হিংসা

তাওহীদের ডাক ডেস্ক 1528 বার পঠিত

আল-কুরআনুল কারীম :

1- وَلَقَدْ خَلَقْنَاكُمْ ثُمَّ صَوَّرْنَاكُمْ ثُمَّ قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ اسْجُدُوا لِآدَمَ فَسَجَدُوا إِلَّا إِبْلِيسَ لَمْ يَكُنْ مِنَ السَّاجِدِينَ- قَالَ مَا مَنَعَكَ أَلَّا تَسْجُدَ إِذْ أَمَرْتُكَ قَالَ أَنَا خَيْرٌ مِنْهُ خَلَقْتَنِي مِنْ نَارٍ وَخَلَقْتَهُ مِنْ طِينٍ-

(১) ‘আমরা তোমাদেরকে (অর্থাৎ আদমকে) সৃষ্টি করেছি। অতঃপর আকৃতি দান করেছি। অতঃপর ফেরেশতাদের বলেছি তোমরা আদমকে সিজদা কর। অতঃপর তারা সিজদা করেছে ইবলীস ব্যতীত। সে সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। আল্লাহ বললেন, আমি যখন তোমাকে নির্দেশ দিলাম, তখন কোন বস্ত্ত তোমাকে বাধা দিল যে তুমি সিজদা করলে না? সে বলল, আমি তার চেয়ে উত্তম। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন আগুন থেকে এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে’ (আ‘রাফ ৭/১১-১২)

2- وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ ابْنَيْ آدَمَ بِالْحَقِّ إِذْ قَرَّبَا قُرْبَانًا فَتُقُبِّلَ مِنْ أَحَدِهِمَا وَلَمْ يُتَقَبَّلْ مِنَ الْآخَرِ قَالَ لَأَقْتُلَنَّكَ قَالَ إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللَّهُ مِنَ الْمُتَّقِينَ- لَئِنْ بَسَطْتَ إِلَيَّ يَدَكَ لِتَقْتُلَنِي مَا أَنَا بِبَاسِطٍ يَدِيَ إِلَيْكَ لِأَقْتُلَكَ إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ رَبَّ الْعَالَمِينَ-

(২) ‘(হে নবী!) তুমি লোকদের নিকট আদমের দুই পুত্রের ঘটনা সত্য সহকারে বর্ণনা কর। যখন তারা কুরবানী পেশ করে। অতঃপর একজনের কুরবানী কবুল হয়, কিন্তু অপর জনের কুরবানী কবুল হয়নি। তখন সে বলল, আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব। জবাবে সে বলল, আল্লাহ তো কেবল মুত্তাক্বীদের কুরবানী কবুল করে থাকেন’। ‘যদি তুমি আমার দিকে হাত বাড়াও আমাকে হত্যা করার জন্য, আমি তোমাকে হত্যা করার জন্য তোমার দিকে হাত বাড়াবো না। আমি বিশ্ব চরাচরের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করি’ (মায়েদাহ ৫/২৭-২৮)।

3- وَدَّ كَثِيرٌ مِّنْ أَهْلِ الْكِتَابِ لَوْ يَرُدُّونَكُم مِّن بَعْدِ إِيمَانِكُمْ كُفَّاراً حَسَداً مِّنْ عِندِ أَنفُسِهِم مِّن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ الْحَقُّ فَاعْفُواْ وَاصْفَحُواْ حَتَّى يَأْتِيَ اللهُ بِأَمْرِهِ إِنَّ اللهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ-

(৩) ‘সত্য প্রকাশিত হওয়ার পরেও অন্তর্নিহিত বিদ্বেষ বশতঃ আহলে কিতাবদের অনেকে তোমাদেরকে ঈমান আনার পরেও কাফির বানাতে চায়। এমতাবস্থায় তোমরা ওদের ক্ষমা কর এবং এড়িয়ে চল আল্লাহর আদেশ না আসা পর্যন্ত। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছুর উপরে ক্ষমতাবান’ (বাক্বারাহ ২/১০৯)।

4- أَمْ يَحْسُدُونَ النَّاسَ عَلَى مَا آتَاهُمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ فَقَدْ آتَيْنَا آلَ إِبْرَاهِيمَ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَآتَيْنَاهُمْ مُلْكًا عَظِيمًا- َمِنْهُمْ مَنْ آمَنَ بِهِ وَمِنْهُمْ مَنْ صَدَّ عَنْهُ وَكَفَى بِجَهَنَّمَ سَعِيرًا-

(৪) ‘তবে কি তারা লোকদের (মুসলমানদের) প্রতি এজন্য হিংসা করে যে, আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহ থেকে তাদের কিছু দান করেছেন। আর আমরা তো ইবরাহীমের বংশধরগণকে কিতাব ও হিকমত দান করেছিলাম এবং তাদেরকে দান করেছিলাম বিশাল সাম্রাজ্য। অনন্তর তাদের মধ্যে কেউ তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং অনেকেই তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। বস্ত্ততঃ তাদের জন্য জাহান্নামের লেলিহান অগ্নিই যথেষ্ট ’ (নিসা ৪/৫৪-৫৫)।

হাদীছে নববী :

5- عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ تَقَاطَعُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَحَاسَدُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا وَلاَ يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلاَثٍ.

(৫) হযরত আনাস বিন মালেক (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন ‘তোমরা পরস্পরে বিদ্বেষ করো না, হিংসা করো না, একে অপরকে পরিত্যাগ করো না, একে অপরের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করো না। তোমরা পরস্পরে আল্লাহর বান্দা হিসাবে ভাই ভাই হয়ে যাও। কোন মুসলমানের তিনদিনের বেশী কথা পরিত্যাগ করা বৈধ নয়’।[1]

6- عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُفْتَحُ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْاثْنَيْنِ وَيَوْمَ الْخَمِيسِ فَيُغْفَرُ لِكُلِّ عَبْدٍ لَا يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا إِلَّا رَجُلٌ كَانَتْ بَيْنَهُ وَبَيْنَ أَخِيهِ شَحْنَاءُ. فَيُقَالُ: أَنْظِرُوا هَذَيْنِ حَتَّى يَصْطَلِحَا-

(৬) হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজা সমূহ খোলা হয়। এ দু’দিন বান্দার আমলনামা আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়। অতঃপর আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করেনি এমন সবাইকে মাফ করা হয়। কেবল ঐ দু’জন ব্যতীত যাদের পরস্পরের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ বিদ্যমান রয়েছে। বলা হয়, এদের ছাড়, যতক্ষণ না এরা আপোষে মীমাংসা করে নেয়’।[2]

7- عَنِ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَبَّ إِلَيْكُمْ دَاءُ الأُمَمِ قَبْلَكُمُ الْحَسَدُ وَالْبَغْضَاءُ هِىَ الْحَالِقَةُ لاَ أَقُولُ تَحْلِقُ الشَّعْرَ وَلَكِنْ تَحْلِقُ الدِّينَ وَالَّذِى نَفْسِى بِيَدِهِ لاَ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا وَلاَ تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا أَفَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِمَا يُثَبِّتُ ذَاكُمْ لَكُمْ أَفْشُوا السَّلاَمَ بَيْنَكُمْ.

(৭) যুবায়ের ইবনুল ‘আওয়াম (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতগণের রোগ তোমাদের মধ্যে গোপনে প্রবেশ করবে। আর তা হ’ল হিংসা ও বিদ্বেষ, যা সবকিছুর মুন্ডনকারী। আমি বলছি না, চুল মুন্ডনকারী। বরং তা হবে দ্বীনকে মুন্ডনকারী। যার হাতে আমার জীবন তার কসম করে বলছি, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে না যতক্ষণ না ঈমান আনবে। আর তোমরা ঈমানদার হবে না যতক্ষণ না পরস্পরকে ভালবাসবে। আমি কি তোমাদের খবর দিব না, কোন বস্ত্ত তোমাদের মধ্যে ভালবাসাকে দৃঢ় করবে? তোমরা পরস্পরে বেশী বেশী সালাম কর’।[3]

8- عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِيَّاكُمْ وَسُوءَ ذَاتِ الْبَيْنِ فَإِنَّهَا الْحَالِقَةُ.

(৮) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা পরস্পর বিদ্বেষ সৃষ্টি থেকে বিরত থাকবে, কেননা এ-ই হ‘ল দ্বীন ধ্বংসকারী বিষয়।

9- عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ يَجْتَمِعَانِ فِى النَّارِ مُسْلِمٌ قَتَلَ كَافِرًا ثُمَّ سَدَّدَ وَقَارَبَ وَلاَ يَجْتَمِعَانِ فِى جَوْفِ مُؤْمِنٍ غُبَارٌ فِى سَبِيلِ اللَّهِ وَفَيْحُ جَهَنَّمَ وَلاَ يَجْتَمِعَانِ فِى قَلْبِ عَبْدٍ الإِيمَانُ وَالْحَسَدُ.

(৯) আবু হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, যে মুসলিম কোন কাফেরকে হত্যা করে নিজেও সঠিক পথে চলেছে, সে এবং ঐ কাফের জাহান্নামে একত্রিত হবে না। কোন মুমিনের অন্তরে আল্লাহর পথের ধুলা এবং জাহান্নামের উত্তাপ একত্রিত হবে না। অনুরূপ কোন বান্দার অন্তরে ঈমান ও হিংসা একত্রিত হতে পারে না’।[4]

10- عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَىُّ النَّاسِ أَفْضَلُ قَالَ كُلُّ مَخْمُومِ الْقَلْبِ صَدُوقِ اللِّسَانِ. قَالُوا صَدُوقُ اللِّسَانِ نَعْرِفُهُ فَمَا مَخْمُومُ الْقَلْبِ قَالَ هُوَ التَّقِىُّ النَّقِىُّ لاَ إِثْمَ فِيهِ وَلاَ بَغْىَ وَلاَ غِلَّ وَلاَ حَسَدَ.

(১০) আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) বলেন, একদা মহানবী (ছাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হ’ল, সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ লোক কে? উত্তরে তিনি বললেন, সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ লোক হ’ল সেই, যার হৃদয় হ‘ল পরিষ্কার এবং জিহবা হ’ল সত্যবাদী। জিজ্ঞাসা করা হ‘ল, পরিষ্কার হৃদয়ের অর্থ কী? বললেন, যে হৃদয় সংযমশীল, নির্মল, যাতে কোন পাপ নেই, অন্যায় নেই, ঈর্ষা ও হিংসা নেই। জিজ্ঞাসা করা হ’ল, তারপর কে? বললেন, যে দুনিয়াকে ঘৃণা করে এবং আখেরাতকে ভালোবাসে। জিজ্ঞাসা করা হ’ল, তারপর কে? বললেন, সুন্দর চরিত্রের মুমিন’।[5]

11- عَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ وَالَّذِى نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى يُحِبَّ لأَخِيهِ مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ مِنَ الْخَيْرِ.

(১১) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, মুহাম্মাদ এর প্রাণ যার হাতে তাঁর কসম! তোমাদের কেউ পূর্ণ মু’মিন হবে না, যে পর্যন্ত না সে নিজের ভাইয়ের জন্য সেই কল্যাণ পসন্দ করবে, যা সে নিজের জন্য পসন্দ করে থাকে’।[6]

12- عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ تَحَاسَدُوا وَلاَ تَنَاجَشُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ يَبِعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْعِ بَعْضٍ وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا. الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ لاَ يَظْلِمُهُ وَلاَ يَخْذُلُهُ وَلاَ يَحْقِرُهُ. التَّقْوَى هَا هُنَا. وَيُشِيرُ إِلَى صَدْرِهِ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ بِحَسْبِ امْرِئٍ مِنَ الشَّرِّ أَنْ يَحْقِرَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ دَمُهُ وَمَالُهُ وَعِرْضُهُ.

(১২) আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন: পরস্পর হিংসা করো না, একে অপরের জন্য নিলাম ডেকে দাম বাড়াবে না, পরস্পর বিদ্বেষ পোষণ করো না, একে অপর থেকে আলাদা হয়ে যেও না, একজনের ক্রয়ের উপর অন্যজন ক্রয় করো না। হে আল্লাহর বান্দাগণ! পরস্পর ভাই ভাই হয়ে যাও। মুসলিম মুসলিমের ভাই, সে তার উপর যুলুম করে না এবং তাকে সঙ্গীহীন ও সহায়হীনভাবে ছেড়ে দেয় না। সে তার কাছে মিথ্যা বলে না ও তাকে অপমান করে না। তাক্বওয়া হচ্ছে, এখানে, তিনি নিজের বুকের দিকে তিনবার ইশারা করেন। কোন মানুষের জন্য এতটুকু মন্দ যথেষ্ট যে, সে আপন মুসলিম ভাইকে নীচ ও হীন মনে করে। এক মুসলিমের রক্ত, সম্পদ ও মান-সম্মান অন্য মুসলিমের জন্য হারাম’। [7]

মনীষীদের বক্তব্য :

১. ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, ‘হিংসুক ব্যক্তি ইবলীসের ন্যায়। সে শয়তানের অনুসারী। কেননা সে শয়তানের চাহিদা মত সমাজে বিশৃংখলা ও অশান্তি সৃষ্টি করতে চায় এবং অন্যের উপর আল্লাহ্ও দেয়া নে‘মতসমূহের ধ্বংস কামনা করে। যেমন ইবলীস আদমের উচ্চ মর্যাদা ও তার শ্রেষ্ঠত্বকে হিংসা করেছিল এবং তাকে সিজদা করতে অস্বীকার করেছিল। অতএব হিংসুক ব্যক্তি ইবলীসের সেনাবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত’।[8]

২. আবু হাতেম দারেমী (রহঃ) বলেন, হিংসা হ’ল নিকৃষ্ট ব্যক্তিদের চরিত্র এবং তা পরিত্যাগ করা হ’ল মর্যাদাবান ব্যক্তিদের কর্ম। আর প্রত্যেক আগুনের নির্বাপক আছে। কিন্তু হিংসার আগুন নির্বাপিত হয় না’।[9]

সারবস্ত্ত :

১. হিংসুক ব্যক্তি অপরের ক্ষতি করার চেয়ে নিজের অজান্তে হিংসার আগুনে নিজেকেই বেশী দগ্ধ করে থাকে।

২. হিংসা শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। কিন্তু দয়া, ভালবাসা ও সহমর্মিতা মহান আল্লাহর দান। সুতরাং হিংসুক পরোক্ষভাবে শয়তানকেই খুশী করে।

৩. হিংসা এমন এক অভিশাপ যা হিংসুককে তিলে তিলে জাহান্নামের পথে ঠেলে দেয়।

৪. হিংসার সবচেয়ে খারাপ পরিণতি হল, সে অন্য মানুষকেও নিজের মত ভাবতে থাকে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

৫. হিংসুকরা হিংসার কারণে সমাজে ধিকৃত ও লাঞ্চিত হয় এবং ইতিহাসের আস্তাকুড়ায় নিক্ষিপ্ত হয়। ফলে আবহমানকাল তারা সাধারণত মানুষের লা‘নতের খোরাকে পরিণত হয়।


[1]. তিরমিযী হা/১৯৩৫।

[2].মুসলিম হা/২৫৬৫; মিশকাত হা/৫০২৯।

[3]. তিরমিযী হা/২৫১০, মিশকাত হা/৫০৩৯, হাদীছ হাসান ।

[4]. নাসাঈ হা/৩১০৯; ত্বাবারানী কাবীর হা/১৪৪; ইবনে হিববানহা/৪৬০৬।

[5]. ইবনে মাজাহ হা/৪২১৬, ছহীহুল জামে‘ হা/ ৩২৯১।

[6]. নাসাঈ হা/ ৫০১৭;ছহীহাহহা/৭৩।

[7]. মুসলিম হা/২৫৬৪; মিশকাত হা/৪৯৫৯।

[8].ইবনুল ক্বাইয়িম, বাদায়ে‘উল ফাওয়ায়েদ ২/২৩৪।

[9]. আবু হাতেম দারেমী, রওযাতুল উক্বালা ১৩৪ পৃ. ।



বিষয়সমূহ: পাপ
আরও