দক্ষিণ এশিয়ায় আহলেহাদীছ আন্দোলন

প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব 500 বার পঠিত

আধুনিক যুগ : ১ম পর্যায়

(১১১৪-৯৩/১৭০৩-৭৯) ৬৫ বৎসর

১১১৪/১৭০৩ খৃষ্টাব্দের পরবর্তী অলিউল্লাহ যুগ[1] :

খৃষ্টীয় অষ্টাদশ শতকের পূর্ব থেকেই রাজধানী দিল্লীসহ ভারতবর্ষের অন্যান্য এলাকার মুসলমানদের ধর্মীয় ও সামাজিক অবস্থা এক নাযুক পর্যায়ে উপনীত হয়েছিল। ইসলামের কেবল নাম বাকী ছিল। কুরআনের তরজমা নিষিদ্ধ ছিল। ইল্মে হাদীছের চর্চা বন্ধ ছিল। দরবারী আলিমদের চালুকৃত ফৎওয়ার বিরোধিতা করা রীতিমত দুঃসাহসের ব্যাপার ছিল। খান্ক্বাহ ও দরগাহের বিদ‘আতী পীরদের আশীর্বাদ-অভিশাপই যেন মানুষের ভাগ্য নিয়ন্তা হয়ে উঠেছিল। জ্যোতিষীর গণনা ছাড়া রাজা-বাদশারাও বড় কোন কাজে হাত দিতেন না। তাছাউওফের নামে শতাধিক দল, দেহতত্ত্বের নামে প্রায় অর্ধশত দল এবং নবাবিষ্কৃত হাক্বীক্বত, তরীকত ও মা‘রেফাতের ধুম্রজালে শরী‘আতের স্বচ্ছ আলো থেকে মানুষ বঞ্চিত ছিল। হিন্দু ও মুসলমানের পার্থক্য প্রায় মুছে গিয়েছিল। সংস্কারের যে বীজ শায়খ আহমাদ সারহিন্দ (৯৭১-১০৩৪/১৫৬৪-১৬২৪ খৃঃ) বপন করেছিলেন, শতবর্ষের ব্যবধানে তা স্তিমিত হয়ে এসেছিল। সম্রাটের প্রাসাদ হ’তে গরীবের পর্ণকুটীর পর্যন্ত বিস্তৃত কুসংস্কারের মূল উৎপাটনের জন্য সমগ্র সমাজ একজন দূরদর্শী চিন্তানায়ক ও সমাজবিপস্নবীর আগমনের জন্য উন্মুখ হয়ে ছিল। এমনি অবস্থায় আল্লাহর অপার অনুগ্রহে ‘ফৎওয়ায়ে আলমগীরী’র অন্যতম সংকলক ও দিল্লীর মাদরাসা রহীমিয়ার প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা আবদুর রহীমের ঔরসে জন্ম গ্রহণ করেন অষ্টাদশ শতকে হিন্দ উপমহাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ায় আহলেহাদীছ আন্দোলনের মূল প্রেরণা সৃষ্টিকারী ও আধুনিক যুগের অগ্রনায়ক কুতুবুদ্দীন আহমাদ বিন আবদুর রহীম ফারূকী ওরফে শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলভী (১১১৪-১১৭৬/১৭০৩-১৭৬২)। পরবর্তীতে তাঁর স্বনামধন্য পৌত্র শাহ ইসমাঈল বিন শাহ আবদুল গণী বিন শাহ অলিউল্লাহ (১১৯৩-১২৪৬/১৭৭৯-১৮৩১ খৃঃ) পরিচালিত জিহাদ আন্দোলনের মাধ্যমে যা একটি বাস্তব সামাজিক বিপস্নবের রূপ নেয় এবং উপমহাদেশে আহলেহাদীছ আন্দোলনের জোয়ার সৃষ্টি করে।

ইসলামী পুনর্জাগরণে অলিউল্লাহর অবদান :

১- ইল্মে তাফসীর

কুরআনের শিক্ষাকে সকলের সহজবোধ্য করার জন্য তিনি কুরআন বুঝার পদ্ধতি বিষয়ে বই লেখেন ও ফারসীতে কুরআনের তরজমা প্রকাশ করেন। এই অপরাধে (?) দিল্লীর আলেম সমাজ তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।[2]

২- ইল্মে হাদীছ

তখনকার সময়ে সরকারীভাবে কাযী ও মুফতী নিযুক্ত হওয়ার জন্য ফিক্হ ও মা‘কূলাতের ইল্মে পারদর্শী হওয়া যরূরী ছিল। সেকারণে ইল্মে হাদীছ ও তাফসীরের প্রতি বাড়তি মনোযোগ দেওয়ার ফুরসত কারু ছিলনা। শাহ অলিউল্লাহ মাদরাসা রহীমিয়াহ্তে ইল্মে কুরআন ও হাদীছের নিয়মিত দারস শুরু করেন। তিনি (১) হাদীছের যাচাই-বাছায়ের ক্ষেত্রে একটি স্থায়ী নিয়মনীতি প্রণয়ন করেন। যার ফলে মাসায়েল খুঁজে বের করতে সুবিধা হয়। এ ব্যাপারে তিনি ‘সনদ’কে মানদ- হিসাবে গ্রহণ করেন ও সে অনুযায়ী হাদীছ গ্রন্থসমূহের স্তর বিন্যাস করেন। এর ফলে ছহীহ হাদীছ হ’তে সমাধান পাওয়া সহজতর হয় (২) তিনি সবসময় হাদীছের সূক্ষ্ম তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতেন। ‘হুজ্জাতুল্লাহ’-র ছত্রে ছত্রে যার প্রমাণ মেলে। এর ফলে হাদীছের প্রতি জনগণের আগ্রহ বৃদ্ধি পায় (৩) যে সকল হাদীছ বাহ্যিকভাবে পরস্পর বিরোধী মনে হ’ত, শাহ ছাহেব সেগুলির এমন সুন্দরভাবে সামঞ্জস্য বিধান করতেন যে, কোন বিরোধ বাকী থাক্ত না। ‘ইযালাতুল খাফা’ প্রভৃতি গ্রন্থে তার প্রমাণ মেলে। এর ফলে হাদীছ সম্পর্কে উত্থাপিত অহেতুক সন্দেহবাদ দূর হয়।

৩-ফিক্হের খিদমত

প্রচলিত চার মাযহাবের মধ্যকার বিরোধীয় মাসআলা সমূহের সামঞ্জস্য বিধানে শাহ ছাহেব মূল্যবান অবদান রাখেন। তিনি বলতেন, ‘হানাফী ও শাফেঈ দুই মাযহাবের ঐসব বিষয়কে টিকিয়ে রাখা হৌক যেগুলির সঙ্গে হাদীছের মিল আছে এবং ঐগুলিকে বাদ দেওয়া হৌক যেগুলির কোন ভিত্তি নেই।[3]... তিনি বলেন, ‘হাদীছের শব্দ হ’তে যে অর্থ বুঝা যায়, তার উপরে স্থির থাকতে হবে। কোন দূরতম ব্যাখ্যা বা ‘তাবীল’ করা যাবেনা। এক হাদীছ দ্বারা আরেক হাদীছকে বাতিল করা যাবে না। কারু কথা অনুযায়ী কোন ছহীহ হাদীছ পরিত্যাগ করা যাবেনা।[4] তাঁর দ্বিতীয় অছিয়ত হ’ল- ‘আমি চার মাযহাবের বাইরে যাব না। এগুলির মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করব। প্রকৃত অবস্থা এই যে, আমার তবিয়ত তাক্বলীদকে অস্বীকার করে এবং তা থেকে একেবারেই মুখ ফিরিয়ে নেয়।[5]

৪- তাছাউওফের খিদমত

শরী‘আত ও তরীকতের মধ্যে প্রচলিত দ্বৈত চিন্তাধারার অবসান ঘটানোর জন্য শাহ ছাহেব সুক্ষ্ম বুদ্ধিমত্তার আশ্রয় নিয়ে ‘লত্বীফায়ে জাওয়ারিহ’ (لطيفه جوارح) বা অংগ-প্রত্যংগের লত্বীফা নামে প্রচলিত জ্ঞানের, আত্মার ও নফসের লত্বীফার সাথে চতুর্থ আরেকটি লত্বীফার প্রস্তাব রাখেন। কারণ শাহ ছাহেব প্রচলিত ছূফীবাদের ধারণা অনুযায়ী মানুষকে যাহেরী ও বাতেনী দ্বৈতশক্তির পৃথক সত্তাধিকারী বিবেচনা না করে মানবদেহের সকল শক্তির পারস্পরিক ঐক্যে বিশ্বাসী ছিলেন। মৃত্যুমুখে পতিত একটি বৃদ্ধ উটের উদাহরণ দিয়ে শাহ ছাহেব বলেন, শরী‘আত কোন ব্যক্তির আমলের হিসাব অতক্ষণ পর্যন্ত গ্রহণ করবে যতক্ষণ তার অংগ-প্রত্যংগ তথা ‘লত্বীফায়ে জাওয়ারিয়হ’ চালু থাকবে। যেমন উক্ত উটের সকল লত্বীফা অতক্ষণ পর্যন্ত চালু ছিল, যতক্ষণ তা অংগ-প্রত্যংগের লত্বীফাটি চালু ছিল।[6] শাহ ছাহেবের এই প্রচেষ্টার ফলে শরী‘আতের আলিম ও মা‘রেফাতের পীর-আউলিয়াদের মধ্যকার দূরত্ব অনেকটা কমে আসে।

৫- শরী‘আত ব্যাখ্যা ক্ষেত্রে অবদান

যুগ যুগ ধরে মুজতাহিদগণের মধ্যে শরী‘আতের ব্যাখ্যাগত বিষয়ে আহলুলহাদীছ ও আহলুর রায়-এর দু’টি ধারা চলে আসছে। শাহ অলিউল্লাহ এক্ষেত্রে সমসাময়িক ভারতীয় আলিমদের বিপরীতে সালাফে ছালেহীন ও ফুক্বাহায়ে মুহাদ্দিছীনের তরীকা অনুসরণ করেন,[7] যা দিল্লীর আলিমদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করে ও সর্বত্র আমল বিল-হাদীছের প্রতি আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়।

এতদ্ব্যতীত কোন বিষয়ে ছহীহ গায়র মান্সূখ হাদীছ মওজুদ থাকতে কোন নির্দিষ্ট একটি মাযহাবের তাক্বলীদ করার বিরুদ্ধে তিনি বিভিন্নভাবে তাঁর মত প্রকাশ করেছেন। এই সকল বক্তব্যে তিনি মুসলিম উম্মাহকে সর্বদা নিরপেক্ষভাবে ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী জীবন পরিচালনার তাকীদ দিয়েছেন। তিনি তাক্বলীদপন্থী ফক্বীহ ও কট্টরপন্থী যাহেরী (LITERALIST) উভয়ের মধ্যবর্তী পথ অবলম্বন করতে উপদেশ দিয়েছেন।[8]

বাহ্যিক আমলগত ব্যাপারও তিনি তাঁর লেখনীর মধ্যে মুহাদ্দিছীনের তরীকা সমর্থন করেছেন কখনও সরাসরিভাবে কখনো পরোক্ষভাবে। যেমন ছালাতে রাফ্উল ইয়াদায়েন করা, ইমামের পিছনে সূরায়ে ফাতিহা পাঠ করা, সরবে আমীন বলা ইত্যাদি।[9] এ ব্যাপারে আল্লামা ফাখের যায়ের এলাহাবাদীর (১১২০-৬৪/১৭০৮-৫১ খৃঃ) সাথে তাঁর সরস আলোচনা খুবই প্রসিদ্ধ।[10]

৬. অলিউল্লাহর রাজনৈতিক দর্শন

শাহ অলিউল্লাহ জাতি ও সমাজকে একটি ব্যক্তিসত্তা হিসাবে কল্পনা করেন-যা একটি সুনির্দিষ্ট নিয়মের অধীনে পরিচালিত হয়। দেহের কোন একটি অংশে রোগ সংক্রমণ হলে যেমন সমস্ত দেহ রোগগ্রস্থ হয়, তেমনিভাবে সমাজের কোন সদস্যের অন্যায়াচরণের ফলে সমাজদেহ সংক্রমিত হয়। অতএব সমাজদেহকে সুস্থ রাখার জন্য সমাজের জ্ঞানী ও নেতৃস্থানীয় লোকদের মধ্য হতে সৎ ও আমানতদার একজনকে সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল নিয়োগ করতে হবে-যিনি দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের যথেষ্ট ক্ষমতার অধিকারী হবেন। সুষ্ঠু নীতিমালার ভিত্তিতে তিনি সমাজ শাসন ও পরিচালনা করবেন। এ ব্যাপারে শাহ ছাহেব কুরআনকে মূল হেদায়াত হিসাবে গণ্য করে ইল্মে হাদীছ, ইজমা ও বিগত মুজতাহিদগণের উক্তি সমূহকে সামনে রাখতে উপদেশ দিয়েছেন। তৎকালীন দিল্লীর ঘুণে ধরা মুসলিম শাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ফাক্কু কুল্লি নিযাম’ (فك كل نظام) ‘সকল ব্যবস্থার উৎসাদন’ চাই।[11] দূরদর্শী চিন্তানায়ক হিসাবে তিনি ভারতবর্ষের রাজনৈতিক ক্ষমতা থেকে মুসলমানদের বিদায় ঘণ্টা শুনতে পেয়েছিলেন। মারাঠাদের বাড়াবাড়ি চরমে উঠ্লে তিনি ইরানের দুর্ধর্ষ শাসক নাদির শাহের (১৭৩২-৪৭ খৃঃ) খ্যাতনামা সেনাপতি আফগান বীর আহমাদ শাহ আবদালীকে (১৭৪৮-৬৭ খৃঃ) ডেকে এনে তাদেরকে উৎখাত করেন। অতঃপর আপামর মুসলিম জনসাধারণকে তিনি জিহাদের পথে উদ্বুদ্ধ করেন। ‘হুজ্জাতুল্লাহ্’র ২য় খ-- তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন যে, মুসলমানদের মধ্যে যতদিন জিহাদের জায্বা ছিল, ততদিন তারা সকলক্ষেত্রে বিজয়ী ছিল। কিন্তু যখন থেকে এই জায্বা স্তিমিত হয়েছে, তখন থেকে তারা সর্বত্র লজ্জিত ও ধিকৃত হচ্ছে।[12] শিরক ও বিদ‘আতের আচ্ছন্ন স্রোতে ভেসে চলা মুসলিম সমাজকে মূল তাওহীদী আক্বীদায় ফিরিয়ে আনার জন্য এবং সকল ফিক্বহী কূটতর্ক ও ঝগড়া পরিহার করে নিরপেক্ষভাবে কুরআন ও ছহীহ হাদীছের ফায়ছালা অবনতমস্তকে মেনে নিয়ে তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ সমাজশক্তিতে পরিণত করার জন্য তিনি নিরলস লেখনী পরিচালনার সাথে সাথে মাদরাসা রহীমিয়াতে ইল্ম ও আমলের বাস্তব নমুনা হিসাবে যেসব মর্দে মুজাহিদ সৃষ্টি করেছিলেন,[13] তাদেরই বিপস্নবী উত্তরসূরীগণ পরবর্তীতে ‘দাওয়াত ও জিহাদের’ কর্মসূচী নিয়ে বালাকোট, মুল্কা, সিত্তানা, আসমাস্ত, চামারকান্দ, বাঁশের কিল্লার রক্ত রঞ্জিত জিহাদী ইতিহাস সৃষ্টি করেন। যার বাস্তব ফলশ্রুতিই হ’ল বর্তমানে উপমহাদেশের স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্রগুলি। এক্ষণে বাকী রয়েছে কেবল অলিউল্লাহ দর্শনের প্রধান অংশ-‘সকল ব্যবস্থার উৎসাদন এবং কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর ভিত্তিতে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন’-যা আহলেহাদীছ আন্দোলনের মূল লক্ষ্য।[14]

শাহ ছাহেবের মৃত্যুর পর তাঁর স্বনামধন্য চার পুত্র শাহ আবদুল আযীয (১১৫৯-১২৩৯/১৭৪৭-১৮২৪ খৃঃ), শাহ রফীউদ্দীন (১১৬২-১২৩৩/১৭৫০-১৮১৮ খৃঃ), শাহ আবদুল কাদের (মৃঃ ১১৬৭-১২৫৩/১৭৫৫-১৮৩৮ খৃঃ), শাহ আবদুল গণী (১১৭০-১২২৭/১৭৫৮-১৮১২ খৃঃ) ও অন্যান্য শিক্ষকদের মাধ্যমে তাঁর উক্ত মিশন জারি থাকে। অতঃপর তাঁরই পৌত্র শাহ ইসমাঈল বিন আবদুল গণীর (১১৯৩-১২৪৬/১৭৭৯-১৮৩১ খৃঃ) নেতৃত্বে পরিচালিত জিহাদ আন্দোলনের মাধ্যমে ভারতবর্ষে ব্যাপক রাজনৈতিক ও সামাজিক বিপস্নবের সূত্রপাত ঘটে- যা একই সাথে আহলেহাদীছ আন্দোলনকে ব্যাপক রূপ দান করে।

[বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব প্রণীত ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন : উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ, দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষিতসহ’ শীর্ষক গ্রন্থ। পৃঃ ২৪৫-২৪৯]


[1]. অলিউল্লাহ পরিবার বলতে উক্ত পরিবারের ১২ জন শ্রেষ্ঠ বিদ্বানকে বুঝানো হয়। ১. শাহ অলিউল্লাহ আহমাদ বিন আব্দুর রহীম ২. তার চারপুত্র : শাহ আব্দুল আযীয ৩. শাহ রফীউদ্দীন ৪. শাহ আব্দুল কাদের ৫. শাহ আব্দুল গণী ৬. অলিউল্লাহ পৌত্র শাহ মুহাম্মাদ ইসমাঈল বিন শাহ আবদুল গণী ৭. শাহ আব্দুল আযীযের জামাতা শাহ আব্দুল হাই বিন হেবাতুল্লা বিন নূরুল্লাহ বড্নভী ৮. অলিউল্লাহ পৌত্র শাহ মাখছূছুল্লাহ বিন শাহ রফীউদ্দীন ৯. শাহ আব্দুল আযীযের দৌহিত্র শাহ মুহাম্মাদ ইসহাক ‘মুজাজিরে মাক্কী’ বিন মুহাম্মাদ আফযাল ফারূকী ১০. ঐ ছোটভাই, শাহ মুহাম্মাদ ইয়াকুব ‘মুহাজিরে মাক্কী ১১. মোল্লা আবদুল ক্বাইয়ূম বিন শাহ আবদুল হাই বডা্নভী ১২. শাহ মুহাম্মাদ উমার বিন শাহ মুহাম্মাদ ইসমাঈল শহীদ।

[2]. আবু ইয়াহ্ইয়া ইমাম খান নওশাহ্রাবী, ‘তারাজিমে ওলামায়ে হাদীছ হিন্দ’ (লায়ালপুর-পাকিস্তান : জামেয়া সালাফিইয়াহ, ২য় সংস্করণ ১৩৯১/১৯৮১) পৃঃ ৬৬।

[3]. শাহ অলিউল্লাহ, ‘তাফহীমাতে ইলাহিয়ার’-এর বরাতে ঐ প্রণীত ‘সাত্ব‘আত’-এর উর্দূ অনুবাদের ভূমিকা : সাইয়িদ মুহাম্মাদ মতীন হাশেমী, ডিসেম্বর ১৯৭৫ (লাহোর : ইদারা ছাক্বাফাতি ইসলামিয়াহ, ২য় সংস্করণ, ১৯৮৬) পৃঃ ২১।

[4]. শাহ অলিউল্লাহ, ‘ফুয়ূযুল হারামাইন’ উর্দূ অনুবাদসহ (দিল্লী : মাতবা‘আ আহমাদী, ১৩০৮/১৮৯০) মাশহাদ ৩১, পৃঃ ৬২-৬৩।

[5]. প্রাগুপ্ত পৃঃ ৬৪-৬৫।

[6]. শাহ অলিউল্লাহ প্রণীত ‘আলতাফুল কুদ্স-এর বরাতে ঐ প্রণীত ‘সাত্ব‘আত’এর উর্দূ অনুবাদের ভূমিকা, পৃঃ ২২।

[7]. শাহ অলিউল্লাহ, ‘অছিয়তনামা’ (কানপুর ছাপা ১২৭৩/১৮৫৭) ১ম অছিয়ত পৃঃ ১।

[8]. শাহ অলিউল্লাহ রচিত প্রায় সকল কিতাবেই এই সূর ধক্ষনিত হয়েছে। তবে বিশেষ করে তাঁর বহুবিশ্রুত গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’-তে ‘আহলেহাদীছ ও আহলুর রায়-এর পার্থক্য’ শীর্ষক অধ্যায়।

[9]. ঐ, ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (কায়রো : দারুত্ তুরাছ, ১ম সংস্করণ ১৩৫৫ হিঃ/১৯৩৬ খৃঃ) ‘ছালাতের দো‘আ ও তরীকা’ অধ্যায়, ২য় খ- পৃঃ ৭-১০।

[10]. নওশাহরাবী, তারাজিম পৃঃ ৫৩; জুহুদ মুখলিছাহ পৃঃ ৭৫।

[11]. ফুয়ূযুল হারামাইন পৃঃ ৮৯।

[12]. সাত্ব‘আত-এর ভূমিকা, গৃহীত : খালীক্ব আহমাদ নিযামী, ‘শাহ অলিউল্লাহ কে সিয়াসী মাকতূবাত’ পৃঃ ৩৪-৩৭।

[13]. হুজ্জাতুল্লাহ, তাফহীমাত ও ফুয়ূযুল হারামাইন হ’তে গৃহীত।

[14]. যেমন-‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর প্রচারিত লিফলেট এবং গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে-‘আমরা চাই এমন একটি ইসলামী সমাজ যেখানে থাকবে না প্রগতির নামে কোন বিজাতীয় মতবাদ; থাকবে না ইসলামের নামে কোনরূপ মাযহাবী সংকীর্ণতাবাদ’। তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে,-‘নির্ভেজাল তাওহীদের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা এবং জীবনের সর্বক্ষেত্রে কিতাব ও সুন্নাতের যথাযথ অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অজর্ন করা’। তাদের প্রধান আহবান হ’ল- ‘আসুন! পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে জীবন গড়ি’। তাদের প্রধান শ্লোগান হ’ল- ‘মুক্তির একই পথ দাওয়াত ও জিহাদ’ ‘আমাদের রাজনীতি ইমারত ও খিলাফত’ ‘সকল বিধান বাতিল কর অহি-র বিধান কায়েম কর’। তাদের প্রচারিত ‘পরিচিতি’ গঠনতন্ত্র, বিভিন্ন দেওয়াল লিখন ও বিজ্ঞাপন সমূহ থেকে গৃহীত। প্রধান কার্যালয় : দারুল ইমারত আহলেহাদীছ, নওদাপাড়া, পোঃ সপুরা, রাজশাহী।



বিষয়সমূহ: সংগঠন
আরও