কুরআন আপনার পক্ষের অথবা বিপক্ষের দলীল (২য় কিস্তি)

হাফীযুর রহমান 1507 বার পঠিত

হাদীছে এসেছে,

وعن جابر رضي الله قال سمعت رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ وَقَدْ تَرَكْتُ فِيكُمْ مَا لَنْ تَضِلُّوا بَعْدَهُ إِنِ اعْتَصَمْتُمْ بِهِ كِتَابَ اللهِ-

জাবের (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘আমি তোমাদের মাঝে এমন এক জিনিস রেখে যাচ্ছি- যা শক্তভাবে অাঁকড়ে ধরে থাকলে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট হবে না। তা হচ্ছে আল্লাহর কিতাব’।[1]

وعن مالك بن أنس مرسلا قال : قال رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ تَرَكْتُ فِيكُمْ أَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوا مَا تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّةَ نَبِيِّهِ-

মালেক ইবনু আনাস (রহঃ) হ’তে মুরসালরূপে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আমি তোমাদের মাঝে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। যতক্ষণ তোমরা সে দু’টি জিনিস অাঁকড়ে ধরে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত পথভ্রষ্ট হবে না। একটি হচ্ছে আল্লাহর কিতাব (কুরআন) আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে তাঁর নবীর সুন্নাত তথা হাদীছ’।[2]  

আর আপনি যদি ‘আল্লাহ, দ্বীন এবং নবী করীম (ছাঃ)-কে জানার ক্ষেত্রে কুরআনের অনুসরণ পরিত্যাগ করে শয়তানের অনুসরণ করেন, তাহ’লে কুরআন আপনার বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُجَادِلُ فِي اللهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّبِعُ كُلَّ شَيْطَانٍ مَرِيدٍ * كُتِبَ عَلَيْهِ أَنَّهُ مَنْ تَوَلَّاهُ فَأَنَّهُ يُضِلُّهُ وَيَهْدِيهِ إِلَى عَذَابِ السَّعِيرِ কতক মানুষ জ্ঞান ছাড়াই আল্লাহ সম্বন্ধে বাদানুবাদ করে, আর প্রত্যেক অবাধ্য শয়তানের অনুসরণ করে। যার (অর্থাৎ শয়তানের) সম্পর্কে বিধান করা হয়েছে যে, যে কেউ তার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়বে, সে তাকে বিপথগামী করবে, আর তাকে প্রজ্জ্বলিত অগ্নি শাস্তির দিকে পরিচালিত করবে’ (হজ্জ ২২/৩-৪)

তিনি অন্যত্র বলেন,

وَلَمَّا جَاءَهُمْ رَسُولٌ مِنْ عِنْدِ اللهِ مُصَدِّقٌ لِمَا مَعَهُمْ نَبَذَ فَرِيقٌ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ كِتَابَ اللهِ وَرَاءَ ظُهُورِهِمْ كَأَنَّهُمْ لَا يَعْلَمُونَ * وَاتَّبَعُوا مَا تَتْلُو الشَّيَاطِينُ-

‘এবং যখন তাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ হ’তে রাসূল আসল যে এদের নিকট যে কিতাব রয়েছে, সেই কিতাবের সমর্থক, তখন যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল তাদের একদল আল্লাহর কিতাবকে পিঠের পিছনে ফেলে দিল, যেন তারা কিছুই জানে না। শয়তানরা যা পাঠ করত, তারা তা অনুসরণ করত’ (বাক্বারাহ ২/১০১-১০২)

অনুরূপভাবে আপনি যদি ‘আল্লাহ , দ্বীন এবং নবী করীম (ছাঃ)-কে জানার ক্ষেত্রে কুরআনের অনুসরণ পরিত্যাগ করে বিবেকের অনুসরণ করেন, তাহ’লে কুরআন আপনার বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ হবে। আল্লাহ  তা‘আলা বলেন,

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُجَادِلُ فِي اللهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَلَا هُدًى وَلَا كِتَابٍ مُنِيرٍ  ثَانِيَ عِطْفِهِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللهِ لَهُ فِي الدُّنْيَا خِزْيٌ وَنُذِيقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَذَابَ الْحَرِيقِ-

তবুও মানুষের মধ্যে এমন আছে যারা জ্ঞান, পথের দিশা ও কোন আলোক প্রদানকারী কিতাব ছাড়াই আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্ক করে। ঘাড় বাঁকিয়ে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার উদ্দেশে। তার জন্য আছে লাঞ্ছনা এ দুনিয়াতে, আর ক্বিয়ামতের দিন তাকে আস্বাদন করাব (অগ্নির) দহন যন্ত্রণা’ (হাজ্জ ২২/৮-৯)

অনুরূপভাবে আপনি যদি ‘আল্লাহ , দ্বীন এবং নবী করীম (ছাঃ)-কে জানার ক্ষেত্রে কুরআনের অনুসরণ পরিত্যাগ করে প্রবৃত্তির অনুসরণ করেন, তাহ’লে কুরআন আপনার বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ হবে। আল্লাহ  তা‘আলা বলেন,

وَلَا تَتَّبِعِ الْهَوَى فَيُضِلَّكَ عَنْ سَبِيلِ اللهِ إِنَّ الَّذِينَ يَضِلُّونَ عَنْ سَبِيلِ اللهِ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيدٌ بِمَا نَسُوا يَوْمَ الْحِسَابِ-

‘এবং প্রবৃত্তির অনুসরণ কর না। কেননা, তা তোমাকে আল্লাহর পথ হ’তে বিচ্যুত করে ফেলবে। যারা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হয়, তাদের জন্য রয়েছে কঠিন আযাব, কারণ তারা হিসাব-নিকাশের দিনকে ভুলে গেছে’ (ছোয়াদ ৩৮/২৬)

তিনি অন্যত্র বলেন, وَإِنَّ كَثِيرًا لَيُضِلُّونَ بِأَهْوَائِهِمْ بِغَيْرِ عِلْمٍ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِالْمُعْتَدِينَ কিন্তু অধিকাংশ লোকই অজ্ঞতাবশতঃ তাদের খেয়াল-খুশী দ্বারা অবশ্যই পথভ্রষ্ট করে, তোমার প্রতিপালক সীমালঙ্ঘনকারীদের সম্পর্কে সবচেয়ে বেশী অবগত’ (আনআম ৬/১১৯)

তিনি অন্যত্র বলেন,

فَإِنْ لَمْ يَسْتَجِيبُوا لَكَ فَاعْلَمْ أَنَّمَا يَتَّبِعُونَ أَهْوَاءَهُمْ وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنِ اتَّبَعَ هَوَاهُ بِغَيْرِ هُدًى مِنَ اللهِ إِنَّ اللهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ-

‘অতঃপর তারা যদি তোমার কথায় সাড়া না দেয় তাহ’লে জেনে রাখ, তারা শুধু তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে। আল্লাহর পথ নির্দেশ ছাড়াই যে নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে আছে? আল্লাহ  যালিম সম্প্রদায়কে সঠিক পথে পরিচালিত করেন না’ (ক্বাছাছ ২৮/৫০)

অনুরূপভাবে আপনি যদি ‘আল্লাহ, দ্বীন এবং নবী করীম (ছাঃ)-কে জানার ক্ষেত্রে কুরআনের অনুসরণ পরিত্যাগ করে মানুষের মতামতের অনুসরণ করেন, তাহ’লে কুরআন আপনার বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَمَا تَهْوَى الْأَنْفُسُ وَلَقَدْ جَاءَهُمْ مِنْ رَبِّهِمُ الْهُدَى-

‘তারা তো শুধু অনুমান আর প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে, যদিও তাদের কাছে তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে পথ নির্দেশ এসেছে’ (নাজম ৫৩/২৩)

তিনি অন্যত্র বলেন, وَمَا يَتَّبِعُ أَكْثَرُهُمْ إِلَّا ظَنًّا إِنَّ الظَّنَّ لَا يُغْنِي مِنَ الْحَقِّ شَيْئًا إِنَّ اللهَ عَلِيمٌ بِمَا يَفْعَلُونَ তাদের অধিকাংশই কেবল ধারণার অনুসরণ করে, সত্যের মোকাবেলায় ধারণা কোন কাজে আসে না। তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ  সর্বাধিক অবগত’ (ইউনুস ১০/৩৬)

আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আছ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন,

إِنَّ اللهَ لَا يَنْزِعُ الْعِلْمَ بَعْدَ أَنْ أَعْطَاكُمُوهُ انْتِزَاعًا وَلَكِنْ يَنْتَزِعُهُ مِنْهُمْ مَعَ قَبْضِ الْعُلَمَاءِ بِعِلْمِهِمْ فَيَبْقَى نَاسٌ جُهَّالٌ يُسْتَفْتَوْنَ فَيُفْتُونَ بِرَأْيِهِمْ فَيُضِلُّونَ وَيَضِلُّونَ-

‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে যে জ্ঞান দান করেছেন, তা হঠাৎ ছিনিয়ে নিবেন না। বরং আলেমগণকে তাদের ইলমসহ ক্রমশ তুলে নেয়ার মাধ্যমে তা ছিনিয়ে নিবেন। তখন কেবল মূর্খ নেতারা (আলেমগণ) অবশিষ্ট থাকবে। তাদের কাছে ফৎওয়া চাওয়া হবে। তারপর তারা মনগড়া ফৎওয়া প্রদান করবে। ফলে তারা নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে অন্যদেরকেও পথভ্রষ্ট করবে’।[3] 

অনুরূপভাবে আপনি যদি ‘আল্লাহ, দ্বীন এবং নবী করীম (ছাঃ)-কে জানার ক্ষেত্রে কুরআন পরিত্যাগ করে ফাসেক আলেম ও ইবাদতকারীদের কথা, কর্ম ও জীবনী অনুসরণ করেন, তাহ’লে কুরআন আপনার বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَهُمْ وَاحْذَرْهُمْ أَنْ يَفْتِنُوكَ عَنْ بَعْضِ مَا أَنْزَلَ اللهُ إِلَيْكَ ‘তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করবে না। আর তাদের থেকে সতর্ক থাক তারা যেন আল্লাহ তোমার প্রতি যা নাযিল করেছেন তার কোন কিছু থেকে তোমাকে ফিৎনায় না ফেলতে পারে’ (মায়েদাহ ৫/৪৯)

তিনি অন্যত্র বলেন, وَلَا تَتَّبِعُوا أَهْوَاءَ قَوْمٍ قَدْ ضَلُّوا مِنْ قَبْلُ وَأَضَلُّوا كَثِيرًا وَضَلُّوا عَنْ سَوَاءِ السَّبِيلِ ‘আর সেই সম্প্রদায়ের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না যারা ইতিপূর্বে পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে, অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে আর সোজা পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে’ (মায়েদাহ ৫/৭৭)

তিনি অন্যত্র আরো বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ كَثِيرًا مِنَ الْأَحْبَارِ وَالرُّهْبَانِ لَيَأْكُلُونَ أَمْوَالَ النَّاسِ بِالْبَاطِلِ وَيَصُدُّونَ عَنْ سَبِيلِ اللهِ হে ঈমানদারগণ! অবশ্যই আলেম ও দরবেশদের অনেকেই অন্যায় কর্মকান্ডের মাধ্যমে মানুষদের সম্পদ গ্রাস করে থাকে আর আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে’ (তওবা ৯/৩৪)

অনুরূপভাবে আপনি যদি ‘আল্লাহ, দ্বীন এবং নবী করীম (ছাঃ)-কে জানার ক্ষেত্রে কুরআন পরিত্যাগ করে নেককার আলেম ও ইবাদতকারীদের কথা, কর্ম ও জীবনী অনুসরণ করেন, তাহ’লে কুরআন আপনার বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللهِ وَالْمَسِيحَ ابْنَ مَرْيَمَ وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا إِلَهًا وَاحِدًا لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ سُبْحَانَهُ عَمَّا يُشْرِكُونَ ‘আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে তারা তাদের আলেম আর দরবেশদেরকে রব বানিয়ে নিয়েছে; আর মরিয়ম-পূত্র মাসীহ্কেও। অথচ তাদের এক ইলাহ ব্যতীত (অন্যের) ইবাদত করার আদেশ দেয়া হয়নি। তিনি ব্যতীত সত্যিকারের কোন ইলাহ নেই, পবিত্রতা আর মহিমা তাঁরই, (বহু ঊর্ধ্বে তিনি) তারা যাদেরকে (তাঁর) অংশীদার গণ্য করে তাত্থেকে’ (তওবা ৯/৩১)

وَعَنْ أَبِى سَعِيدٍ الْخُدْرِىِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَتَتَّبِعُنَّ سَنَنَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ شِبْرًا بِشِبْرٍ وَذِرَاعًا بِذِرَاعٍ حَتَّى لَوْ دَخَلُوا فِى جُحْرِ ضَبٍّ لاَتَّبَعْتُمُوهُمْ. قُلْنَا يَا رَسُولَ اللهِ آلْيَهُودَ وَالنَّصَارَى قَالَ فَمَنْ-

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা তোমাদের পূর্বের লোকদের নীতি-আদর্শ পুরোপুরিভাবে অনুকরণ করবে, এক বিঘত এক বিঘতের সঙ্গে ও হাত হাতের সঙ্গে, এমনকি তারা যদি গুঁই সাপের গর্তে ঢুকে থাকে তবুও তোমরা তাদের অনুকরণ করবে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! তারা কি ইহুদী ও নাছারা? তিনি বলেন, তবে আর কারা?।[4]

অনুরূপভাবে আপনি যদি ‘আল্লাহ , দ্বীন এবং নবী করীম (ছাঃ)-কে জানার ক্ষেত্রে কুরআন পরিত্যাগ করে নেতৃবর্গ ও প্রভাবশালীদের কথা, কর্ম ও জীবনী অনুসরণ করেন, তাহ’লে কুরআন আপনার বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ হবে। আল্লাহ  তা‘আলা বলেন, يَوْمَ تُقَلَّبُ وُجُوهُهُمْ فِي النَّارِ يَقُولُونَ يَا لَيْتَنَا أَطَعْنَا اللهَ وَأَطَعْنَا الرَّسُولَا * وَقَالُوا رَبَّنَا إِنَّا أَطَعْنَا سَادَتَنَا وَكُبَرَاءَنَا فَأَضَلُّونَا السَّبِيلَا * رَبَّنَا آتِهِمْ ضِعْفَيْنِ مِنَ الْعَذَابِ وَالْعَنْهُمْ لَعْنًا كَبِيرًا‘আগুনে যেদিন তাদের মুখ উপুড় করে দেয়া হবে সেদিন তারা বলবে-হায়! আমরা যদি আল্লাহকে মানতাম ও রাসূলকে মানতাম। আর তারা বলবে- হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা আমাদের নেতাদেরকে ও আমাদের প্রধানদেরকে মান্য করতাম। তারাই আমাদের গোমরাহ করেছিল। হে আমাদের পালনকর্তা! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দাও আর তাদেরকে মহা অভিশাপে অভিশাপ দাও’ (আহযাব ৩৩/৬৬-৬৮)

অনুরূপভাবে আপনি যদি ‘আল্লাহ , দ্বীন এবং নবী করীম (ছাঃ)-কে জানার ক্ষেত্রে কুরআন পরিত্যাগ করে পূর্বপুরুষদের কথা, কর্ম ও জীবনী অনুসরণ করেন, তাহ’লে কুরআন আপনার বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ হবে। আল্লাহ  তা‘আলা বলেন, وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ تَعَالَوْا إِلَى مَا أَنْزَلَ اللهُ وَإِلَى الرَّسُولِ قَالُوا حَسْبُنَا مَا وَجَدْنَا عَلَيْهِ آبَاءَنَا أَوَلَوْ كَانَ آبَاؤُهُمْ لَا يَعْلَمُونَ شَيْئًا وَلَا يَهْتَدُونَ ‘তাদেরকে যখন বলা হয় আল্লাহ  যা অবতীর্ণ করেছেন তার দিকে ও রাসূলের দিকে এসো (তখন) তারা বলে, আমরা আমাদের পিতৃপুরুষকে যা করতে দেখেছি (অর্থাৎ তাদেরকে যে পথ ও পন্থা অবলম্বন করতে দেখেছি) আমাদের জন্য তাই যথেষ্ট। যদিও তাদের পিতৃপুরুষরা কিছুই জানত না এবং সঠিক পথপ্রাপ্ত ছিল না (তবুও কি তারা তাদের পথেই চলবে)?’ (মায়েদাহ ৫/১০৪)

অনুরূপভাবে আপনি যদি ‘আল্লাহ , দ্বীন এবং নবী করীম (ছাঃ)-কে জানার ক্ষেত্রে কুরআন পরিত্যাগ করে অধিকাংশ মানুষের কথা, কর্ম ও জীবনী অনুসরণ করেন, তাহ’লে কুরআন আপনার বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ হবে। আল্লাহ  তা‘আলা বলেন, وَإِنْ تُطِعْ أَكْثَرَ مَنْ فِي الْأَرْضِ يُضِلُّوكَ عَنْ سَبِيلِ اللهِ إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَإِنْ هُمْ إِلَّا يَخْرُصُونَ ‘তুমি যদি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের অনুসরণ কর তাহ’লে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ হ’তে বিচ্যুত করে ফেলবে, তারা তো কেবল অনুমানের অনুসরণ করে চলে, তারা মিথ্যাচার ছাড়া কিছু করে না’ (আনআম ৬/১১৬)

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ..... وَأَمَّا الْمُنَافِقُ وَالْكَافِرُ فَيُقَالُ لَهُ مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ فَيَقُولُ لَا أَدْرِي كُنْتُ أَقُولُ مَا يَقُولُ النَّاسُ فَيُقَالُ لَا دَرَيْتَ وَلَا تَلَيْتَ وَيُضْرَبُ بِمَطَارِقَ مِنْ حَدِيدٍ ضَرْبَةً فَيَصِيحُ صَيْحَةً يَسْمَعُهَا مَنْ يَلِيهِ غَيْرَ الثَّقَلَيْنِ.

আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আর মুনাফিক্ব ও কাফেরকে বলা হবে, তুমি এ ব্যক্তি (মুহাম্মাদ (ছাঃ) সম্পর্কে কী বলতে? সে উত্তরে বলবে, আমি জানি না। লোকেরা যা বলত আমিও তা-ই বলতাম। তখন তাকে বলা হবে, তুমি না নিজে জেনেছ, না তিলাওয়াত করে শিখেছ। আর তাকে লোহার হাতুড়ি দ্বারা এমনভাবে আঘাত করা হবে, যার ফলে সে এমন বিকট চিৎকার করে উঠবে যে দু’জাতি (অর্থাৎ মানুষ ও জিন) ছাড়া তার আশেপাশের সকলেই তা শুনতে পাবে’।[5]

অনুরূপভাবে আপনি যদি ‘আল্লাহ, দ্বীন এবং নবী করীম (ছাঃ)-কে জানার ক্ষেত্রে কুরআন পরিত্যাগ করে অধিকাংশ মুসলিমের কথা, কর্ম ও জীবনী অনুসরণ করেন, তাহ’লে কুরআন আপনার বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ হবে। আল্লাহ  তা‘আলা বলেন, وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ ‘অধিকাংশ মানুষ আল্লাহ্কে বিশ্বাস করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে’ ইউসুফ ১২/১০৬)

عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِى سُفْيَانَ قَالَ قَالَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ هَذِهِ الْمِلَّةَ سَتَفْتَرِقُ عَلَى ثَلاَثٍ وَسَبْعِينَ ثِنْتَانِ وَسَبْعُونَ فِى النَّارِ وَوَاحِدَةٌ فِى الْجَنَّةِ وَهِىَ الْجَمَاعَة-ُ

মু‘আবিয়া ইবনু সুফিয়ান (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, নিশ্চয়ই এ উম্মত অদূর ভবিষ্যতে ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। এর মধ্যে ৭২ দল জাহান্নমে যাবে এবং একটি দল জান্নাতে যাবে। আর সে দল হচ্ছে আল-জামা‘আহ’।[6]

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ....تَفْتَرِقُ أُمَّتِي عَلَى ثَلَاثٍ وَسَبْعِينَ مِلَّةً كُلُّهُمْ فِي النَّارِ إِلَّا مِلَّةً وَاحِدَةً قَالُوا وَمَنْ هِيَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِي-

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। শুধু একটি দল ছাড়া তাদের সকলেই জাহান্নামী হবে। ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে দল কোনটি? তিনি বললেন, আমি ও আমার ছাহাবীগণ যার উপর প্রতিষ্ঠিত’।[7]

অনুরূপভাবে আপনি যদি ‘আল্লাহ , দ্বীন এবং নবী করীম (ছাঃ)-কে জানার ক্ষেত্রে কুরআন ও পূর্বসুরীদের বর্ণিত হাদীছ পরিত্যাগ করে তাদের মতামতের অনুসরণ করেন, তাহ’লে কুরআন আপনার বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ হবে। আল্লাহ  তা‘আলা বলেন, بَلْ قَالُوا مِثْلَ مَا قَالَ الْأَوَّلُونَ ‘বরং তারা তাই বলেছিল যা বলেছিল আগের লোকেরা’ (মুমিনুন ২৩/৮১)

তিনি অন্যত্র বলেন, أَفَلَمْ يَدَّبَّرُوا الْقَوْلَ أَمْ جَاءَهُمْ مَا لَمْ يَأْتِ آبَاءَهُمُ الْأَوَّلِينَ তাহ’লে তারা কি (আল্লাহর) এ বাণী সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে না? কিংবা তাদের কাছে এমন কিছু (নতুন বস্ত্ত) এসেছে যা তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে আসেনি?’ (মুমিনূন ২৩/৬৮)

অনুরূপভাবে আপনি যদি ‘আল্লাহ , দ্বীন এবং নবী করীম (ছাঃ)-কে জানার ক্ষেত্রে কুরআন পরিত্যাগ করে পরবর্তীদের মতামত অনুসরণ করেন, তাহ’লে কুরআন আপনার বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَهُمْ وَاحْذَرْهُمْ أَنْ يَفْتِنُوكَ عَنْ بَعْضِ مَا أَنْزَلَ اللهُ إِلَيْكَ ‘তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করবে না। আর তাদের থেকে সতর্ক থাক তারা যেন আল্লাহ  তোমার প্রতি যা নাযিল করেছেন তার কোন কিছু থেকে তোমাকে ফিৎনায় না ফেলতে পারে’ (মায়েদাহ ৫/৪৯)। তিনি অন্যত্র বলেন, وَلَا تَتَّبِعُوا أَهْوَاءَ قَوْمٍ قَدْ ضَلُّوا مِنْ قَبْلُ وَأَضَلُّوا كَثِيرًا وَضَلُّوا عَنْ سَوَاءِ السَّبِيلِ আর সেই সম্প্রদায়ের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না যারা ইতিপূর্বে পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে, অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে আর সোজা পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে’ (মায়েদাহ ৫/৭৭)

অনুরূপভাবে আপনি যদি ‘আল্লাহ , দ্বীন এবং নবী করীম (ছাঃ)-কে জানার ক্ষেত্রে কুরআন পরিত্যাগ করে কোন সম্প্রদায় ও দলের অনুসরণ করেন, তাহ’লে কুরআন আপনার বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ হবে। আল্লাহ  তা‘আলা বলেন,تَقَطَّعُوا أَمْرَهُمْ بَيْنَهُمْ زُبُرًا كُلُّ حِزْبٍ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُونَ * فَذَرْهُمْ فِي غَمْرَتِهِمْ حَتَّى حِينٍ ‘কিন্তু মানুষ তাদের কর্তব্য কর্মকে বহুভাগে বিভক্ত করে ফেলেছে, আর প্রত্যেক দলই তাদের কাছে যা আছে তাই নিয়ে আনন্দিত। কাজেই তাদেরকে কিছুকাল তাদের অজ্ঞনতাপ্রসূত বিভ্রান্তিতে থাকতে দাও’ (মুমিনুন ২৩/৫৩-৫৪)

সাধারণত প্রত্যেক দল নিজ নিজ গঠনতন্ত্রের উপর অটল থাকে : আল্লাহ  তা‘আলা বলেন, وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ آمِنُوا بِمَا أَنْزَلَ اللهُ قَالُوا نُؤْمِنُ بِمَا أُنْزِلَ عَلَيْنَا وَيَكْفُرُونَ بِمَا وَرَاءَهُ وَهُوَ الْحَقُّ مُصَدِّقًا لِمَا مَعَهُمْ قُلْ فَلِمَ تَقْتُلُونَ أَنْبِيَاءَ اللهِ مِنْ قَبْلُ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ ‘আর যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ  যা অবতীর্ণ করেছেন তাতে ঈমান আন; তারা বলে, আমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে আমরা বিশ্বাস করি। অথচ পরবর্তী কিতাবকে (কুরআনকে) তারা প্রত্যাখ্যান করে, যদিও তা সত্য এবং যা তাদের নিকট আছে তার সমর্থক। বল, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক, তবে কেন তোমরা পূর্বে নবীদেরকে হত্যা করেছিলে’ (বাক্বারাহ ২/৯১)

দ্বিতীয় দলের নেতৃবর্গ সেসব বিষয় প্রত্যাখ্যান করতে উদ্বুদ্ধ করে, যা তাদের কিতাবে (গঠনতন্ত্রে) নেই, যদিও তা সত্য হয় : তারা বলে,وَلَا تُؤْمِنُوا إِلَّا لِمَنْ تَبِعَ دِينَكُمْ قُلْ إِنَّ الْهُدَى هُدَى اللهِ أَنْ يُؤْتَى أَحَدٌ مِثْلَ مَا أُوتِيتُمْ أَوْ يُحَاجُّوكُمْ عِنْدَ رَبِّكُمْ قُلْ إِنَّ الْفَضْلَ بِيَدِ اللهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ وَاللهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ ‘আর তোমাদের দ্বীনের অনুসারী ছাড়া আর কাউকেও বিশ্বাস করো না। তাদেরকে বলে দাও, আল্লাহর (নির্দেশিত) পথই একমাত্র পথ; (এবং এটা আল্লাহর নীতি যে) একদিন তোমাদেরকে যা দেয়া হয়েছিল তা-ই অন্য কাউকে দেয়া হবে অথবা অন্য লোকেরা তোমাদের প্রতিপালকের সামনে তোমাদের বিরুদ্ধে পেশ করার জন্য শক্ত প্রমাণ পেয়ে যাবে। বল, কল্যাণ আল্লাহরই হ’তে, তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন এবং আল্লাহ  প্রাচুর্যশালী ও সর্বজ্ঞ’ (ইমরান ৩/৭৩)

অনুরূপভাবে আপনি যদি  কুরআন পরিত্যাগ করে অহমিকার অনুসরণ করেন, তাহ’লে কুরআন আপনার বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ হবে।

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَتْ امْرَأَةٌ تُظْهِرُ فِي الْإِسْلَامِ السُّوءَ فَقَالَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَوْ رَجَمْتُ أَحَدًا بِغَيْرِ بَيِّنَةٍ لَرَجَمْتُ هَذِهِ-

ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক নারী মুসলিম সমাজে প্রকাশ্যে ব্যভিচারে লিপ্ত থাকত, নবী করীম (ছাঃ) বললেন, আমি যদি কাউকে বিনা প্রমাণে রজম করতাম, তবে একেই রজম করতাম’।[8]

অনুরূপভাবে আপনি যদি কুরআন পরিত্যাগ করে উত্তেজনার অনুসরণ করেন, তাহ’লে কুরআন আপনার বিপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُحَرِّمُوا طَيِّبَاتِ مَا أَحَلَّ اللهُ لَكُمْ وَلَا تَعْتَدُوا إِنَّ اللهَ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ ‘হে ঈমানদারগণ! পবিত্র বস্ত্তরাজি যা আল্লাহ  তোমাদের জন্য হালাল করে দিয়েছেন সেগুলোকে হারাম করে নিও না আর সীমালঙ্ঘন করো না, অবশ্যই আল্লাহ  সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে ভালবাসেন না’ (মায়েদাহ ৫/৮৭)

عَنْ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ جَاءَ ثَلَاثَةُ رَهْطٍ إِلَى بُيُوتِ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْأَلُونَ عَنْ عِبَادَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا أُخْبِرُوا كَأَنَّهُمْ تَقَالُّوهَا فَقَالُوا وَأَيْنَ نَحْنُ مِنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ قَالَ أَحَدُهُمْ أَمَّا أَنَا فَإِنِّي أُصَلِّي اللَّيْلَ أَبَدًا وَقَالَ آخَرُ أَنَا أَصُومُ الدَّهْرَ وَلَا أُفْطِرُ وَقَالَ آخَرُ أَنَا أَعْتَزِلُ النِّسَاءَ فَلَا أَتَزَوَّجُ أَبَدًا فَجَاءَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَيْهِمْ فَقَالَ أَنْتُمْ الَّذِينَ قُلْتُمْ كَذَا وَكَذَا أَمَا وَاللهِ إِنِّي لَأَخْشَاكُمْ لِلّٰهِ وَأَتْقَاكُمْ لَهُ لَكِنِّي أَصُومُ وَأُفْطِرُ وَأُصَلِّي وَأَرْقُدُ وَأَتَزَوَّجُ النِّسَاءَ فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِي فَلَيْسَ مِنِّي-

আনাস বিন মালিক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, তিন জনের একটি দল নবী করীম (ছাঃ)-এর ইবাদত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য নবী করীম (ছাঃ)-এর স্ত্রীদের বাড়িতে আসল। যখন তাঁদেরকে এ সম্পর্কে জানানো হ’ল, তখন তারা (নবী করীম (ছাঃ)-এর) ইবাদতের পরিমাণ কম মনে করল এবং বলল, নবী করীম (ছাঃ)-এর সঙ্গে আমাদের তুলনা হ’তে পারে না। কারণ, তাঁর আগের ও পরের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। এমন সময় তাদের মধ্য থেকে একজন বলল, আমি সারা জীবন রাতভর ছালাত আদায় করতে থাকব। অপর একজন বলল, আমি সব সময় ছিয়াম পালন করব এবং কখনো ছেড়ে দিব না। অপরজন বলল, আমি নারী সঙ্গ ত্যাগ করব, কখনও বিবাহ করব না। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদের নিকট এলেন এবং বললেন, ‘তোমরা কি ঐ সব লোক যারা এমন এমন কথাবার্তা বলেছ? আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে বেশী ভয় করি এবং তোমাদের চেয়ে তাঁর প্রতি বেশী অনুগত; অথচ আমি ছিয়াম পালন করি, আবার তা থেকে বিরতও থাকি। ছালাত আদায় করি এবং নিদ্রা যাই ও নারীদেরকে বিবাহও করি। সুতরাং যে ব্যক্তি আমার সুন্নাত (জীবন-যাপন পদ্ধতি) হ’তে বিমুখ হবে সে আমার দলভুক্ত নয়’।[9] (ক্রমশঃ)

(মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু মুহাম্মাদ আল-আম্মারী الْقُرْاٰنُ حُجَّةٌ لَكَ أَوْ عَلَيْكَ বই অবলম্বনে লিখিত)

 [লেখক : নারায়ণপুর, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর]

[1]মুসলিম হজ্জ অধ্যায়নবী করীম (ছাঃ)-এর হজ্জ অনুচ্ছেদহা/১২১৮,[২১৩৭]মুস্তাদরাকে হাকেম ১/৯৩ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব ১/২১আলবানী (রহঃ) একে হাসান বলেছেন

[2]. মুওয়াত্ত্বা মালেক হা/১৩৯৫ইমাম হাকেম মুসনাদে বর্ণনা করেছেন এবং তিনি একে ছহীহ বলেছেনমিশকাত হা/১৮৬আলবানী (রহঃ) একে হাসান বলেছেন

[3]. মুত্তাফাক্ব আলাইহবুখারী কুরআন ও সুন্নাহকে শক্তভাবে অাঁকড়ে ধরে থাকা অধ্যায়মনগড়া মত ও ভিত্তিহীন ক্বিয়াস নিন্দনীয় অনুচ্ছেদহা/৭৩০৭মুসলিম ইলম অধ্যায়,শেষ যামানায় ইলম উঠে যাওয়াঅজ্ঞতা ও ফিৎনা প্রকাশ পাওয়া অনুচ্ছেদ৪/২০৫৮হা/২৬৭৩

[4]. বুখারী হা/৭৩২০নবী করীম (ছাঃ)-এর বাণীلَتَتْبَعُنَّ سَنَنَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ অবশ্য অবশ্যই তোমরা তোমাদের পূর্বের লোকদের নীতি-পদ্ধতির অনুকরণ করতে থাকবে অনুচ্ছেদমুসলিম হা/৬৯৫২[২৬৬৯]ইহুদীদের আদর্শ অনুসরণ অনুচ্ছেদমিশকাত হা/৫৩৬১

[5]. বুখারী হা/১৩৭৪কবরের আযাব সম্পর্কে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে অনুচ্ছেদ

[6]. আবু দাউদ হা/৪৫৯৯ [৪৫৯৭]সুন্নাতের ব্যাখ্যা অনুচ্ছেদহাদীছটি হাসান লি হায়রিহী

*জামাতের পরিচয় দিতে গিয়ে আব্দুলস্নাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেনاَلْجَمَاعَةُ مَا وَافَقَ الْحَقُّ وَإِنْ كُنْتَ وَحْدَكَ  জামাআত বলতে যা হক্বের পÿÿ হবেযদিও তুমি একা হও? (ইবনু আসাকিরতারিখে দামেশক্ব নাকম (৪৬/৪০৯) গ্রন্থে ছহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন-অনুবাদক 

[7]. তিরমিযী হা/২৬৪১এই উম্মতের অনৈক্য অনুচ্ছেদহাদীছ হাসান লি গায়রিহী

[8]বুখারী হা/৭৩১০নবী বরীম (ছাঃ)-এর বাণী আমি যদি সুস্পষ্ট প্রমাণ ব্যতীত রজম করতাম  অনুচ্ছেদ

লোকদের নীতি-পদ্ধতির অনুকরণ করতে থাকবে অনুচ্ছেদ মুসলিম হা/৬৯৫২[২৬৬৯]ইহূদীদের আদর্শ অনুসরণ অনুচ্ছেদমিশকাত হা/৫৩৬১

[9]বুখারী হা/৫০৬৩বিবাহ অধ্যায়




বিষয়সমূহ: বিবিধ
আরও