللَّهِ مَا أَعْطَيَهُ قَوْمٌ يَوْمًا إِلَّا أُلْقِيَ بَيْنَهُمُ الْعَدَاوَةُ وَالْبَغْضَاءُ- মিসওয়ার বিন মাখরামা বলেন, ওমর বিন খাত্ত্বাব (রাঃ)-এর আমলে কিছু সম্পদ আসলে মসজিদে রাখা হ’ল। তিনি সম্পদের প্রতি অনাগ্রহের দৃষ্টিপাত করতে করতে বের হলেন। এরপর তার চোখ অশ্রু ঝরালো। তখন আব্দুর রহমান বিন আউফ (রাঃ) বললেন, হে আমীরুল মুমেনীন! কিসে আপনাকে কাঁদাচেছ? আল্লাহর কসম! নিশ্চয় এগুলো তাদের জন্য যাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের যোগ্যতা রয়েছে। ওমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! যখন কোন জাতিকে এগুলো দান করা হয়েছে তখনই তাদের মাঝে শক্রতা ও হিংসা-বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে’।[4] অন্য বর্ণনায় রয়েছে যে,

أُتِيَ بِكُنُوزِ كِسْرَى، فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَرْقَمَ: أَتَجْعَلُهَا فِي بَيْتِ الْمَالِ حَتَّى تُقَسِّمَهَا؟ فَقَالَ عُمَرُ:لَا وَاللَّهِ، لَا أُووِيهِ إِلَى سَقْفٍ حَتَّى أُمْضِيَهَا، فَوَضَعَهَا فِي وَسَطِ الْمَسْجِدِ، فَبَاتُوا عَلَيْهَا يَحْرُسُونَهَا، فَلَمَّا أَصْبَحَ، كَشَفَ عَنْهَا فَرَأَى مِنَ الْحَمْرَاءِ وَالْبَيْضَاءِ مَا يَكَادُ يَتَلَأْلَأُ، فَبَكَى عُمَرُ، فَقَالَ لَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ: وَمَا يُبْكِيكَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ؟ فَوَاللَّهِ إِنَّ هَذَا لَيَوْمُ شُكْرٍ، وَيَوْمُ سُرُورٍ، وَيَوْمُ فَرَحٍ، فَقَالَ عُمَرُ:وَيْحَكَ، إِنَّ هَذَا لَمْ يُعْطَهُ قَوْمٌ قَطُّ إِلَّا أُلْقِيَتْ بَيْنَهُمُ الْعَدَاوَةُ وَالْبَغْضَاءُ-

‘কিসরা থেকে ধনভান্ডার আনা হ’লে আব্দুল্লাহ বিন আরক্বাম বলল, এগুলো কি বায়তুল মালে রেখে দিয়ে বন্টন করে দিবেন? ওমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম না। আমি এগুলোর সুরাহা না করে ছাদের নীচে উঠাব না। এগুলো তিনি মসজিদের বারান্দায় রাখলেন। লোকেরা রাতে পাহারা দিয়ে হেফাযত করল। যখন সকাল করলেন ধনভান্ডারগুলো অবমুক্ত করা হ’ল। তিনি এমন স্বর্ণ ও রৌপ্য দেখলেন যা চক্ষু ধাঁধিয়ে গেল। তখন আব্দুর রহমান বিন আউফ (রাঃ) বললেন, হে আমীরুল মুমেনীন! কিসে আপনাকে কাঁদাচ্ছে? আল্লাহর কসম! নিশ্চয় আজকের দিন আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, আনন্দ ও উপভোগের দিন। ওমর (রাঃ) বললেন, তোমার ধ্বংস হৌক, যখন কোন জাতিকে এগুলো দান করা হয় তখনই তাদের মাঝে শত্রুতা ও হিংসা-বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে’।[5]

অন্যত্র এসেছে,عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ قَالَ عُمَرُ رضى الله عنه لَوْلاَ آخِرُ الْمُسْلِمِينَ مَا فَتَحْتُ قَرْيَةً إِلاَّ قَسَمْتُهَا بَيْنَ أَهْلِهَا كَمَا قَسَمَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم خَيْبَرَ- আসলাম (রহঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, ওমর (রাঃ) বলেছেন, ‘পরবর্তী যুগের মুসলমানদের বিষয়ে যদি আমরা চিন্তা না করতাম, তবে যেসব এলাকা জয় করা হ’ত, তা আমি মুজাহিদদের মধ্যে বণ্টন করে দিতাম, যেমন নবী করীম (ছাঃ) খায়বারের সম্পদ বণ্টন করে দিয়েছিলেন’।[6] তথা সম্পদের প্রতি ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ)-এর সামান্য লোভ ছিলনা। সেজন্য তিনি নিজের জন্য যেমন সম্পদ জমা রাখাকে পসন্দ করতেন না। তেমনি রাষ্ট্রের জন্য পসন্দ করতেন না। তবে জনগণের কল্যাণের জন্য বায়তুল মালে কিছু সম্পদ সঞ্চয় করেছিলেন।

জীবনধারণ করতে গেলে খেতে হবে। তবে কতটুকু খেতে হবে? রাসূল (ছাঃ) বলতেন, আদম সন্তানের জন্য কয়েক লোকমা খাদ্য যথেষ্ট, যা দিয়ে সে তার কোমর সোজা রাখতে পারে (আল্লাহর ইবাদত করতে পারে)। এরপরেও যদি খেতে হয়, তবে পেটের তিনভাগের এক ভাগ খাদ্য ও একভাগ পানি দিয়ে ভরবে এবং একভাগ খালি রাখবে শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য’।[7] তিনি সর্বাবস্থায় উন্নত ও দামী খাবার পরিহার করতেন। বিশেষ করে যখন দেশে বা কোন এলাকায় দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়েছে, তখন তিনি নিজের জন্য উন্নতমানের খাবার গ্রহণকে হারাম করে নিয়েছেন। তিনি কেবল তেল ও রুটি খেয়ে দিনাতিপাত করতেন। অথচ প্রজাদের মাঝে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন।

যেমন বিভিন্ন আছারে এসেছে, عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ:لَقِيَنِي عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ وَمَعِي لَحْمٌ اشْتَرَيْتُهُ بِدِرْهَمٍ، فَقَالَ: مَا هَذَا؟ فَقُلْتُ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ اشْتَرَيْتُهُ لِلصِّبْيَانِ وَالنِّسَاءِ، فَقَالَ عُمَرُ: لَا يَشْتَهِي أَحَدُكُمْ شَيْئًا إِلَّا وَقَعَ فِيهِ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا أَوْ لَا يَطْوِي أَحَدُكُمْ بَطْنَهُ لِجَارِهِ وَابْنِ عَمِّهِ، ثُمَّ قَالَ: أَيْنَ يُذْهَبُ بِكُمْ عَنْ هَذِهِ الْآيَةِ: {أَذْهَبْتُمْ طَيِّبَاتِكُمْ فِي حَيَاتِكُمُ الدُّنْيَا وَاسْتَمْتَعْتُمْ بِهَا} [الأحقاف: 20] জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একদিন ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ হ’ল। যখন আমার সাথে এক দিরহামের বিনিময়ে কেনা কিছু গোশত ছিল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এগুলো কি? আমি বললাম, হে আমীরুল মুমেনীন! নারী ও শিশুদের জন্য ক্রয় করেছি। তখন ওমর (রাঃ) বললেন, তোমাদের কেউ যখন কোন কিছুর কামনা একবার করে তখন সে তাতে দুই বা তিনবার পতিত হয়। এরপর তিনি বললেন, তোমাদের কেউ কি তার প্রতিবেশী ও চাচাত ভাইদের জন্য নিজ পেটকে ভাঁজ করবে না? তিনি আরো বললেন, নিমেণর আয়াত তোমাদের কোথায় নিয়ে যাবে? আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা তো পার্থিব জীবনে সব সুখ-শান্তি নিঃশেষ করেছ এবং তা পূর্ণভাবে ভোগ করেছ’।[8]

অন্য হাদীছে এসেছে, وعن الأحنف بن قيس، قال:خرجنا مع أبي موسى الأشعري وفوداً إلى عمر بن الخطاب رضي الله عنه وكان لعمر ثلاث خبزات يأدمهن يوماً بلبن وسمن، ويوماً بلحم، ويوماً بزيت، فجعل القوم يعذرون، فقال عمر:والله إني لأرى تعذيركم وإني لأعلمكم بالعيش، ولو شئت لجعلت كرَاكرَ، وأَسْنِمة وصَلاء، وصنابٍ، وصَلائِق، ولكني أستبقي حسناتي، إن الله عزوجل ذكر قوماً فقال: أَذْهَبْتُم طَيِّبَاتِكُم فِي حَيَاتِكُمُ الدُّنيَا واسْتَمْتَعْتُم بهَا- আহনাফ বিন ক্বায়েস হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ)-এর সাথে প্রতিনিধি হিসাবে ওমর (রাঃ)-এর নিকট গেলাম। আর ওমর (রাঃ)-এর জন্য তিনটি রুটি ধার্য ছিল। একদিন তিনি দুধ ও ঘি দিয়ে খেতেন, একদিন গোশত দিয়ে খেতেন এবং একদিন তেল দিয়ে খেতেন। ওমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি অবশ্যই তোমাদের আপত্তিকে খেয়াল করছি। আর আমি অবশ্যই জানি স্বাচ্ছন্দ্যে কীভাবে জীবন-যাপন করা যায়। আমি চাইলেই নেহারী, ঘি, গোশতের রোষ্ট, সরিষা মিশ্রিত তেল ও গোশতের টুকরো দিয়ে রুটি খেতে পারি। কিন্তু আমি আমার ছওয়াব অবশিষ্ট রাখার প্রত্যাশা করি। কারণ আল্লাহ তা‘আলা একটি সম্প্রদায় সম্পর্কে বলেছেন, তোমরা তো পার্থিব জীবনে সব সুখ-শান্তি নিঃশেষ করেছ এবং তা পূর্ণভাবে ভোগ করেছ’।[9] অন্য বর্ণনায় এসেছে, ওমর (রাঃ) বলেন, وَاللهِ إِنِّي لَوْ شِئْتُ لَكُنْتُ مِنْ أَلْيَنِكُمْ لِبَاسًا، وَأَطْيَبِكُمْ طَعَامًا، وَأَرَقِّكُمْ عَيْشًا، إِنِّي وَاللهِ مَا أَجْهَلُ عَنْ كَرَاكِرَ وَأَسْنِمَةٍ، وَعَنْ صَلَاءٍ وَصِنَابٍ وَصَلَايِقٍ، وَلَكِنِّي سَمِعْتُ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ عَيَّرَ قَوْمًا بِأَمْرٍ فَعَلُوهُ ‘আল্লাহর কসম! আমি চাইলে তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত খাবার খেতে পারি এবং উন্নত জীবন যাপন করতে পারি। আমি নেহারী, ঘি, গোশতের রোষ্ট, সরিষা মিশ্রিত তেল ও গোশতের টুকরো দিয়ে রুটি খাওয়া সম্পর্কে অজ্ঞ নই। কিন্তু আল্লাহকে কুরআনে বলতে শুনেছি যে, তিনি এধরনের কর্মকারী একটি কওমের সমালোচনা করেছেন’।[10]

অন্যত্র এসেছে, عن محمّد العُمري قال: دخل عمر بن الخطاب رضي الله عنه وقد أصابه الغُرَثُ، فقال:عندكم شيء؟فقالت امرأته: تحت السّرير، فتناول قناعاً فيه تمر، فأكل ثم شرب الماء، ثم مسح بطنه، ثم قال:ويح لمن أدخله بطنه النار. মুহাম্মাদ আল-উমরী হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘ওমর (রাঃ)-একদা বাড়িতে প্রবেশ করলেন। তখন তিনি ক্ষুধার্ত ছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কাছে কিছু আছে কি? তার স্ত্রী বললেন, খাটের নীচে আছে। তিনি সেখান থেকে একটি খেজুরের কাদি টেনে কিছু খেজুর খেলেন। এরপর পানি পান করে পেট স্পর্শ করে বললেন, তার জন্য ধ্বংস যে তার পেটে আগুন প্রবেশ করালো’।[11]

অন্যত্র এসেছে, عن مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ: قَالَتْ حَفْصَةُ بِنْتُ عُمَرَ لِعُمَرَ أَمِيرِ الْمُؤْمِنِينَ: لَوْ لَبِسْتَ ثَوْبًا هُوَ أَلْيَنُ مِنْ ثَوْبَكَ، وَأَكَلْتَ طَعَامًا هُوَ أَطْيَبُ مِنْ طَعَامِكَ، فَقَدْ وَسَّعَ اللهُ مِنَ الرِّزْقِ، وَأَكْثَرَ مِنَ الْخَيْرِ ؟ قَالَ: إِنِّي سَأُخَاصِمُكِ إِلَى نَفْسِكِ، أَمَا تَذْكُرِينَ مَا كَانَ مِنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَلْقَى مِنْ شِدَّةِ الْعَيْشِ، فَمَا زَالَ يُكَرِّرُهَا حَتَّى أَبْكَاهَا فَقَالَ لَهَا: إِنِّي قَدْ قُلْتُ لَكَ: إِنِّي وَاللهِ لَئِنِ اسْتَطَعْتُ لَأًشَارِكْهُمَا بِمِثْلِ عَيْشِهِمَا الشَّدِيدِ لَعَلِّي أُدْرِكُ عَيْشَهُمَا الرَّضِيُّ- মুছ‘আব বিন সা‘দ বিন আবী ওয়াক্কাছ হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন হাফছা বিনতে ওমর (রাঃ)-কে বললেন, হে আমীরুল মুমেনীন! আপনি যদি আপনার জামার চেয়ে মসৃণ জামা পরিধান করতেন এবং কিছুটা উন্নত মানের খাবার গ্রহণ করতেন। আল্লাহ তো রিযিক প্রশস্ত করে দিয়েছেন এবং অসংখ্য কল্যাণ দান করেছেন। তখন তিনি বললেন, আমি শীঘ্রই তোমার সাথে ঝগড়া করব। তোমার কি মনে নেই যে, রাসূল (ছাঃ) কীভাবে জীবন অতিবাহিত করতেন। এভাবে রাসূল (ছাঃ) সাদাসিধে জীবনের কথা উল্লেখ করেছিলেন। এতে হাফছার কান্না চলে আসে। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! তুমি আমার অবস্থানের কারণে বলছো। আল্লাহর কসম, আমি সক্ষম হলে অবশ্যই তাদের মত কঠিন জীবন যাপনে অংশ নিতাম, যাতে আমি তাদের সাদাসিধে জীবন যাপনের মর্ম অনুধাবন করতে পারি’।[12]

অন্যত্র এসেছে, عن الحسن: أنَّ ناسًا كلَّموا حفصةَ، فقال لها: لو كلَّمتِ أباكِ في أن يليِّن من عيشه، فجاءته، فقالت: يا أَبَتاه، ويا أَبَتاه، ويا أميرَ المؤمنين، إنَّ ناسًا من قومكَ كلَّموني في أن أكلِّمكَ في أن تليِّن من عيشك. فقال: يا بنيَّة، غَشَشتِ أباكِ، ونَصَحتِ لقومكِ- হাসান বছরী (রহঃ) বলেন, লোকেরা হাফছা (রাঃ)-কে অনুরোধ করে বলল, যদি আপনি আপনার আববাকে একটু স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন যাপন করতে বলতেন। তিনি পিতার নিকট এসে বললেন, হে আমার আববা! হে আমীরুল মুমেনীন! আপনার সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ কথা বলতে বলেছে যাতে আমি আপনাকে উনণত জীবন-যাপনের কথা বলি। তখন তিনি তাকে বললেন, হে কন্যা! তোমার আববাকে ঠকাচ্ছো ও গোত্রের লোকদের কল্যাণ কামনা করছ’।[13] রাষ্ট্রে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ার কারণে ওমর (রাঃ) নিজের জন্য ঘি ও দুধকে হারাম করে নিয়েছিলেন। তাঁর চিন্তা ছিল জনগণ না খেয়ে মরবে আর আমি প্রাসাদে বসে থেকে ভাল ভাল খাবার খাব এটা হতে পারেনা। সেজন্য তিনি খুব সাধারণ খাবার খেতেন। ফলে তার পেটে আলসারের সমস্যা হয়ে যায়।

যেমন আছারে এসেছে, عن أنس قال:صليت إلى جنب عمر بن الخطاب رضي الله عنه عام الرّمادة؛ وكان عام قحط، فتقرقر بطنه، فقال لبطنه: اسكن فوالله ما لك عندنا غير هذا، حتى يحيى الناس، وكان يأكل الزيت- আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, দুর্ভিক্ষের বছর আমি ওমর বিন খাত্ত্বাব (রাঃ)-এর পাশে ছালাত আদায় করলাম। সেই বছরটি ছিল ভীষণ দুর্বিপাক ও কষ্টের। এসময় (গ্যাষ্ট্রিকের কারণে) তার পেট শব্দ করে উঠল। তখন তিনি তার পেটকে বললেন, শান্ত হও, আল্লাহর কসম, তোমার কি হয়েছে যে, মানুষকে জাগ্রত করে তুলতে হবে? এছাড়া তো আমাদের নিকট কিছুই ছিলনা। তিনি তেল দিয়ে রুটি খেতেন’।[14] এই দুর্ভিক্ষের বছরে ওমর (রাঃ) জনগণের বাড়িতে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিয়েছিলেন। অথচ নিজের খাবারের ব্যাপারে মোটেই গুরুত্ব দেননি। যেমন হাদীছে এসেছে, عَنْ عَبْد اللَّهِ بْن عُمَرَ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ عَامَ الرَّمَادَةِ وَكَانَتْ سَنَةً شَدِيدَةً مُلِمَّةً، بَعْدَمَا اجْتَهَدَ عُمَرُ فِي إِمْدَادِ الْأَعْرَابِ بِالْإِبِلِ وَالْقَمْحِ وَالزَّيْتِ مِنَ الْأَرْيَافِ كُلِّهَا، حَتَّى بَلَحَتِ الْأَرْيَافُ كُلُّهَا مِمَّا جَهَدَهَا ذَلِكَ فَقَامَ عُمَرُ يَدْعُو فَقَالَ: اللَّهُمَّ اجْعَلْ رِزْقَهُمْ عَلَى رُءُوسِ الْجِبَالِ، فَاسْتَجَابَ اللهُ لَهُ وَلِلْمُسْلِمِينَ، فَقَالَ حِينَ نَزَلَ بِهِ الْغَيْثُ: الْحَمْدُ لِلَّهِ، فَوَاللَّهِ لَوْ أَنَّ اللَّهَ لَمْ يُفْرِجْهَا مَا تَرَكْتُ بِأَهْلِ بَيْتٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ لَهُمْ سَعَةٌ إِلَّا أَدْخَلْتُ مَعَهُمْ أَعْدَادَهُمْ مِنَ الْفُقَرَاءِ، فَلَمْ يَكُنِ اثْنَانِ يَهْلِكَانِ مِنَ الطَّعَامِ عَلَى مَا يُقِيمُ وَاحِدًا- আব্দুললাহ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) দুর্ভিক্ষের বছর বলেন, আর সেই বছরটি ছিল ভীষণ দুর্বিপাক ও কষ্টের। ওমর (রাঃ) পল্লী অঞ্চলের বেদুঈনদের উট, খাদ্যশস্য ও তেল প্রভৃতি সাহায্য সামগ্রী পৌঁছাবার চেষ্টা করেন। এমনকি তিনি গ্রামাঞ্চলের এক খন্ড জমিও অনাবাদী পড়ে থাকতে দেননি এবং তার চেষ্টা ফলপ্রসূ হ’ল। ওমর (রাঃ) দো‘আ করতে দাঁড়িয়ে বলেন, হে আল্লাহ! আপনি তাদের রিযিক পর্বত চূড়ায় পৌঁছে দিন। আল্লাহ তাঁর এবং মুসলমানদের দো‘আ কবুল করলেন। তখন বৃষ্টি বর্ষিত হ’লে তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর)। আল্লাহর শপথ! যদি আল্লাহ এই বিপর্যয় দূর না করতেন, তবে আমি কোন সচ্ছল মুসলমান পরিবারকেই তাদের সাথে সম-সংখ্যক অভাবী লোককে যোগ না করে ছাড়তাম না। যতটুকু খাদ্যে একজন জীবন ধারণ করতে পারে, তার সাহায্যে দু’জন লোক ধ্বংস থেকে রক্ষা পেতে পারে’।[15]

অন্যত্র এসেছে, عن حذيفة رضي الله عنه قال:أقبلت فإذا الناس بين أيديهم القصاع، فدعاني عمر رضي الله عنه فأتيته فدعا بخبز غليظ، وزيت، فقلت له: "أمنعتني أن آكل الخبز واللحم، ودعوتني على هذا قال:إنما دعوتك على طعامي، فأما هذا فطعام المسلمين- হুযায়ফা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা আমি ওমর (রাঃ)-এর নিকট আসলাম। দেখলাম লোকেরা থালা সামনে নিয়ে উপবিষ্ট। ওমর (রাঃ) আমাকে কাছে ডাকলেন। আমি নিকটে আসলে তিনি মোটা রুটি ও তেল নিয়ে ডাকলেন। তখন আমি বললাম, আপনি না আমাকে রুটি ও গোশত খেতে ডেকেছিলেন? অথচ আপনি আমাকে এটা খেতে বলছেন। ওমর (রাঃ) বললেন, আমি তোমাকে আমার খাবার খেতে দাওয়াত করেছি। আর এটিই হ’ল মুসলমানদের খাবার’।[16] অন্য আছারে এসেছে, عَنْ أَبِى عُثْمَانَ قَالَ كَتَبَ إِلَيْنَا عُمَرُ وَنَحْنُ بِأَذْرَبِيجَانَ يَا عُتْبَةَ بْنَ فَرْقَدٍ إِنَّهُ لَيْسَ مِنْ كَدِّكَ وَلاَ مِنْ كَدِّ أَبِيكَ وَلاَ مِنْ كَدِّ أُمِّكَ فَأَشْبِعِ الْمُسْلِمِينَ فِى رِحَالِهِمْ مِمَّا تَشْبَعُ مِنْهُ فِى رَحْلِكَ وَإِيَّاكُمْ وَالتَّنَعُّمَ وَزِىَّ أَهْلِ الشِّرْكِ وَلَبُوسَ الْحَرِيرِ فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ لَبُوسِ الْحَرِيرِ. قَالَ: إِلاَّ هَكَذَا. وَرَفَعَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِصْبَعَيْهِ الْوُسْطَى وَالسَّبَّابَةَ وَضَمَّهُمَا- আবু ওছমান (রহঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা আযারবাইজানে ছিলাম। এ সময় ওমর (রাঃ) আমাদের (দলনেতার) কাছে চিঠি লিখলেন, হে ঊতবাহ ইবনু ফারকাদ! এ ধন-সম্পদ তোমার কষ্টার্জিত নয়, তোমার বাবা-মায়েরও কষ্টার্জিত নয়। তাই তুমি যেরূপে নিজ বাড়িতে পেটপুরে ভক্ষণ করো, তেমনিভাবে মুসলিমদের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে তাদেরকেও পেটপুরে ভক্ষণ করাও। আর সাবধান, মুশরিকদের বিলাসী বেশভূষা এবং রেশমী কাপড় পরিধান করা থেকে বিরত থাকবে। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) রেশমী কাপড় পরতে বারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, তবে এ পরিমাণ বৈধ রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তার শাহাদাত ও মধ্যমা আঙগুলদ্বয় একসাথে করে আমাদের সম্মুখে তুলে ধরলেন’।[17]

عَنْ أَبِي عُثْمَانَ ، قَالَ : لَمَّا قَدِمَ عُتْبَةُ أَذْرَبِيجَانَ بِالْخَبِيصِ فَذَاقَهُ فَوَجَدَهُ حُلْوًا، فَقَالَ : لَوْ صَنَعْتُمْ لأَمِيرِ الْمُؤْمِنِينَ مِنْ هَذَا، قَالَ : فَجَعَلَ لَهُ سَفَطَيْنِ عَظِيمَيْنِ، ثُمَّ حَمَلَهُمَا عَلَى بَعِيرٍ مَعَ رَجُلَيْنِ فَبَعَثَ بِهِمَا إلَيْهِ ، فَلَمَّا قَدِمَا عَلَى عُمَرَ، قَالَ : أَيَّ شَيْءٍ هَذَا قَالَ: هَذَا خَبِيصٌ, فَذَاقَهُ فَإِذَا هُوَ حُلْوٌ، فَقَالَ : أَكُلَّ الْمُسْلِمِينَ يُشْبِعُ مَنْ هَذَا فِي رَحْلِهِ ؟ قَالُوا : لاَ قَالَ : فَرُدَّهُمَا ، ثُمَّ كَتَبَ إلَيْهِ : أَمَّا بَعْدُ, فَإِنَّهُ لَيْسَ مِنْ كَدِّكَ، وَلاَ مِنْ كَدِّ أَبِيك، وَلاَ مِنْ كَدِّ أُمِّكَ أَشْبِعَ الْمُسْلِمِينَ مِمَّا تَشْبَعُ مِنْهُ فِي رَحْلِك-

আবু ওছমান (রহঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, ঊতবাহ ইবনু ফারকাদ আযারবাইজানে থাকাকালীন তার নিকট খাবীছ নামক (খেঁজুর ও ঘি দ্বারা মিশ্রিত হালুয়া) খাবার নিয়ে আসা হ’ল। তিনি খেয়ে খুব সুস্বাদু ও মিষ্টি হিসাবে পেলেন। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর কসম তুমি যদি এমন খাবার আমীরুল মুমিনীন ওমর (রাঃ) জন্য বানাতে! তখন তাঁর জন্য বড় দু’টি পাত্রে খাবীছ বানানো হ’ল এবং দু’জন লোকের দায়িত্বে দু’টি উটের উপর উঠিয়ে ওমর (রাঃ)-এর নিকট পাঠিয়ে দিলেন। ওমর (রাঃ) এর নিকট আসলে পাত্র দু’টি তিনি খুলে দেখলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এগুলো কি? তারা বলল, খাবীছ। তিনি চেখে দেখে মিষ্টি অনুভব করলেন। তখন দূতকে বললেন, সফরের সকল মুসলমানেরা কি এগুলো খেয়ে পরিতৃপ্ত হয়েছে? সে বলল, না। তখন তিনি বললেন, তাহ’লে ফিরিয়ে দাও। আর পত্রে তিনি লিখলেন, অতঃপর এ ধন-সম্পদ তোমার কষ্টার্জিত নয়, তোমার বাবা-মায়েরও কষ্টার্জিত নয়। তাই তুমি যেরূপে নিজ বাড়িতে পেটপুরে ভক্ষণ কর, তেমনিভাবে মুসলিমদের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে তাদেরকেও পেটপুরে ভক্ষণ করাও’।[18]

عَنْ يَسَارِ بْنِ نُمَيْرٍ، قَالَ : وَاللهِ مَا نَخَلْت لِعُمَرَ الدَّقِيقَ قَطُّ إِلاَّ وَأَنَا لَهُ عَاصٍ.

ইয়াসার বিন নুমায়ের বলেন, আমি কখনো ওমর (রাঃ)-এর অবাধ্য না হয়ে তাঁর জন্য চিকন আটার রুটি বানাতে পারেনি’।[19]

وعن أنس قال:تقرقر بطن عمر عام الرّمادة، فكان يأكل الزيت، وكان قد حرّم على نفسه السمن، قال:فنقر بطنه بإصبعه، وقال: تقرقر إنه ليس عندنا غيره حتى يحيى الناس-

আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, দুর্ভিক্ষের বছর ওমর (রাঃ)-এর পেটে (গ্যাষ্ট্রিকের কারণে) গড়গড় করে ডাকল। কারণ তিনি তেল খেতেন। আর তিনি নিজের জন্য ঘিকে হারাম করে নিয়েছিলেন। তিনি আঙ্গুল দিয়ে পেট চেপে বললেন, তুমি গড়গড় করতে থাক, আর মানুষকে জানাতে থাক, ইহা ব্যতীত আমাদের নিকট অন্য খাবার নেই’।[20]

পোষাক-পরিচ্ছদ মানব জীবনের অবিচ্ছদ্য অংশ। মানুষ তার সামর্থ্য অনুযায়ী উন্নতমানের পোষাক পরিধান করবে। এটিই সুন্নাত। কিন্তু প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন বা প্রজারা পোষাক পরতে পাবেনা আর আপনি নিত্য নতুন ও প্রতিদিনের অনুষ্ঠানের জন্য স্বতন্ত্র ও নিত্য নতুন পোষাক পরতে পারেন না। এটিই কোন মুসলিম প্রতিবেশী, আত্মীয় বা সমাজ ও রাষ্ট্র প্রধানের জন্য মোটেই সমীচীন নয়। ইসলামী বিশ্বের খলীফা ওমর ইবনু খাত্ত্বাব (রাঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর আদর্শকে অনুকরণ করে নিজে তালি ও জোড়া লাগানো কাপড় পরিধান করতেন। কারণ তিনি একজন রাষ্ট্রপ্রধান। জনগণ মনে করতে পারে যে, ওমর রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অর্থ নিয়ে নিত্য নতুন ও উন্নত মানের পোষাক পরিধান করছেন। একদিন একজোড়া পোষাক পরিধান করায় তিনি প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিলেন। কারণ তখনও তিনি জনগণকে একটি করে জামা দিতে পেরেছিলেন। একজোড়া দিতে পারেননি।

যেমন বিভিন্ন আছারে এসেছে, عَنْ أَنَس بْن مَالِكٍ: رَأَيْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ وَهُوَ يَوْمَئِذٍ أَمِيرُ الْمُؤْمِنِينَ وَقَدْ رَقَّعَ بَيْنَ كَتِفَيْهِ أُرَاهُ أَرْبَعَ رِقَاعٍ بَعْضُهَا فَوْقَ بَعْضٍ- আনাস বিন মালেক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-কে দেখেছি যখন তিনি মুসলিম বিশ্বের আমীর ছিলেন, যে তাঁর দুই কাঁধের মাঝে তালি লাগিয়ে রেখেছেন। আমি দেখেছি চারটি মতান্তরে তিনটি স্থানে তালি লাগানো যা একটির উপর আরেকটি রিপু করা আছে’।[21] অন্য বর্ণনায় রয়েছে, আনাস বিন মালেক বলেন, رَأَيْتُ عَلَى عُمَرَ إِزَارًا فِيهِ أَرْبَعَ عَشْرَةَ رُقْعَةً بَعْضُهَا مِنْ أَدَمٍ. ‘আমি ওমর (রাঃ)-কে একটি চাদর পরিহিত অবস্থায় দেখেছি যাতে ১৪টি তালি লাগানো ছিল, যার মধ্যে কিছু চামড়ার তালি ছিল’।[22]

অন্যত্র এসেছে, وعن أنس قال: كنا عند عمر بن الخطاب رضي الله عنه وعليه قميص فيه أربع رقاع، فقرأ: {وَفَاكِهَةً وَأَبّاً}ثم قال: ما الأبّ؟، ثم قال: إن هذا لهو التكلف، وما عليك أن لا تدري ما الأبّ- আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা আমরা ওমর বিন খাত্ত্বাব (রাঃ)-এর নিকট ছিলাম। তখন তিনি একটি জামা পরে ছিলেন যাতে চারটি তালি ছিল। এরপর তিনি পড়লেন, এবং ফল-মূল ও ঘাস-পাতা (আবাসা ৮০/৩১)। এরপর তিনি বললেন, ঘাস-পাতা কী? এরপর বললেন, এটা কৃত্রিমতা ছাড়া কিছুই নয়। এটা গ্রহণীয় নয় যে, তুমি ঘাস-পাতা সম্পর্কে জানবেনা’।[23]

অন্যত্র এসেছে, وعن أبي عثمان النهدي، قال:رأيت عمر قد رقع إزاره بقطعة من أدمٍ- আবু ওছমান আন-নাহদী হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ওমর (রাঃ)-এর লুঙ্গি দেখেছি যাতে চামড়া দিয়ে জোড়া লাগানো ছিল’।[24] তিনি আরো বলেন, رأيت عمر بن الخطاب رضي الله عنه يطوف بالبيت، وعليه إزار، عليه اثنتا عشرة رقعة، إحداهن بأدم أحمر- ‘আমি ওমর (রাঃ)-কে ইযার পরিহিত অবস্থায় বায়তুল্লাহ ত্বাওয়াফ করতে দেখেছি যাতে বারোটি তালি লাগানো ছিল। যার একটি ছিল লাল চামড়া দিয়ে’।[25]

অন্যত্র এসেছে, عن ابن عمر يقول: والله ما شمل النبي صلى الله عليه وسلم في بيته، ولا خارج بيته ثلاثة أثواب، ولا شمل أبو بكر في بيته ثلاثة أثواب، غير أني كنت أرى كساهم إذا أحرموا كان لكل واحد منهم ميرز مشتمل، لعلها كلها بثمن درع أحدكم، والله لقد رأيت النبي صلى الله عليه وسلم يرقع ثوبه، ورأيت أبا بكر تخلل بالعباء، ورأيت عمر يرقع جبته برقاع من أدم، وهو أمير المؤمنين- ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর কসম রাসূল (ছাঃ) বাড়িতে বা বাড়ির বাইরে কখনো তিনটি কাপড় পরিধান করেননি। আবুবকর (রাঃ)ও বাড়িতে তিনটি কাপড় পরিধান করেননি। তবে আমি তাদের কাপড় দেখেছি যখন তারা ইহরাম বেঁধেছিলেন। তখন প্রত্যেকের স্বতন্ত্র লুঙ্গি ছিল, যেগুলো তোমাদের বর্মের এক অষ্টমাংশ হ’তে পারে। আল্লাহর কসম, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে তার জামা তালি দিতে দেখেছি। আর আবুবকর (রাঃ)-কে দেখেছি আবা দিয়ে নিজেকে আবৃত করতে এবং ওমর (রাঃ)-কে তার জুববায় চামড়া দিয়ে তালি দিতে। অথচ এসময় তিনি মুসলিম বিশ্বের আমীর ছিলেন’।[26]

অন্যত্র এসেছে, عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: كَانَ رَأْسُ عُمَرَ فِي حِجْرِي، فَقَالَ: يَا عَبْدَ اللَّهِ ضَعْ رَأْسِي بِالْأَرْضِ قَالَ: فَجَمَعْتُ رِدَائِي فَوَضَعْتُهُ تَحْتَ رَأْسِهِ، فَقَالَ: ضَعْ رَأْسِي بِالْأَرْضِ لَا أُمَّ لَكَ، ثُمَّ قَالَ: وَيْلُ عُمَرَ وَوَيْلُ أُمِّهِ إِنْ لَمْ يَغْفِرِ اللَّهُ لَهُ. ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, ওমর (রাঃ)-এর অন্তিমকালে তার মাথা আমার কোলে ছিল। তিনি বললেন, আমার মাথাটা মাটিতে রাখো। আমার চাদরটি ভাঁজ করে মাটিতে রেখে সেটির উপর তাঁর মাথা রাখলাম। তিনি বললেন, তোমার মায়ের অকল্যাণ হৌক, আমার মাথা মাটিতে রাখো। এরপর তিনি বললেন, ওমরের জন্য ধ্বংস, ওমরের মায়ের জন্য ধ্বংস যদি না আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন’।[27]

যে সম্পদ ছালাতের জামা‘আত পরিত্যাগ করার কারণ হয়ে দাঁড়ায় সে সম্পদকে ওমর (রাঃ) নিজের কাছে রাখেননি। তিনি একদিনের ঘটনার কারণেই ছামগে রক্ষিত সকল সম্পদ দান করে দেন।

যেমন বর্ণিত হয়েছে যে, عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ: أَنَّ عُمَرَ خَرَجَ إِلَى مَالِهِ بِثَمْغٍ فَاتَتْهُ الْعَصْرُ فَقَدَّمَ الْمُسْلِمُونَ رَجُلًا فَصَلَّى بِهِمْ، وَأَقْبَلَ عُمَرُ يُرِيدُ الصَّلَاةَ فَتَلَقَّاهُ النَّاسُ رَاجِعِينَ فَسَأَلَهُمْ. . . . مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا كُلُّ ذَلِكَ يَقُولُ: شَغَلَتْنِي ثَمْغٌ شَغَلَتْنِي، لَا تَكُونُ لِي فِي مَالٍ أَبَدًا، أُشْهِدُكُمْ أَنَّهَا صَدَقَةٌ لِلَّهِ সায়েব ইবনু ইয়াযিদ বলেন, একদা ওমর (রাঃ) তার ছামগে রক্ষিত সম্পদ দেখার জন্য বের হলেন। এদিকে আছরের সময় হয়ে গেল। মুসলমানেরা একজন লোককে ইমাম বানিয়ে ছালাত আদায় করে নিল। এরপর ওমর (রাঃ) ছালাত আদায় করার জন্য বের হলেন। লোকেরা প্রত্যবর্তনকালে তাঁর সাথে দেখা হ’লে দুই-তিনবার জিজ্ঞেস করল দেরী হওয়ার কারণ কি? প্রত্যেকবারই তিনি বলছিলেন ছামগের সম্পদ আমাকে ব্যস্ত রেখেছিল। আমার কোন সম্পদের প্রতি কখনো এতো মোহ ছিল না। আমি তোমাদের সাক্ষী রেখে বলছি, সেটি আল্লাহর জন্য ছাদাক্বা করে দিলাম’।[28]

অন্য বর্ণনায় এসেছে, عن قتادة ان عمر بن الخطاب رضي الله عنه ابطأ على الناس يوم الجمعة ثم خرج فاعتذر اليهم في احتباسه وقال انما حبسني غسل ثوبي هذا كان يغسل ولم يكن لي ثوب غيره- কাতাদা হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা ওমর (রাঃ) জুম‘আয় আসতে দেরী করলেন। তিনি জনসম্মুখে আসার সময় ওযর পেশ করে বলছিলেন, আমার এই জামাটি ধৌত করার কাজে আটকে গেছিলাম। তিনি জামাটি ধৌত করছিলেন। আর এটি ব্যতীত আমার কোন জামা ছিল না’।[29]

অন্যত্র এসেছে, وعن العُتْبيّ: بُعث إلى عمر رضي الله عنه بحلل فقسمها فأصاب كل رجل منا ثوب ثم صعد المنبر وعليه حلة والحلة ثوبان فقال: أيها الناس ألا تستمعون؟ فقال سلمان رضي الله عنه:لا نسمع. فقال عمر:ولِمَ يا أبا عبد الله؟"، قال: إنك قسمت علينا ثوباً ثوباً وعليك حلة"، فقال: "لا تعجل يا أبا عبد الله، ثم نادى عبد الله فلم يجبه أحد، فقال: يا عبد الله بن عمر"، فقال: "لبيك يا أمير المؤمنين"، قال: الثوب الذي اتزرت به هو ثوبك؟" قال:اللهم نعم. فقال سلمان: الآن فقل نسمع ঊতবী হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, একবার ওমর (রাঃ)-এর নিকট কিছু কাপড় পাঠানো হ’ল। তিনি সেগুলো লোকদের মাঝে বণ্টন করে দিলেন। প্রত্যেকে একটি করে জামা ভাগে পেল। এরপর খলীফা ওমর (রাঃ) খুতবা দিতে মিম্বারে আরোহন করলেন। তখন তার শরীরে দু’টি জামা ছিল। এরপর তিনি বললেন ‘হে লোকসকল! তোমরা কি শুনতে পাও?। তখন সালমান ফারেসী (রাঃ) বললেন, না, আমরা শুনব না। খলীফা ওমর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর বান্দা শুনবে না কেন? সালমান ফারেসী (রাঃ) বললেন, আপনি তো আমাদের মাঝে একটি করে কাপড় বণ্টন করেছেন, অথচ আপনার শরীরে দেখতে পাচ্ছি এক জোড়া। ওমর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর বান্দা! তাড়াহুড়ো না করে এই মজলিসে আমারই পুত্র আব্দুল্লাহ আছে, সে কি বলে তা শোন। তিনি আব্দুল্লাহ বলে ডাক দিলেন। কেউ ডাকে সাড়া দিলনা। তখন তিনি বললেন, হে আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর! লুঙ্গি হিসাবে যে কাপড়টি আমি পরিধান করেছি তা কি তোমার দেয়া নয়? তিনি ‘আল্লাহুম্মা’ বলে হ্যাঁ সূচক জবাব দিলেন। তখন সালমান ফারেসী বললেন, এখন আপনি বলুন আমরা শুনব’।[30] 

অন্য বর্ণনায় এসেছে, وعن عبد الله عامر بن ربيعة، قال: خرجت مع عمر ابن الخطاب رضي الله عنه حاجاً من المدينة إلى مكّة، إلى أن رجعنا، فما ضرب له فسطاطاً، ولا خباء، كان يلقي الكساء والنطع على الشجرة فيستظل تحته- আব্দুল্লাহ বিন আমের বিন রাবী‘আ হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা আমি ওমর বিন খাত্তাব (রাঃ)-এর সাথে হজ্জের উদ্দেশ্যে মদীনা থেকে মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। ফিরে আসা পর্যন্ত তার সাথেই ছিলাম। সফরকালীন তিনি কোন তাঁবু বা কোন শামিয়ানা খাটাননি। বরং তিনি গাছের উপরে কাপড় ও জামা রেখে দিয়ে তার ছায়াতলে অবস্থান করতেন’।[31]

ওমর ইবনু খাত্ত্বাব (রাঃ)-এর জীবনীতে এরূপ অসংখ্য ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, যা মুমিন জীবনের জন্য যুগ যুগ ধরে অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।

ওমর (রাঃ) এই মূল্যহীন দুনিয়াকে যেভাবে মূল্যায়ন করেছেন সেভাবে আমাদেরকে মূল্যায়ন করতে হবে। ধর্মীয় নেতা হৌক বা রাজনৈতিক নেতা হৌক প্রত্যেকে ওমর (রাঃ)-এর আদর্শ থেকে শিক্ষা অর্জন করতে পারে। তিনি যেভাবে সম্পদকে অকাতরে জনগণের মাঝে বিতরণ করে দিয়েছেন তা প্রত্যেক শাসকের জন্য অনুকরণীয়। প্রত্যেক প্রজার মুখে উন্নতমানের খাবার ও দেহে উন্নত পোষাক তুলে দিতে না পারায় তিনি নিজেও এ ধরনের খাবার ও পোষাক পরিহার করেছিলেন। আল্লাহ আমাদের সকলকে তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত হওয়ার তাওফীক দান করুন- আমীন!

(ক্রমশ)

 [লেখক : গবেষণা সহকারী, হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ]


[1]. মুছান্নাফে ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩২৬৭৫; আখবারে আছবাহান হা/২০৩।

[2]. মুছান্নাফে ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩২৬৭৩; আখবারে আছবাহান হা/২০৩।

[3]. ইমাম আহমাদ, আয-যুহুদ ১/১২৫-১২৬; হিলইয়াতুল আওলিয়া ১/৪৯, সনদ ছহীহ তবে ইনকেতা‘ রয়েছে, মাহযুছ ছাওয়াব..তাহক্বীক আব্দুল আযীয বিন মুহাম্মাদ; আব্দুস সালাম বিন মুহসিন, দিরাসাতুন নাক্বদিয়াতু ফী মারবিয়াতিল ওয়ারেদাতে ফী শাখছিয়াতে উমর ১/৩৪৩।

[4]. আবুদাউদ, আয-যুহুদ হা/৬৫; ইমাম আহমাদ, আয-যুহুদ ১/১১৫; ইবনু আবী আছেম হা/২৭৬; ইবনুল মুবারক হা/৭৬৮।

[5]. ইবনুল মুবারক, আয-যুহুদ হা/৭৬৮; জামে‘ মা‘মার বিন রাশেদ হা/৬৪৪।

[6]. বুখারী হা/২৩৩৪; আবুদাউদ হা/৩০২০।

[7]. তিরমিযী হা/২৩৮০; মিশকাত হা/৫১৯২; ছহীহাহ হা/২২৬৫।

[8]. আহক্বাফ ২০; মুয়াত্তা মালেক হা/১৭১০, ১৬৭৪।

[9]. আহক্বাফ ২০; ইবনু সা‘দ ৩/২৭৯; ইবনু মুবরাক, আয-যুহুদ হা/৫৭৯; তারীখে দেমাশ্ক ১৩/১০৬; ইবনুল জাওযী, মানাকিবে ওমর ১/১৩৭; হিলইয়াতুল আওলিয়া১/৪৯; মাহযুছ ছাওয়াব ২/৫৬৪, সনদ ছহীহ।

[10]. আবু নাঈম, হিলইয়াতুল আওলিয়া ১/৪৯; ইবনুল মুবারক, আয-যুহুদ হা/৫৭৯; ইবনু সা‘দ ৩/২৭৯ ; মহযুছ ছাওয়াব ২/৫৬৪।

[11]. ইবনুল জাওযী, মানাকিবে ওমর ১/১৪২; মহযুছ ছাওয়াব ২/৫৭২, সনদ মুরসাল।

[12]. বায়হাকী, শু‘আবুল ঈমান হা/১০৬০৫; আহমাদ, আয-যুহুদ ১/১২৫; তারীখে দেমাশক ৪৪/২৯০; হিলইয়াতুল আওলিয়া ১/৪৮; কানদ্ধালভী, হায়াতুছ ছাহাবা ৩/২২০; মহযুছ ছাওয়াব ২/৫৭৩, সনদ ছহীহ।

[13]. ইবনুল কাছীর, মুসনাদুল ফারূক হা/৯২৫; ইবনু সা‘দ ৩/২৭৮; ইবনুল জাওযী, মানাকিবে ওমর ১/১৪২; মহযুছ ছাওয়াব ২/৫৭৪, সনদ মুরসাল, তবে হাসান বছরীর মুরসাল সনদ গ্রহণযোগ্য।

[14]. ইবনু সা‘দ ৩/৩১৩; তারীখে দেমাশক্ব ১০/৪৪, ৪৪/৩৪৭; যাহাবী, তারীখুল ইসলাম৩/২৭৩; হিলইয়াতুল আওলিয়া ১/৪৮; দেরাসাতুন নাক্বদিয়াহ ২/৬১৪ ; মহযুছ ছাওয়াব ২/৫৬৭, সনদ ছহীহ।

[15]. বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৫৬২, সনদ ছহীহ।

[16]. ইমাম আহমাদ, আয-যুহুদ ১/১২১; ইবনুল জাওযী, মানাকিবে ওমর ১/১৪৪; মহযুছ ছাওয়াব ২/৫৭৬, সনদ ছহীহ।

[17]. মুসলিম হা/২০৬৯; ছহীহুত তারগীব হা/২২০৩।

[18]. ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩৩৫৮৮; হান্নাদ, আয-যুহুদ হা/৬৯৭; ইবনুল জাওযী, মানাক্বিবে ওমর (রা) ১/১৪৭; মহযুছ ছাওয়াব ২/৫৮০, সনদ ছহীহ।

[19]. ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩৫৫৯৪; ইবনুল মুবারক, আয-যুহুদ হা/৫৮৩; আবুদাউদ, আয-যুহুদ হা/৭৯।

[20]. ইবনু সা‘দ ৩/৩১৩; তারীখে দেমাশক ৪৪/৩৪৭; যাহাবী, তারীখুল ইসলাম৩/২৭৩; হিলইয়াতুল আওলিয়া ১/৪৮; দেরাসাতুন নাক্বদিয়াহ ২/৬১৪ ; মহযুছ ছাওয়াব ২/৫৬৭, সনদ ছহীহ।

[21]. মুয়াত্তা মালেক হা/১৬৭৩, ৩৪০০; ছহীহুত তারগীব হা/২০৮২, ৩২৯৯; আবুদাউদ, আয যুহুদ; ইবনু সা‘দ, আত-তাবাকাতুল কুবরা ৩/৩২৭; ইবনুল জাওযী, মানাকিবে ওমর ১/১৩৮

[22]. আবুদাউদ, আয-যুহুদ হা/৫৫; বায়হাকী, আল-মাদখাল হা/৪৪৬, ৫৫২; তারীখে দিমাশক্ব ১৩/১০৯; ইবনুল জাওযী ১/১৩৮; মহযুছ ছাওয়াব ২/৫৬৬

[23]. ইবনু সা‘দ ৩/৩২৭; ইবনুল জাওযী, মানাকিবে ওমর ১/১৩৮; মহযুছ ছাওয়াব ২/৫৬৫, সনদ ছহীহ।

[24]. ইবনু সা‘দ ৩/৩২৮; ইবনুল জাওযী, মানাকিবে ওমর ১/১৩৮; মহযুছ ছাওয়াব, সনদ হাসান।

[25]. ইবনু সা‘দ ৩/৩২৮; ইবনুল জাওযী, মানাকিবে ওমর ১/১৩৮; মহযুছ ছাওয়াব, সনদ ছহীহ।

[26]. তারীখে দিমাশক্ব ৪/২০৪; ইবনুল জাওযী, মানাকিবে ওমর ১/১০২, ১৩৩; আমরাযুন নাফস ১/৫৬; মহযুছ ছাওয়াব ২/৫৬৭।

[27]. ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩৮২২৯; ইবনুল মুবারক, আয-যুহুদ হা/৪৩৫; আবুদাউদ, আয-যুহুদ হা/৪৬; আবুবকর খাল্লাল, আস-সুন্নাহ ৩৬৩।

[28]. আবুদাউদ, আয-যুহুদ হা/৬৩; উমদাতুল কারী ১২/১৭৩ ; কাস্তালানী, ইরশাদুস সারী; ইবনুল মুলাক্কিন, আত-তাওযীহ ১৫/২০৪।

[29]. ইবনু সা‘দ ৩/৩১৯; আহমাদ, আয-যুহুদ ১/১৫৪; বালাযুরী, আনসাবুল আশরাফ ১/৩৩১; দিরাসাতুন নাকদিয়াহ ১/২৯১; মহযুছ ছাওয়াব ২/৫৬৬, সনদ ছহীহ।

[30]. ইবনু কুতায়বা, ঊযুনুল আখবার ১/২৩, ৫৫; ইবনুল জাওযী, মানাকিব ১/ ১৪০; ছিফাতুছ ছাফওয়া ১/৫৩৫; মহযুছ ছাওয়াব ২/৫৭৯; ইবনুল ক্বাইয়িম, ই‘লামুল মুয়াক্কিঈন ২/১৮০।

[31]. মুসনাদুল ফারূক হা/৩০৫; ইবনু আবী শায়বাহ হা/১৪২৫৪; বায়হাকী, সুনানুল কুবরা হা/৮৯৭৩; ইবনু সা‘দ ৩/২৭৯; মহযুছ ছাওয়াব ২/৫৬৯, সনদ ছহীহ।



আরও