সালাফদের অনুসরণ প্রয়োজন কেন?

আব্দুর রহীম 661 বার পঠিত

ভূমিকা : ইসলাম এমন একটি নির্ভেজাল ধর্ম, যা রাসূল (ছাঃ) থেকে বিশুদ্ধভাবে ছাহাবায়ে কেরাম অতঃপর তাবেঈ ও তাবে‘ তাবেঈগণ থেকে সালাফদের মাধ্যমে আমাদের নিকট পৌঁছেছে। সেজন্য ইসলামের সঠিক বার্তা পেতে সালাফদের অনুকরণ ও অনুসরণ একান্ত প্রয়োজন। সালাফী পরিভাষাটি অতি প্রাচীন ও পুরানো। তারা ছিলেন উত্তম সময়ে আবির্ভূত সৃষ্টির সেরা মানুষ যাদের উত্তমতার ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক সত্যায়িত, প্রমাণিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত। কেননা তারা দেখেছেন ওহি নাযিলের স্থান, সময় ও প্রেক্ষাপট। তারা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে থেকে হাদীছ শুনেছেন, বুঝেছেন, ব্যাখ্যা করে নিয়েছেন। হাদীছ কোন প্রেক্ষাপটে বলা হয়েছে সেটাও তারা অবলোকন করেছেন। কারো কোন হাদীছ জানা না থাকলে অপর ছাহাবীকে জিজ্ঞেস করে জেনে নিয়েছেন। আর ছাহাবীগণ থেকে তাবেঈগণ দিক্ষা লাভ করে তারাও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিয়েছেন। বর্তমান সময়ে কুরআন ও হাদীছের সঠিক ব্যাখ্যা জানতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে সালাফদের নিকটে। সেজন্য আমাদের জীবন পরিচালিত হতে হবে সালাফদের বুঝ অনুযায়ী ইসলামকে অনুকরণ ও অনুসরণের নীতির উপর ভিত্তি করে। যদি তাদের বুঝ অনুযায়ী আমরা কুরআন ও সুন্নাহর ব্যাখ্যা না বুঝে শাব্দিক অর্থ বা অনুবাদের উপর ভিত্তি করে বোঝার চেষ্টা করি তাহলে পথভ্রষ্ট হতে হবে। শয়তানী চরমপন্থার চোরাগলিতে পড়ে ঈমান ও আমল দু’টিই হারাতে হবে এবং নিক্ষিপ্ত হতে হবে জাহান্নামের অতল গহবরে। বক্ষ্যমান প্রবন্ধে সালাফদের অনুসরণের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে দালীলিক আলোচনার প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ।

সালাফদের অনুসরণের গুরুত্ব :

ছাহাবায়ে কেরাম ও তাদের অনুসারী পূর্ববর্তী বিদ্বানগণ সর্বদা হকের উপর অটল ছিলেন। তাঁরা বহু ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে আমাদেরকে নির্ভেজাল ইসলাম উপহার দিয়েছেন। সেজন্য সর্বাধিক মর্যাদা লাভের অধিকারী তারাই। আল্লাহ তা‘আলা তাদের প্রশংসা করে কুরআন মাজীদে বলেন, وَالسَّابِقُونَ الْأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُمْ بِإِحْسَانٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي تَحْتَهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ ‘মুহাজির ও আনছারগণের মধ্যে যারা অগ্রবর্তী ও প্রথম দিককার এবং যারা তাদের অনুসরণ করেছে নিষ্ঠার সাথে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তষ্ট। তিনি তাদের জন্য প্রস্ত্তত রেখেছেন জান্নাত, যার তলদেশ দিয়ে নদীসমূহ প্রবাহিত হয়। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আর এটাই হ’ল মহা সফলতা’ (তওবা ৯/১০০)

অত্র আয়াতে মুহাজির ও আনছার ছাহাবীগণের এবং তাদের অনুসারী তাবেঈগণের উচ্চ মর্যাদা বর্ণিত হয়েছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘শ্রেষ্ঠ যুগ আমার যুগ, অতঃপর তাদের পরবর্তী (তাবেঈ)গণের যুগ, অতঃপর তাদের পরবর্তী (তাবে তাবেঈ) গণের যুগ’। সাথে সাথে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যারা তাদের যথার্থ অনুসারী হবে, তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। তারাই হলেন উম্মতের নাজী ফের্কা। যারা তাদের খালেছ ঈমান ও বিশুদ্ধ আমলের কারণে শুরুতেই জান্নাতী হবেন। আয়াতে অগ্রবর্তী ও প্রথম দিককার বলতে জ্যেষ্ঠ মুহাজির ও আনছার ছাহাবীগণকে বুঝানো হলেও মর্মার্থে সকল ছাহাবীকে বুঝানো হয়েছে। অতঃপর তাদের যথার্থ অনুসারীদের মধ্যে প্রথম সারির হলেন তাবেঈগণ, অতঃপর তাদের অনুসারী তাবে-তাবেঈগণ, এরপর কিয়ামত পর্যন্ত তাদের অনুসারী মুসলিমগণ। যারা পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করেন এবং ছাহাবায়ে কেরাম ও সালাফে ছালেহীনের বুঝ অনুযায়ী শরী‘আত ব্যাখ্যা করেন।

যেমন অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, وَآخَرِينَ مِنْهُمْ لَمَّا يَلْحَقُوا بِهِمْ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ ‘আর তাদের অন্যান্যদের জন্যেও যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয়নি, বস্ত্ততঃ আল্লাহ মহাপরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময় (জুম‘আ ৬২/০৩)। তিনি আরো বলেন, وَالَّذِينَ جَاءُوا مِنْ بَعْدِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلًّا لِلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ ‘যারা তাদের পরে এসেছে। যারা বলে হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের এবং আমাদের ভাইদের ক্ষমা কর, যারা আমাদের পূর্বে ঈমান এনেছে। আর ঈমানদারগণের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোন বিদ্বেষ রেখো না। হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয়ই তুমি স্নেহশীল, পরম দয়ালু’ (হাশর ৫৯/১০)। সালাফদের অনুকরণ কারীদের মর্যাদায় আল্লাহ আরো বলেন, وَالَّذِينَ آمَنُوا مِنْ بَعْدُ وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا مَعَكُمْ فَأُولَئِكَ مِنْكُمْ ‘আর যারা পরে ঈমান এনেছে ও হিজরত করেছে এবং তোমাদের সাথে থেকে জিহাদ করেছে, তারাও তোমাদের অন্তর্ভুক্ত (আনফাল ৮/৭৫)

সুতরাং সালাফদের অনুসরণের বিকল্প নেই। কেউ যদি সালাফদের সাথে শক্রতা পোষণ করে বা তাদের বুঝকে অবজ্ঞা করে নিজের মত করে ধর্মীয় জীবন পরিচালনা করে তাহলে সে পথভ্রষ্ট হবে। রাসূল (ছাঃ) সালাফদের অনুসরণের গুরুত্বারোপ করে বলেন, اسْتَوْصُوا بِأَصْحَابِى خَيْراً ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ ثُمَّ يَفْشُو الْكَذِبُ حَتَّى إِنَّ الرَّجُلَ لَيَبْتَدِئُ بِالشَّهَادَةِ قَبْلَ أَنْ يُسْأَلَهَا ‘তোমরা ছাহাবীগণের ব্যাপারে উত্তম উপদেশ গ্রহণ কর। এরপর যারা তাদের সাথে সংযুক্ত (তাবেঈগণ) এরপর যারা তাদের সাথে সংযুক্ত (অর্থাৎ তাবে-তাবেঈগন)। এরপরে মিথ্যাচার এমনভাবে ছড়িয়ে পড়বে যে, তারা সাক্ষ্য চাওয়ার আগেই সাক্ষ্য দিতে যাবে’।[1]

সালাফদের অনুসরণের প্রয়োজনীয়তা :

প্রথমত : ছাহাবীগণ রাসূল (ছাঃ)-এর পাশে থাকতেন। তারা ছিলেন সুন্নাহ ও তাফসীর সম্পর্কে অধিক ওয়াকিফহাল। ছাহাবায়ে কেরাম তাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণ করতেন। তাঁরা দ্বীনের বিষয়ে তাঁর জীবনের ছোট বড় সকল বিষয় হেফাযত করেছেন। তারা রাসূল (ছাঃ) থেকে প্রতিটি জিনিস হাতে-কলমে শিক্ষা লাভ করেছেন। এজন্য তারাই হলেন সুন্নাহর জ্ঞানে সর্বাধিক সমৃদ্ধ। অতএব আমাদের সুন্নাহ অনুযায়ী চলতে হলে তাদেরই পদাংক অনুসরণ করে চলতে হবে।

দ্বিতীয়ত : আল্লাহ তা‘আলা আল কুরআনুল কারীমে বহু জায়গায় ছাহাবী ও তাবেঈগণের সম্মান-মর্যাদা ও আদালত তথা ন্যায়-ইনছাফের সাক্ষ্য দিয়েছেন এবং তাদের পবিত্রতা বর্ণনা করেছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘মুহাজির ও আনছারগণের মধ্যে যারা অগ্রবর্তী ও প্রথম দিককার এবং যারা তাদের অনুসরণ করেছে নিষ্ঠার সাথে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তষ্ট। তিনি তাদের জন্য প্রস্ত্তত রেখেছেন জান্নাত, যার তলদেশ দিয়ে নদীসমূহ প্রবাহিত হয়। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আর এটাই হ’ল মহা সফলতা’ (তওবা ৯/১০০)

তৃতীয়ত : রাসূল (ছাঃ) ছাহাবী, তাবেঈ ও পরবর্তী বিদ্বানগণের প্রশংসা ও তাদের উত্তমতার বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করেছেন। যা তাদের অনুসরণীয় হওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট দলীল। রাসূল (ছাঃ) বলেন, خَيْرُ النَّاسِ قَرْنِى، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ ،ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ يَجِىءُ أَقْوَامٌ تَسْبِقُ شَهَادَةُ أَحَدِهِمْ يَمِينَهُ، وَيَمِينُهُ شَهَادَتَهُ - ‘সর্বোত্তম মানুষ হচ্ছে আমার যুগের মানুষ। এরপর উত্তম হল এর পরবর্তীতে আগমনকারী লোকেরা। তারপর উত্তম হল যারা তাদের পরবর্তীতে আসবে তারা। অতঃপর এমন এক জাতির আগমন ঘটবে যাদের কারো সাক্ষ্য কসমের আগেই হয়ে যাবে, আবার কসম সাক্ষ্যের আগেই হয়ে যাবে’।[2] অর্থাৎ কসম ও সাক্ষ্যের মধ্যে কোন মিল থাকবে না। কসম ও সাক্ষ্য উভয়টাই মিথ্যা হবে। অন্যত্র তিনি বলেন, خَيْرُ أُمَّتِى قَرْنِى ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ . قَالَ عِمْرَانُ فَلاَ أَدْرِى أَذَكَرَ بَعْدَ قَرْنِهِ قَرْنَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا ثُمَّ إِنَّ بَعْدَكُمْ قَوْمًا يَشْهَدُونَ وَلاَ يُسْتَشْهَدُونَ، وَيَخُونُونَ وَلاَ يُؤْتَمَنُونَ، وَيَنْذُرُونَ وَلاَ يَفُونَ، وَيَظْهَرُ فِيهِمُ السِّمَنُ - ‘আমার উম্মতের মধ্যে সর্বোত্তম হচ্ছে আমার যুগ, তারপর উত্তম হচ্ছে তাদের পরবর্তীতে যারা আসবে তারা। তারপর উত্তম হচ্ছে তাদের পরবর্তীতে যারা আসবে তারা। ইমরান বলেন, রাসূল (ছাঃ) তাঁর পরে দুই যুগের কথা বলেছেন নাকি তিন যুগের কথা বলেছেন তা আমি বলতে পারছিনা। অতঃপর তিনি বলেন, তোমাদের পরে এমন কওম আসবে যারা সাক্ষ্য দিবে, কিন্তু তাদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে না। তারা বিশ্বাসঘাতকতা করবে, আমানত রক্ষা করবে না। তারা মানত করবে, কিন্তু তা পূর্ণ করবে না। আর তাদের শরীরে চর্বি দেখা দিবে’।[3]

আর সালাফদের অনুকরণ করার আবশ্যিকতার পিছনে হিকমত হ’ল ঐ সকল লোকদের দাবীকে প্রত্যাখ্যান করা যারা বলে যে, রাসূল (ছাঃ) এর অনুসরণ বা আনুগত্য করা সম্ভব নয়। কারণ তিনি ছিলেন মা‘ছূম, মানবীয় প্রবৃত্তির উর্ধ্বে এবং আল্লাহ থেকে সাহায্যপ্রাপ্ত। কিন্তু ছাহাবায়ে কেরাম আমাদের মত মানুষ হয়েও তারা দেখিয়ে দিয়েছেন যে, পুঙ্খানুপুঙ্খ রূপে রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণ সম্ভব। অথচ তারা আমাদের মতই মানুষ ছিলেন।

ছাহাবীগণ কর্তৃক রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণের দৃষ্টান্ত :

ছাহাবীগণ রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণের ক্ষেত্রে সর্বাধিক অগ্রগামী ছিলেন। রাসূল (ছাঃ) যদি কারো হাত ধরে একটি হাদীছ বর্ণনা করেছেন, সেই হাদীছটি বর্ণনা করার সময় কারো হাত ধরে সেভাবেই ঐ হাদীছ বর্ণনা করেছেন। তাদের মধ্যে আবুবকর (রাঃ) ছিলেন অগ্রগামী। যেমন হাদীছে এসেছে, عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: لَمَّا تُوُفِّيَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَاسْتُخْلِفَ أَبُو بَكْرٍ بَعْدَهُ، وَكَفَرَ مَنْ كَفَرَ مِنَ الْعَرَبِ، قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ لِأَبِي بَكْرٍ: كَيْفَ تُقَاتِلُ النَّاسَ، وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، فَمَنْ قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، فَقَدْ عَصَمَ مِنِّي مَالَهُ، وَنَفْسَهُ، إِلَّا بِحَقِّهِ وَحِسَابُهُ عَلَى اللهِ "، فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: وَاللهِ لَأُقَاتِلَنَّ مَنْ فَرَّقَ بَيْنَ الصَّلَاةِ، وَالزَّكَاةِ، فَإِنَّ الزَّكَاةَ حَقُّ الْمَالِ، وَاللهِ لَوْ مَنَعُونِي عِقَالًا كَانُوا يُؤَدُّونَهُ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَقَاتَلْتُهُمْ عَلَى مَنْعِهِ، فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ: فَوَاللهِ، مَا هُوَ إِلَّا أَنْ رَأَيْتُ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ قَدْ شَرَحَ صَدْرَ أَبِي بَكْرٍ لِلْقِتَالِ، فَعَرَفْتُ أَنَّهُ الْحَقُّ আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ছাঃ)-এর ইন্তিকালের পর আবু বকর ছিদ্দীক্ব (রাঃ) খলীফা হন তখন আরবের কিছু লোক যাকাত প্রদান করতে অস্বীকৃতি জানায়। (আবু বকর তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শুনে) ওমর (রাঃ) আবু বকর (রাঃ)-কে বললেন, আপনি কিভাবে যুদ্ধ করবেন? অথচ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, আমাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, মানুষ যে পর্যন্ত লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু (অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন ইলাহ নেই- এ কথার) ঘোষণা না দিবে ততক্ষণ তাদের সাথে যুদ্ধ করবে, যে ব্যক্তি লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু বলল, সে নিজের ধন-সম্পদ ও জীবন আমার থেকে নিরাপদ করে নিল। তবে ইসলামের কারণে হলে ভিন্ন কথা। আর এর হিসাব আল্লাহর কাছে। তখন আবু বকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম যে ব্যক্তি ছালাত ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করবে, আমি অবশ্য অবশ্যই তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। কারণ নিঃসন্দেহে যাকাত সম্পদের হক। আল্লাহর কসম! তারা (যাকাত অস্বীকারকারীরা) যদি আমাকে একটি ছাগলের বাচ্চাও দিতে অস্বীকার করে যা তারা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সময় দিত, তাহলেও আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। (তখন) ওমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! যুদ্ধের এ সিদ্ধান্ত আল্লাহর তরফ থেকে আবু বকর-এর অন্তর্চক্ষু খুলে দেয়া ছাড়া আর কিছু বলে আমি মনে করি না’।[4]

অত্র হাদীছে আবুবকর (রাঃ)-এর সুন্নাতের অনুসরণের প্রতি কঠোরতা প্রকাশিত হয়েছে। ফলে তিনি সেই সকল মুরতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিলেন, যারা রাসূল (ছাঃ)-এর আমল যাকাত দিয়েছে অথচ এখন দিতে রাযী নয়। এমন কি রাসূল (ছাঃ)-এর যুগে উটের রশি দিয়ে থাকলে এখনও তা দিতে হবে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ বলবৎ থাকবে’।[5]

খোলাফায়ে রাশেদীনের দৃষ্টান্ত :

কেবল আবু বকর (রাঃ) নন, বরং সকল খলীফা রাসূল (ছাঃ)-এর আনুগত্যের ক্ষেত্রে অগ্রগামী ছিলেন। তারা সার্বিক ক্ষেত্রে রাসূল (ছাঃ)-এর রেখে যাওয়া সুন্নাতকে কোন পরিবর্তন ছাড়াই অনুসরণ করতেন। যেমন হাদীছে এসেছে,

عَنْ أَنَسٍ قَالَ كَانَ خَاتَمُ النَّبِىِّ ص فِى يَدِهِ ، وَفِى يَدِ أَبِى بَكْرٍ بَعْدَهُ ، وَفِى يَدِ عُمَرَ بَعْدَ أَبِى بَكْرٍ ، فَلَمَّا كَانَ عُثْمَانُ جَلَسَ عَلَى بِئْرِ أَرِيسَ - قَالَ - فَأَخْرَجَ الْخَاتَمَ ، فَجَعَلَ يَعْبَثُ بِهِ فَسَقَطَ قَالَ فَاخْتَلَفْنَا ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ مَعَ عُثْمَانَ فَنَنْزَحُ الْبِئْرَ فَلَمْ نَجِدْهُ

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ছাঃ)-এর আংটি (তার জীবদ্দশায়) তার হাতেই ছিল। তার (ইন্তেকালের) পরে তা আবু বকর (রাঃ)-এর হাতে থাকে। আবু বকর (রাঃ)-এর (মৃত্যুর) পরে তা ওমর (রাঃ)-এর হাতে থাকে। যখন উছমান (রাঃ)-এর আমল এল, তখন (একদিন) তিনি ঐ আংটি হাতে নিয়ে আরীস নামক কুপের উপর বসেন। আংটিটি বের করে নাড়চাড়া করছিলেন। হঠাৎ তা (কুপের মধ্যে) পড়ে যায়। আনাস (রাঃ) বলেন, আমরা তিন দিন যাবত উছমানের (রাঃ)-সাথে অনুসন্ধান চালালাম। কূপের পানি ফেলে দেয়া হ’ল কিন্তু আংটি আর আমরা পেলাম না’।[6] 

খোলাফায়ে রাশেদীনের কত আকাঙ্ক্ষা ছিল রাসূল (ছাঃ)-এর রেখে যাওয়া একটি আংটি ব্যবহারের। কারণ তিনি এই আংটি রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহার করতেন। খোলাফায়ে রাশেদীনও সেই আংটি রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহার করতেন। কিন্তু সেই আংটিটি পানিতে পড়ে যাওয়ায় তিন দিন পর্যন্ত অনুসন্ধান করেছেন। এমনকি কুপের সব পানি তুলেও অনুসন্ধান করেছেন। কারণ একটিই আর সেটি হল রাসূল (ছাঃ)-এর রেখে যাওয়া একটি আংটি। যদি আংটি মূল্যবান হওয়ার কারণে তারা কুপের ভিতর খুঁজতেন তাহলে তিনদিনে এতগুলো মানুষ যে সময় দিয়েছে, তা আংটির থেকে অনেক মূল্যবান। কিন্তু উদ্দেশ্য ছিল রাসূল (ছাঃ)-এর ব্যবহৃত জিনিসের প্রতি তাদের ভালোবাসা’।[7]

তাবেঈগণের দৃষ্টান্ত :

ছাহাবীগণ যেভাবে রাসূল (ছাঃ)-এর আদর্শের অনুসরণ করতেন তাবেঈগণ ঠিক সেভাবেই ছাহাবীগণের অনুসরণ করতেন। কারণ তারা জানতেন যে, কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর জ্ঞান একমাত্র ছাহাবীগণের কাছেই নির্ভেজাল অবস্থায় পাওয়া যাবে। ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেন, كَانُوا يَرَوْنَ أَنَّهُ عَلَى الطَّرِيقِ مَا كَانَ عَلَى الْأَثَرِ ‘তারা (তাবেঈদের সময়কার লোকেরা) মনে করতেন, যতক্ষণ পর্যন্ত কোন লোক হাদীছের উপর আমল করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত (সঠিক) পথেই থাকবে’।[8] তাবেঈগণের অনুসরণ করার দৃষ্টান্ত বিভিন্ন হাদীছের গ্রন্থে এসেছে। যেমন-

عَنْ خَالِدِ بْنِ أَسْلَمَ قَالَ خَرَجْنَا مَعَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رضى الله عنهما فَقَالَ أَعْرَابِىٌّ أَخْبِرْنِى قَوْلَ اللَّهِ ( وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلاَ يُنْفِقُونَهَا فِى سَبِيلِ اللَّهِ ) قَالَ ابْنُ عُمَرَ رضى الله عنهما مَنْ كَنَزَهَا فَلَمْ يُؤَدِّ زَكَاتَهَا فَوَيْلٌ لَهُ ، إِنَّمَا كَانَ هَذَا قَبْلَ أَنْ تُنْزَلَ الزَّكَاةُ فَلَمَّا أُنْزِلَتْ جَعَلَهَا اللَّهُ طُهْرًا لِلأَمْوَالِ.

১. খালিদ ইবনু আসলাম (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ)-এর সাথে বের হলাম। এক মরুবাসী তাঁকে বলল, আল্লাহ তা‘আলার বাণী- ‘যারা সোনা-ও রূপা জমা করে রাখে এবং তার আল্লাহর পথে খরচ করে না-এর ব্যাখ্যা সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন। ইবনু ওমর (রাঃ) বললেন, যে ব্যক্তি সম্পদ জমা করে রাখে আর এর যাকাত আদায় করে না, তার জন্য রয়েছে শাস্তি- এ তো ছিল যাকাত বিধান অবতীর্ণ হওয়ার আগের কথা’।[9]

ইবনু ওমরের সাথীরা তার নিকট থেকে একটি আয়াতের তাফসীর জানার জন্য কতটা উদগ্রীব ছিল। তারা ছাহাবী ইবনু ওমর (রাঃ)-এর থেকে আয়াতের সঠিক ব্যাখ্যা জেনে নিলেন যে, যাকাত দিলে আয়াতে বর্ণিত শাস্তি প্রযোজ্য হবে না।

عَنْ عِمْرَانَ الضُّبَعِىُّ قَالَ تَمَتَّعْتُ فَنَهَانِى نَاسٌ، فَسَأَلْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ رضى الله عنهما فَأَمَرَنِى، فَرَأَيْتُ فِى الْمَنَامِ كَأَنَّ رَجُلاً يَقُولُ لِى حَجٌّ مَبْرُورٌ وَعُمْرَةٌ مُتَقَبَّلَةٌ، فَأَخْبَرْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ فَقَالَ سُنَّةَ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لِى أَقِمْ عِنْدِى، فَأَجْعَلَ لَكَ سَهْمًا مِنْ مَالِى- قَالَ شُعْبَةُ فَقُلْتُ لِمَ فَقَالَ لِلرُّؤْيَا الَّتِى رَأَيْتُ-

২. আবূ জামরাহ নাসর ইবনু ইমরান যুবায়ী (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি তামাত্তু হজ্জ করতে ইচ্ছা করলে কিছু লোক আমাকে নিষেধ করল। আমি তখন ইবনু আববাস (রাঃ)-এর নিকট জিজ্ঞেস করলে তিনি তা করতে আমাকে নির্দেশ দেন। এরপর আমি স্বপ্নে দেখলাম, যেন এক ব্যক্তি আমাকে বলছে, উত্তম হজ্জ ও মাকবূল ওমরাহ। ইবনু আববাস (রাঃ)-এর নিকট স্বপ্নটি বললাম। তিনি বললেন, তা নবী (ছাঃ)-এর সুন্নাত। এরপর আমাকে বললেন, তুমি আমার কাছে থাক, তোমাকে আমার মালের কিছু অংশ দিব। রাবী শুবাহ (রহঃ) বলেন, আমি (আবূ জামরাকে) বললাম, তা কেন? তিনি বললেন, আমি যে স্বপ্ন দেখেছি সে জন্য’।[10] অন্য বর্ণনায় এসেছে, فَأَتَانِي آتٍ فِي مَنَامِي، فَقَالَ: عُمْرَةٌ مُتَقَبَّلَةٌ، وَحَجٌّ مَبْرُورٌ، قَالَ: فَأَتَيْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، فَأَخْبَرْتُهُ بِالَّذِي رَأَيْتُ، فَقَالَ: اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ سُنَّةُ أَبِي الْقَاسِمِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» ‘স্বপ্নে আমার কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, উমরা কবুল হয়েছে এবং হজ্জও কবুল হয়েছে। আমি ইবনু আববাস (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে তাকে এ স্বপ্নের কথা বললাম। তিনি বললেন, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার! এতো আবূল কাসিম রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাত’।[11]

অত্র হাদীছে প্রমাণ করে যে, কোন হাদীছের ব্যাখ্যা বুঝতে না পারলে তাবেঈগণ ছাহাবীগণের নিকট চলে যেতেন। এমনকি স্বপ্ন দেখেও তার ব্যাখ্যা জানার জন্য তারা আলেম ছাহাবীগণের নিকট ছুটে যেতেন। সুন্নাতের সাথে তাবেঈর স্বপ্ন মিলে যাওয়ায় ইবনু আববাস (রাঃ) তাকবীর ধ্বনি দিতেন। ইখতিলাফী বিষয়ে তারা বসে না থেকে সঠিক বিষয়টি জানার জন্য ছুটে গেছেন ছাহাবীর নিকট। ছাহাবীগণের অনুসরণে তারা কতটা অগ্রগামী হলে এমন অবস্থা হতে পারে তা অনুমেয়’।[12]

عَنْ سَالِمٍ قَالَ كَتَبَ عَبْدُ الْمَلِكِ إِلَى الْحَجَّاجِ أَنْ لاَ يُخَالِفَ ابْنَ عُمَرَ فِى الْحَجِّ ، فَجَاءَ ابْنُ عُمَرَ رضى الله عنه وَأَنَا مَعَهُ يَوْمَ عَرَفَةَ حِينَ زَالَتِ الشَّمْسُ، فَصَاحَ عِنْدَ سُرَادِقِ الْحَجَّاج، فَخَرَجَ وَعَلَيْهِ مِلْحَفَةٌ مُعَصْفَرَةٌ فَقَالَ مَا لَكَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ فَقَالَ الرَّوَاحَ إِنْ كُنْتَ تُرِيدُ السُّنَّةَ . قَالَ هَذِهِ السَّاعَةَ قَالَ نَعَمْ . قَالَ فَأَنْظِرْنِى حَتَّى أُفِيضَ عَلَى رَأْسِى ثُمَّ أَخْرُجَ . فَنَزَلَ حَتَّى خَرَجَ الْحَجَّاجُ، فَسَارَ بَيْنِى وَبَيْنَ أَبِى، فَقُلْتُ إِنْ كُنْتَ تُرِيدُ السُّنَّةَ فَاقْصُرِ الْخُطْبَةَ وَعَجِّلِ الْوُقُوفَ. فَجَعَلَ يَنْظُرُ إِلَى عَبْدِ اللَّهِ، فَلَمَّا رَأَى ذَلِكَ عَبْدُ اللَّهِ قَالَ صَدَقَ

৩. সালেম (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (খলীফা) আব্দুল মালেক (মক্কার গভর্নর) হাজ্জাজের নিকট লিখে পাঠালেন যে, হজ্জের ব্যাপারে ইবনু ওমর-এর বিরোধিতা করবে না। আরাফার দিনে সূর্য ঢলে যাবার পর ইবনু ওমর (রাঃ) হাজ্জাজের তাঁবুর কাছে গিয়ে উচ্চস্বরে ডাকলেন। আমি তখন তাঁর (ইবনু ওমরের) সাথেই ছিলাম, হাজ্জাজ হলুদ রঙের চাদর পরিহিত অবস্থায় বেরিয়ে আসলেন এবং বললেন, কী ব্যাপার, হে আবু আব্দুর রহমান? ইবনু ওমর (রাঃ) বললেন, যদি সুন্নাতের অনুসরণ করতে চাও তাহলে চল। হাজ্জাজ জিজ্ঞেস করলেন, এ মুহূর্তেই? তিনি বললেন, হ্যাঁ। হাজ্জাজ বললেন, সামান্য অবকাশ দিন, মাথায় পানি ঢেলে বের হয়ে আসি। তখন তিনি তার সওয়ারী হতে নেমে পড়লেন। অবশেষে হাজ্জাজ বেরিয়ে এলেন। এরপর হাজ্জাজ চলতে লাগলেন, আমি ও আমার পিতার মাঝে তিনি চললেন, আমি তাকে বললাম, যদি আপনি সুন্নাতের অনুসরণ করতে চান তাহলে খুৎবা সংক্ষিপ্ত করবেন এবং উকূফে দ্রুত করবেন। হাজ্জাজ আব্দুল্লাহর দিকে তাকাতে লাগলেন। আব্দুল্লাহ (রাঃ) যখন তাঁকে দেখলেন তখন বললেন, সে ঠিকই বলেছে’।[13]

উমাইয়া খলীফা আব্দুল মালেক বিন মারওয়ানের সুন্নাতের প্রতি কতটা আগ্রহ ছিল যে, তিনি চিঠি লিখে হাজ্জাজ বিন ইউসুফকে হাদীছের অনুসরণের স্বার্থে ইবনু ওমর (রাঃ)-এর বিরোধীতা করতে নিষেধ করলেন। আর হাজ্জাজের মত শাসকও সুন্নাতকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য নিজের অহমিকা পরিহার করে হজ্জে সুন্নাতের অনুসরণ করলেন। তারা সর্বদা ছাহাবীর অনুসরণ করলেন। কারণ তারা জানতেন একমাত্র ছাহাবীগণের নিকটই সুন্নাত নিরাপদে রয়েছে। মুহাল্লাব বলেন, وفيه أن الأمير يجب أن يعمل فى الدين بقول أهل العلم ويصير إلى رأيهم، ‘ইবনু ওমরের হাদীছে এ মর্মে প্রমাণিত হয় যে, আমীরের জন্য আবশ্যক হল দ্বীনের ক্ষেত্রে আহলে ইলম তথা আলেমগণের ফৎওয়া গ্রহণ করা এবং তাদের মতানুসারে নিজেকে পরিচালিত করা’।[14]

উপসংহার : উপরোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্ট হল যে, প্রতিটি ক্ষেত্রে সালাফদের অনুসরণ ও অনুকরণ আবশ্যক। কুরআন ও সুন্নাহ ভিত্তিক জীবন পরিচালনার জন্য প্রয়োজন হচ্ছে সালাফদের বুঝ অনুযায়ী কুরআনের তাফসীর ও হাদীছের জ্ঞান লাভ করা। আল্লাহ আমাদেরকে সালাফদের অনুকরণ অনুসরণের মাধ্যমে কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী জীবন পরিচালনার করার তাওফীক দান করুন-আমীন!


[1]. আহমাদ হা/১১৪; ইবনু হিববান হা/৭২৫৪, সনদ ছহীহ।

[2]. বুখারী হা/২৬৫২; মিশকাত হা/৩৭৬৭।

[3]. বুখারী হা/৩৬৫০; মিশকাত হা/৬০০১।

[4]. বুখারী হা/১৪০০; মুসলিম হা/২০; মিশকাত হা/১৭৯০।

[5]. নববী, শারহু মুসলিম, অত্র হাদীছের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।

[6]. বুখারী হা/৫৮৭৯।

[7]. ফাৎহুল বারী ১০/৩২৯ পৃ.।

[8]. দারেমী হা/১৪০, সনদ ছহীহ।

[9]. বুখারী হা/১৪০৪, ৪৬৬১।

[10]. বুখারী হা/১৫৬৭; আহমাদ হা/২১৫৮।

[11]. মুসলিম হা/১২৪২।

[12]. ফাৎহুল বারী ৩/৪৩১।

[13]. বুখারী হা/১৬৬০।

[14]. ইবনু বাত্তাল, শারহুল বুখারী ৪/৩৩৮।



আরও